• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইদ আনন্দে সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়

যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্টি

  শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)

২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৫০
ইদ আনন্দে সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড়
বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতের বাহারছড়া পয়েন্টে পর্যটকের উপচে-পড়া ভিড় (ছবি : অধিকার)

পবিত্র ইদুল ফিতরের ছুটিকে প্রাণবন্ত করতে পরিবার, পরিজন ও প্রিয়জনদের নিয়ে একান্ত বিনোদনে চট্টগ্রামের বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতে মেতে উঠেছে পর্যটকরা। এ উপলক্ষে পর্যটকদের আনন্দ দিতে সৈকতে গড়ে উঠেছে নানা বিনোদন স্পট। অস্থায়ী হোটেল রেস্তোরাও গড়ে উঠেছে সৈকতের বালুচরে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি পর্যটকে মুখর সৈকত এলাকা।

নির্মল বাতাস, সৈকতের ঢেউ, বিশাল বালুচর, সারি সারি ঝাউ বাগান সবমিলিয়ে এক প্রাণবন্ত বিনোদন স্পটে রূপ নিয়েছে বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত। সৈকতের কাঁকড়া ভাজা খেয়ে নতুন স্বাদে মেতে উঠছে পর্যটকরা।

দেশের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের পরই বাঁশখালী বাহারছড়ার সমুদ্র সৈকতকেই বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা। বাহারছড়া উপকূলীয় এলাকায় ৫ কি.মি. এলাকাজুড়ে ঝাউ বাগানের মধ্যে গড়ে উঠেছে আড্ডা দেওয়ার স্থান। টানা বন্ধের ছুটিতে পর্যটকরা ছুটে আসেন সমুদ্রের লোনা পানিতে সাঁতার কাটতে।

নজরকাড়া সমুদ্রের কূল থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে পর্যটক মৌসুমের ঈদ ও ছুটির দিনে হাজারও দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। বাঁশখালীর প্রায় ৩২ কিলোমিটার দৃষ্টিনন্দন সমুদ্র সৈকত প্রিয়জনদের নিয়ে প্রিয় মুহূর্তগুলো অতিবাহিত করার মতো একটি অন্যতম পর্যটনস্পটে রূপ নিয়েছে।

এবারে ইদে ছুটির দিনে লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম হতে যাচ্ছে বাহারছড়া ও খানখানাবাদ সৈকত পয়েন্টে। পর্যটকরা বাহারছড়া সমুদ্র সৈকত পয়েন্ট কে বেছে নিয়েছেন বিনোদনের সেরা স্পট হিসেবে। সৈকতের কোল ঘেঁষে অদূরেই কাথরিয়া পয়েন্ট।

এখানে প্রকৃতি, সৈকত, ঝাউ বাগান ও সবুজের চাঁদরে ঢাকা বিস্তৃত মাঠে সৌন্দর্যের লীলাভূমি কাশ্মীরকে উপভোগ করা যায়। দিগন্তজোড়া সবুজের অপূর্ব সমন্বয়, সু-উচ্চ বিশাল ঝাউ বাগান মন কেড়েছে পর্যটকদের।

বাঁশখালী উপকূলীয় সমুদ্র সৈকতে প্রিয়জনের হাতটি ধরে প্রিয় মুহূর্তগুলো মৃদু ছন্দ বাতাসের গতিতে জীবনের গতিপথে নতুন ছন্দের মাত্রা যোগাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকের আনাগোনা লক্ষণীয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে সৈকত এলাকা। চোখ জুড়ানো ঝাউ বাগানের সারি, বিশাল বালুচর, সাগরের ঢেউ, কাঁকড়ার লুকোচুরি, সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য মনকে আন্দোলিত করে। ইদের চতুর্থ দিনেও পর্যটকদের আনাগোনা ছিল দেখার মতো। অনেকের মতে প্রায় অর্ধলক্ষ পর্যটকে ভরপুর ছিল বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতে।

সৈকতে বেড়াতে আসা এক পর্যটক রিদুয়ানুল হক বলেন, উপভোগ করার মতো বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত। এখানে সাগরের ঢেউয়ে মন আন্দোলিত করে। তবে, কক্সবাজারের মতো হোটেল-মোটেল নেই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সমন্বয় থাকলেও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো এখানে গড়ে ওঠেনি বিনোদন স্থাপনা। এখানে ঢেলে সাজানোর মতো বিশাল ক্ষেত্র রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলেই বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত হয়ে উঠবে দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন স্পট।

সাহাব উদ্দিন নামে আরেক পর্যটক বলেন, কক্সবাজার বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের নক্ষত্র। বাঁশখালী উপজেলা কক্সবাজার জেলার সঙ্গে সংযুক্ত চট্টগ্রামের একটি উপজেলা। বর্তমানে বাঁশখালী আঞ্চলিক সড়ক হয়ে কক্সবাজারের পথে যানবাহন অস্থায়ীভাবে চলছে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম-বাঁশখালী-কক্সবাজার মহাসড়কের নির্মিতব্য প্রস্তাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতে কক্সবাজারকে উপভোগ করা যায়। তাছাড়া বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন একটু সু-নজর দিলে বাঁশখালীকে পর্যটন সিটি হিসেবে রূপান্তর করা মোটেও অসম্ভব নয়।

সৈকতে আসা অধিকাংশ পর্যটক অভিযোগ করে বলেন, ইদের ছুটিতে বিনোদন নিতে আসি বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতে। পরিবারের সদস্যরা ও বন্ধু-বান্ধব মিলে সৈকতে আসার আনন্দ মাটি করে দিয়েছে সৈকত সংযুক্ত সড়ক গুলো। এমনিতে সড়কপথগুলো সরু, তার ওপর বেহাল দশা। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে যানবাহন নিয়ে আসা-যাওয়া করাতে খুব কষ্ট হয়েছে বলে জানান তারা। অনেকেই বলেন, সড়কপথের বেহাল অবস্থার কারণে সম্ভাবনাময় এ পর্যটন স্পটগুলো হারাবে দর্শনার্থী।

উপজেলার এ পর্যটন শিল্পকে পরিচিত ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয়ের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। রাস্তাঘাটের উন্নয়নের প্রতি সরকারের সুনজর এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পর্যটকদের আগমন ও স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করার জন্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখলেই বাঁশখালী হবে পর্যটনপ্রেমীর আকর্ষণীয় বিনোদন স্পট। এরপর সরকার এখান থেকে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব পাবে।

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল উদ্দিন পিপিএম বলেন, পবিত্র ইদুল ফিতরের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় মাঠে রয়েছে। ইদ যাত্রাকালীন সময়ে ভ্রমণে যাওয়া আসা শিশু নারী পুরুষদের যাতায়ত ক্ষেত্রে পুলিশ সব সময় নজরদারি করছেন।পর্যটন এলাকাগুলোকে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। যাতে পর্যটকদের কোনো অসুবিধা না হয়।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড