• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মস্তিষ্কের ক্ষতি না চাইলে এখনই বাদ দিন এসব খাবার

  লাইফস্টাইল ডেস্ক

২৮ মে ২০২০, ১৩:১৬
মস্তিষ্ক
মস্তিষ্ক (ছবি : সংগৃহীত)

দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ আমাদের মস্তিষ্ক। এটি শরীরের অন্যান্য সব ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। যার মধ্যে হৃৎস্পন্দন, ফুসফুসের শ্বাস প্রশ্বাস এবং শরীরের অন্যান্য সব কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যেহেতু সমস্ত শারীরিক ক্রিয়া আপনার মস্তিষ্কের কার্যকারিতার উপর নির্ভরশীল, তাই এটি সুস্থ রাখাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং সঠিক শরীরচর্চা দিয়ে মস্তিষ্ক সুস্থ রাখা সম্ভব।

এ ক্ষেত্রে কিছু খাবার আমাদের মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এতে আপনার স্মৃতি, মেজাজ নষ্ট হওয়া এবং ডিমেনশিয়ার মতো পরিস্থিতির ঝুঁকি বেড়ে যায়।

তাই ঝুঁকিমুক্ত থাকতে মস্তিষ্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন। জেনে নিন-

সুগার পানীয়

সোডা, কোলা, জুস, এনার্জি ড্রিংকস এবং স্পোর্টস ড্রিঙ্কের মতো সুগার ড্রিঙ্কগুলো কোমরেখা প্রসারিত করে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। শুধু তাই নয়, এগুলো মস্তিস্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। টাইপ-২ ডায়াবেটিস আলঝাইমার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। বেশিরভাগ মিষ্টি পানীয়তে ফ্রুকটোজের পরিমাণ বেশি, যা স্থূলত্ব, উচ্চ রক্তচাপ, চর্বি এবং ধমনীর বিকলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। বিপাক সিনড্রোমের এই দিকগুলো ডিমেনশিয়া বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। চিনির উচ্চমাত্রায় ডায়েট মস্তিষ্কের প্রদাহ বাড়াতে এবং স্মৃতিশক্তিকে নষ্ট করতে পারে।

অ্যালকোহল

অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনে মস্তিষ্কে মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী অ্যালকোহল ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের আয়তন হ্রাস, বিপাকীয় পরিবর্তন এবং নিউরোট্রান্সমিটারের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। যেসব ব্যক্তি বেশি পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাদের মধ্যে প্রায়শই ভিটামিন বি১ এর ঘাটতি থাকে, যা ওয়ার্নিকের এনসেফেলোপ্যাথি নামে একটি মস্তিষ্কে ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে।

এর ফলস্বরূপ কর্সাকফের সিনড্রোম বিকাশ ঘটতে পারে। এই সিন্ড্রোম স্মৃতিশক্তি হ্রাস, দৃষ্টিশক্তিতে ব্যাঘাত, বিভ্রান্তি এবং অস্থিরতাসহ মস্তিষ্কের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে।

অ্যাসপার্টাম

অ্যাসপার্টাম হলো সুগার ফ্রি পণ্যগুলোতে থাকা কৃত্রিম মিষ্টি। ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন এমন ব্যক্তিরা বেশিরভাগ সময় সুগার ফ্রি খাবার খেতে পছন্দ করেন। অ্যাস্পার্টম ফেনিল্লানাইন, মিথেনল এবং অ্যাস্পার্টিক অ্যাসিড দিয়ে তৈরি। ইঁদুরের উপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, অসম্পূর্ণ স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বৃদ্ধি করে অ্যাস্পার্টাম। অ্যাস্পার্টেট এড়ানোর জন্য, আপনার ডায়েট থেকে কৃত্রিম মিষ্টি এবং অতিরিক্ত চিনি বাদ দিন।

উচ্চ পারদযুক্ত মাছ

পারদ একটি ভারী ধাতব সংশ্লেষ এবং একটি স্নায়বিক বিষ যা প্রাণীর টিস্যুতে দীর্ঘকাল ধরে সংরক্ষিত থাকতে পারে। দীর্ঘজীবী শিকারী মাছগুলোর শরীরে পারদ জমে এবং তাদের আশেপাশের পানির ঘনত্বের পরিমাণ ১ মিলিয়নেরও বেশি বহন করে। যদি কোনো ব্যক্তি পারদ গ্রহণ করে তবে এটি মস্তিষ্ক, যকৃত এবং কিডনিতে ঢুকে করে সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি প্লাসেন্টা এবং ভ্রূণেও ছড়িয়ে পড়ে। পারদের বিষক্রিয়া কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র এবং নিউরোট্রান্সমিটারের বিঘ্ন ঘটায়।

এতে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। উচ্চ পারদযুক্ত মাছের মধ্যে হাঙর, সওয়ার্ডফিশ, টুনা, কিং ম্যাকেরেল এবং টাইল ফিশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার

যে খাবারগুলো উচ্চ প্রক্রিয়াজাত হয় তাদের মধ্যে চিনি, চর্বি এবং লবণ বেশি থাকে। এই খাবারগুলোর মধ্যে চিপস, মিষ্টি, ইনস্ট্যান্টস নুডলস, মাইক্রোওয়েভ পপকর্ন, সস এবং রেডিমেড খাবার রয়েছে। এই খাবারগুলোতে ক্যালোরি বেশি এবং পুষ্টির পরিমাণ কম। যা স্থূলত্বের দিকে নিয়ে যায় এবং মস্তিষ্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, অস্বাস্থ্যকর উপাদানের উচ্চতর ডায়েটের ফলে মস্তিষ্কে চিনির বিপাকের মাত্রা কম থাকে এবং মস্তিষ্কের টিস্যু হ্রাস পায়। যে দুটি কারণ আলঝাইমার রোগের জন্য চিহ্নিত। ১৮,০৮০ জনের উপর পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ভাজাজাতীয় খাবার খেলে স্মৃতিশক্তি অনেকাংশে কমে যায়।

হাই ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার

ট্রান্স ফ্যাট হলো অসম্পৃক্ত ফ্যাট যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। দুধ এবং মাংসের মতো প্রাণীজ পণ্যগুলোতে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া ট্রান্স ফ্যাট কোনো সমস্যা নয়। এটি উৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাট, একে হাইড্রোজেনেটেড উদ্ভিজ্জ তেলও বলা হয়, যা সমস্যা করতে পারে।

আরও পড়ুন : নিয়মিত মাশরুম খেলে মিলবে যত উপকার

গবেষণায় দেখা গেছে যেসব ব্যক্তি বেশি ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণ করে তাদের আলঝাইমার রোগ, দুর্বল স্মৃতি এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ওমেগা-৩ এই ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। মাছ, চিয়া বীজ, আখরোট জাতীয় খাবারে মিলবে ওমেগা-৩।

পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট

পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটে সাদা ময়দার মতো চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত শস্য অন্তর্ভুক্ত। পরিশোধিত কার্বসগুলোতে উচ্চ গ্লাইসেমিক সূচক থাকে যার অর্থ তারা খুব দ্রুত হজম হয়, ফলস্বরূপ হঠাৎ রক্তে শর্করার স্পাইক হয়। গ্লাইসেমিক সূচকযুক্ত খাবারগুলোকে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করতে দেখা গেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যে ব্যক্তিরা চর্বিযুক্ত ও পরিশোধিত চিনির উচ্চমাত্রায় খাবার গ্রহণ করেন তাদের স্মৃতিশক্তি বেশি থাকে। অন্য একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বয়স্করা যারা প্রতিদিনের ক্যালোরির ৫৮ শতাংশের চেয়ে বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করেন তাদের হালকা মানসিক দুর্বলতা এবং স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি দ্বিগুণ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড