• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নিঃশব্দ আহামদের কবিতা

ঠিক মৃত্তিকাভূত হবে শরীর আমার

  নিঃশব্দ আহামদ

১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:২৮
কবিতা
ছবি : প্রতীকী

শূন্য শূন্য বোধে

কথা না বলার আগে, একটা লাশবাহী গাড়ি ছুটে যেতে থাকে আমার ভেতর বিকট সাইরেনে, সরে যেতে যেতে এইসব যান প্রশস্ত করে যাচ্ছে পথ-আর আমি ক্রমে ঢুকে পড়ি ভেদ করে অন্ধকার; ঠিক কবরের মতন।

মৃত না অথবা মৃত্যুর ভেতরও নড়ে উঠি আবার নির্বাক তোর চোখের ভেতর ঠিক জমেছিলো কিনা কোনো সমুদ্দুর, ঝড় ঝাপটার রাতের বিহ্বলতা ছুঁয়ে যেমন অধীর হয়ে উঠে সমস্ত এক নিশি; ঝুপঝাপ বৃষ্টির শব্দে।

মায়া হয় এক পৃথিবীর, আকুতি যেমন শেষবার বাঁচার তোর প্রসন্ন মুখে যাবৎ আনন্দের রেখাপাত, অথচ কতোটা অবদমিত সে স্বর, না আজ আর না এমনো শব্দের কাছে লুকোও অস্বস্তি বুকের

আর আমি শোক শ্লোকে একটি বিকেল থেকে সান্ধ্য শেষে, প্রার্থিত হাতময় তুলে আনি শূন্যের বিস্তার এসব শূন্য শূন্য পারিপার্শ্বিকতা ছেড়ে তুলি আওয়াজ খুউব করে যেমন ছেড়ে যাবার কান্নাজল জমে থাকে চোখদেশে৷অনড় একটা শরীরে।

ছায়া পরিবেশ

বহুবার এসেছি সরে, তুই ও দ্বিধা দ্বন্দ ছেড়ে সরে যেতে চেয়েও বহুবার ভেসে যাস জলভারি চোখে বারবার আমিও এতটা দিনে পারিনি হতে ঠিক আমার আমাদের আর হলো না প্রেম, কেবল কতেক দুঃখ আগলে গুণে গুণে প্রহর বাড়াই বিষাদ ব্যাধির।

আবার আমরা একা হবো, খুউব খুউব একা এতোটা দীর্ঘ দিবস অপেক্ষার প্রহর শেষে নেমে এলে রাত, ঠিক নক্ষত্রসভা আড়াল করে নিলে আঁধার প্রয়াত হয়ে যেতে থাকে তোর আমার দীর্ঘ সংলাপ।

ঠিক কতটা সময় তুই আর বলিসনি কথা, দ্যাখা হয় নাই অমনো মুগ্ধ চোখ, ধুকপুক বুকে শীতের মতো নেমে আসে শোক, অসাড়তার মতো মুদে গেলে চোখ এই হিমের দেশে-ভাবিস না অতটা যেতে যেতে হেঁটে একা ভিষণ।

কেউ রাখেনা খবর,ব্যতিব্যস্ত দিনের মতো চারিপাশ কেমন নিষ্ঠুর হয়ে ফিরে চলে,আর সন্ধ্যার নিঃসঙ্গ বাড়ি ফিরে কপাট খোলার শব্দে শিউরে উঠি সে কোন কান্নায়-একখানা হাসিমাখা মুখে তোর এসেছি ফেলে আমার এতোটুকু স্বস্তি৷এই তো আছি বেশ, তোর পাশাপাশি যেমন হাঁটে প্রচ্ছন্ন নিঃশব্দ ছায়া৷

মফস্বলের রোদ, বৃষ্টি দিন

ঠিক মৃত্তিকাভূত হবে শরীর আমার, আর এসব রাত এলে আমার খুউব করে মনে ধরে অস্তিত্বের এই যে যুদ্ধ ক্যামন করে বিস্মৃত হয়ে, হয়ে যাবো ঘাস, গলিত লাশ অনিবার্য্য এই সত্যের দিকে যেতে যেতে ভেসে উঠে তোর মুখ৷

না আর কোনো পারফিউম ঘ্রাণ, ঠিকঠাক করে সাজবেনা কোনো কপোলদেশ রঙিন টিপে অথবা দ্যাখবোনা আর চূড়ির আওয়াজে কেমন মাতোয়ারা আনন্দে মাতাল আমার হৃদয় এক-

মনের মৃত্যু হলে,শরীরের মৃত্যু হয় তবু প্রলুদ্ধ ইচ্ছেরাজি আমাকে নিয়ে চলে তোর পাশ যখন হাঁটছি, কতটা দূরবর্তী সে পথ- যেনো দ্যাখবোনা আর শূচিশুভ্র মুখখানা গভীর আবেশে৷

ঠিক এলে মৃত্যু, জানিস— শহর থেকে অনতি দূরে এই মফস্বলের রোদ বৃষ্টি দিন ছন্নছাঁড়া সব বিকেলে মাতাল বেশে ছিলাম অপেক্ষায় প্রতিটি সন্ধ্যাবধি-শুধূ নিঃশেষিত এক জীবন আমার তোর মুখে রেখে গেলাম আমৃত্যু অপেক্ষা।

অপেক্ষা পাশে ব্যাকুল কোনো চোখ

শূন্য চরাচর, যেদিকে তাকাই তবু প্রবল উৎকর্ষতায় ভরে উঠে হৃদয় আমার এই সন্ধ্যায় পেরিয়ে আসছো তুমি হীমের নগর, আহুত এক রাত নিয়ে চলে আমাদের নিবিড় শয্যা- টিনের ছাউনিতে, এ পাড়ার রাস্তাপাশে আমার ঘর৷

নীহারকণার আলোসব ফ্যাকাশে মেঘে তলিয়ে যেতে যেতে ক্লান্তি আসে; আর এই চাঁদ জোছনায় সুদীর্ঘ অপেক্ষায়, তোমার- জীবন আমার কেবল বৃথা কেটে যায়।

না তুমি আসোনি, অতিথি পাখিবেশে এখানে আরও শীত-পাতাঝরা দিন শেষে যে সবুজ দিন রঙ বদলায় কতো কতো ফুলের বুক শুধু রইলাম পড়ে একা, এখানে এতোটাকাল বুক আঁকড়ে তুমি; কেবল তুমি নামের এমনো অসুখ।

কতো কতো নীরবতা শেষে,শোরগোল হলে যে আনন্দ না আসেনি, হাসেনি কোনো চোখ-দীপ্ত শোভায় প্রখর রোদসভায় সেজে উঠা দিনে, এখনো জাগেনি তোড়জোড়, ঘরে ফেরার-

এসো,যেমন পাখিসব ফেরে মূখর গানে সান্ধ্যনীড় তুমি এলে, জড়াবো বুকের আগল খুলে, নির্জন সমুদ্রতীর-এসো ত্রস্ত পায়, ঠাঁই করে নাও শূন্য বুক অপেক্ষা পাশে ব্যাকুল কেনো চোখ, হে আমার দূরবাসি মুখ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড