• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ওয়ালস্ট্রিট জার্নালে কিমের বোন ইয়োর গোপন তথ্য প্রকাশ 

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩:২২
ওয়ালস্ট্রিট জার্নালে কিমের বোন ইয়োর গোপন তথ্য প্রকাশ 
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন এবং ছোট বোন কিম ইয়ো জং (ছবি : সিনহুয়া)

নাম তার কিম ইয়ো জং। উত্তর কেরিয়ার বর্তমান শাসক কিম জং উনের ছোট বোন। দ্বিতীয় কিম জংয়ের সবচেয়ে কনিষ্ঠা কন্যা।

তার সঠিক জন্ম তারিখ অজ্ঞাত। যদিও দ. কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যভাণ্ডার অনুসারে, উ. কোরিয় কর্মকর্তারা ১৯৮৮ সালে রাজধানী পিয়ংইয়ং- এ ইয়োর জন্ম নিবন্ধন করেছেন।

২০১৮ সালের শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজনকে কেন্দ্র করে আলোচনার পাদপ্রদীপে আসেন উ. কোরিয় একনায়কের এই বোন। তারপর দুই-দুটি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ আলোচনায় তার উপস্থিতি এবং রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রচারণা থেকে তার প্রভাব সম্পর্কে বহিঃবিশ্ব ধারণা পেতে থাকে।

কিম ইয়ো জং উ. কোরিয় সমাজতান্ত্রিক দলের পলিটব্যুরো সদস্য এবং গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে গত দুই বছর থেকেই তাকে নিজের ভাই কিম উনের পাশে দেখা গেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দেশটিতে নানাবিধ পদবী কিম ইয়োর দখলে।

আরও পড়ুন : উত্তেজনা বাড়িয়ে সৌদিকে ২৪ লাখ কোটি টাকার অস্ত্র দিচ্ছেন ট্রাম্প

তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো তিনি দেশটির প্রচারণা বিভাগের প্রতীকী প্রধান রূপে বহাল আছেন। গত কয়েক বছরেই মূলত বেড়েছে ক্ষমতার কেন্দ্রে তার আরোহণ। এই সময়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং উনের তিনটি সামনাসামনি বৈঠকের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রনায়ক উনের শীর্ষ পরামর্শক এবং তার উত্তরসূরি প্রার্থী হিসাবেই ছিল ইয়োর উপস্থিতি।

উ. কোরিয়ার সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চেয়ে ওয়াশিংটনের ক্রমাগত দাবির প্রেক্ষিতে চলতি ২০২০ সালে তিনি ওয়াশিংটনের কড়া সমালোচনায় পূর্ণ একটি রাষ্ট্রীয় বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। সেখানে দ. কোরিয়ার বিরুদ্ধে উ. কোরিয় দেশত্যাগীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে নিন্দা জানানো হয়। নিন্দার কারণ, এসব ব্যক্তিরা উ. কোরিয় শাসকশ্রেণির বিরুদ্ধে প্রচারণা ছড়াতে সাহায্য করছে।

কিম ইয়ো জংয়ের ব্যক্তি-জীবন সম্পর্কে কী জানা যায়?

তার সঠিক জন্ম তারিখ জানা না গেলেও দ. কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যভাণ্ডারে কিম ইয়োর জন্ম সাল নিবন্ধন রয়েছে ১৯৮৮ সালে রাজধানী পিয়ংইয়ং- এ। ১৯৯৪ থেকে ২০১১ পর্যন্ত শাসন করা দ্বিতীয় কিম একাধিক নারীর গর্ভে সন্তান জন্ম দেন। কিম ইয়ো তার বাবার সবচেয়ে কনিষ্ঠা কন্যা।

আরও পড়ুন : ২০২০ সালে ৫০ সাংবাদিককে হত্যা, গ্রেপ্তার ২৭৪

জীবনের প্রথম দিক কিম ইয়ো কোনো আলোচনায় আসেননি। কিন্তু ২০০৯ সালে সেই অবস্থার অবসান ঘটে। এ সময় স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে পরবর্তী উত্তরসূরি হিসেবে ছেলে কিম জন উনের নাম ঘোষণা করেন দ্বিতীয় কিম। তারপরই দুই ভাইবোনের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছবি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রকাশ করে।

ছবিতে অবশ্য তাদের সবচেয়ে বড় ভাই কিম জং চোলও ছিলেন। ২০১১ সালে সিঙ্গাপুরে আয়োজিত এরিক ক্লাপ্টনের সঙ্গীতায়জন উপভোগ করার কালেও ইয়ো এবং চোল সাংবাদিকদের ক্যামেরা বন্দি হয়েছিলেন।

ইয়োর বৈবাহিক জীবন সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায়নি। দ. কোরিয় কিছু গণমাধ্যম অবশ্য দাবি করে যে, তিনি উ. কোরিয়ার প্রভাবশালী কর্মকর্তা চো রিয়ং হায়ে’র ছেলেকে বিয়ে করেছেন। চো রিয়ং হচ্ছেন দেশটির সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রধানতম কমিটি স্টেট অ্যাফেয়ার্স কমিশনে কিম জং উনের ঘনিষ্ঠ সহকারী। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ইয়োকে কখনওই স্বামীর পাশে দেখানো হয়নি।

কিম জং উন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর গত এক দশকে উ. কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করেন। এরপর ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হ্রাসের আলোচনায় অংশ নেন। তখনই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম উনের সুন্দরী এই বোনের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন : ইসরায়েলকে ভয় দেখাতে গাজায় প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর ভয়ঙ্কর মহড়া

চলতি ২০২০ সালে তার ভাই যখন গুরুতর অসুস্থ এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল, সে সময় সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসাবে ইয়োর নাম উল্লেখ করেন উ. কোরিয় কর্মকর্তারা। অর্থাৎ, তার ভাই মারা গেলে বা শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে থাকলে তখন ইয়োর হাতেই দেশ শাসনের ভার তুলে দেওয়া হবে।

আর এই ক্ষমতার উপর সত্যিই ভাইয়ের মতোই সমান অংশীদারিত্বের দাবীদার তিনি। তারা দুজনেই আধ্যাত্মিকভাবে পবিত্র বলে খ্যাত পাকেতু পর্বতের বংশধারায় জন্মেছেন, আসলে সমাজতন্ত্রী কোরিয় রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সাং'য়ের সরাসরি বংশধরদের এই পর্বতের রক্তধারা বলে উল্লেখ করা হয়।

উ. কোরিয় সরকারে তার রাজনৈতিক ভূমিকা কী?

আনুমানিক ২০১৪ সাল থেকে কিম ইয়ো সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা রূপে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয় সরকারি সূত্র। তখন থেকেই তিনি দেশটির নামকাওয়াস্তের সংসদের গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্য। এছাড়া, তিনি আছেন সমাজতন্ত্রী দল ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে। ২০১৮ সালে তার ভাইয়ের নিযুক্ত দূত হিসাবে দ. কোরিয়া সফর করেন কিম ইয়ো। উ. কোরিয়া কীভাবে শীতকালীন অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করবে তার রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করতেই ছিল এই সফর, যা তাৎক্ষনিকভাবে তাকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মনোযোগের কেন্দ্রে নিয়ে আসে।

আরও পড়ুন : ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব সৌদির নিরাপত্তাহীনতা বাড়াবে : ইরান

শীতকালীন অলিম্পিক পরে দ. কোরিয়ার পিয়ংচ্যাং এ অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের পাশেই বসেছিলেন ইয়ো। এছাড়া, উ. কোরিয়ার শাসক কিম পরিবারের প্রথম সদস্য হিসাবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দ. কোরিয়া সফর করেছেন।

সূত্র : ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড