সিএএ কার্যকর হলে ভারতীয় সংবিধান লঙ্ঘিত হবে: সিআরএস

মার্কিন কংগ্রেসের একটি স্বাধীন গবেষণা শাখা কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস (সিআরএস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) কিছু বিধান সম্ভবত ভারতের সংবিধান লঙ্ঘন করতে পারে। ভারতের ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে, এই বছরের মার্চ মাসে তা কার্যকর হয়েছিল। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা নথিবিহীন অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব প্রদানের পথ প্রশস্ত করে।

ওই রিপোর্ট অনুসারে, “তিন দেশের ছয় ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, কিন্তু সেই তালিকায় নেই মুসলিমদের নাম। এমন অবস্থানের জেরে ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শ ক্ষুণ্ন হবে।''

লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই সিএএ কার্যকরের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক বলেই উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে সিএএ-র বিরোধিতাকারীরা উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে ক্ষমতাসীন বিজেপি মুসলিম বিরোধী এজেন্ডা অনুসরণ করে যা একটি আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র হিসাবে ভারতের মর্যাদাকে হুমকির মুখে ফেলে। এই আইন কার্যকর হলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের নিয়ম ও বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন হতে পারে ভেবেও তারা উদ্বিগ্ন। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে সিএএ-এর বাস্তবায়ন বিজেপির দ্বিতীয় জাতীয় নির্বাচনের প্রচারের মধ্যে এসেছিল এবং কিছু পর্যবেক্ষক সময়টিকে "মূলত রাজনীতি দ্বারা অনুপ্রাণিত" হিসাবে দেখেন।

সমালোচকদের উদ্ধৃত করে, মার্কিন রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে যে, "সিএএ শুধুমাত্র 'অনুমোদিত' ধর্মের সদস্যদের সুরক্ষার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এইভাবে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ নীতিকে ক্ষুণ্ন করার জন্য মোদী-বিজেপির কথিত প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে, বাইডেন প্রশাসন ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল এবং বলেছিল যে তারা বিতর্কিত আইনের প্রয়োগ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ভারত সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ধারাবাহিকভাবে নিজের অবস্থান বজায় রেখে বলেছে যে সিএএ প্রাথমিকভাবে নাগরিকত্ব প্রদানের লক্ষ্যে। একটি বিবৃতিতে কেন্দ্র আশ্বাস দিয়েছে যে এই আইনের ফলে দেশের কোনও নাগরিক তাদের নাগরিকত্ব হারাবেন না।