• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বড় পর্দার শ্রেষ্ঠতম মূকাভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন

  অধিকার ডেস্ক    ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৪:১৯

চার্লি চ্যাপলিন
চার্লি চ্যাপলিন

হলিউড চলচ্চিত্র শিল্পের শুরুর সময় থেকে মধ্যকাল পর্যন্ত অভিনয় ও পরিচালনা দিয়ে সাফল্যের শিখরে আরোহণ করেছিলেন তিনি। তাকে বিবেচনা করা হয় বড় পর্দার শ্রেষ্ঠতম মূকাভিনেতা ও কৌতুকাভিনেতাদের একজন বলে। তিনি আর কেউ নন, সবার পরিচিত মুখ চার্লি চ্যাপলিন। চলচ্চিত্র শিল্প জগতে চ্যাপলিনের প্রভাব অনস্বীকার্য। ভিক্টোরীয় যুগে তাঁর শৈশব থেকে ১৯৭৭ সালে তাঁর মৃত্যুর এক বছর পূর্ব পর্যন্ত তাঁর কর্মজীবনের ব্যাপ্তি প্রায় ৭৫ বছর। এই পুরো সময়ে তাঁর বর্ণময় ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনে খ্যাতি ও বিতর্ক, দুইই নিম্ন থেকে শীর্ষবিন্দু ছুঁয়ে গেছে।

১৮৮৯ সালের ১৬ এপ্রিল লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন চার্লি। তার পুরো নাম স্যার চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন জুনিয়র। চার্লির জন্মতারিখ নিয়ে অবশ্য কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। তাঁর জন্মের নির্দিষ্ট কোনো দলিল আজও উদ্ধার হয়নি। সন্দেহ রয়েগেছে জন্মস্থান নিয়েও। তিনি তার জন্মস্থান হিসেবে ফ্রান্সের কথা উল্লেখ করেছিলেন।

প্রচণ্ড দারিদ্রতা আর কষ্টের মধ্য দিয়ে চার্লির শৈশব কাটে। ১৮৯১ সালের স্থানীয় আদমশুমারি থেকে জানা যায়, মা হান্না চ্যাপলিন ও ভাই সিডনির সঙ্গে দক্ষিণ লন্ডনের বার্লো স্ট্রিটে থাকতেন তিনি। সে সময়ের আগেই বাবা চার্লস চ্যাপলিন জুনিয়রের সঙ্গে তার মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পিতৃহারা চ্যাপলিন বেড়ে ওঠেন অবর্ণনীয় কষ্ট আর দরিদ্রতার মধ্য দিয়ে।

প্রচণ্ড অর্থকষ্টে ভাড়া দিতে না পারায় প্রায়ই তাদের বাসা থেকে বের করে দেওয়া হতো। এভাবে তাড়া খাওয়ার চেয়ে পার্কের বেঞ্চিতে ঘুমাতেই বেশি পছন্দ করতেন চার্লি। কিছুদিন একটি মুদির দোকানেও কাজ করেছিলেন। সে কাজ চলে যাওয়ার পর একটি ডাক্তারখানায় কাজ নিয়েছিলেন। সেই কাজটিও চলে যাওয়ার পর লোকের বাড়িতে বাসন মাজার কাজে লেগে যান চার্লি। এক কাচের কারখানা, রঙের দোকান, লোহার দোকান, ছাপাখানা, খেলনা কারখানা, কাঠ চেরাই কল, কাগজ বিক্রি ইত্যাদি নানা কাজের মধ্যে তিনি যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন।

মা-বাবা দুজনেই মঞ্চাভিনয়ের সঙ্গে জড়িত থাকায় এ পেশাতে আসাই তার জন্য সহজ ছিল। চ্যাপলিন সেই সময়ের জনপ্রিয় লোকদল ‘জ্যাকসন্স এইট ল্যাঙ্কাশায়ার ল্যাডস’র সদস্য হিসেবে নানা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ১৪ বছর বয়সে উইলিয়াম জিলেট অভিনীত শার্লক হোমস নাটকে কাগজওয়ালার চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এ সুবাদে ভ্রমণ করেন ব্রিটেনের নানা প্রদেশ। সবাইকে জানিয়ে দেন যে অভিনেতা হিসেবে তিনি খুবই সম্ভাবনাময়।

১৯ বছর বয়সে ‘ফ্রেড কার্নো’ থিয়েটার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ইংল্যান্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। ১৯১৪ সালে ২৫ বছর বয়সে প্রথম সিনেমাতে অভিনয় করেন চার্লি চ্যাপলিন। তার অভিনীত এই সিনেমার নাম ছিল ‘মেকিং এ লিভিং’। সিনেমার পরিচালক ছিলেন ফ্রান্সের অরি লোর্মা। এক রিলের এ সিনেমাটি প্রদর্শনের মেয়াদ ছিল মাত্র দশ মিনিট। এটিতে চার্লি অভিনয় করেন খামখেয়ালি উচ্ছৃংখল প্রকৃতির যুবকের চরিত্রে।

১৯১৪ সালে তার নিজের সৃষ্ট দ্য ট্রাম্প বা ভবঘুরে চরিত্রটি দিয়ে তিনি বিশ্ব চলচ্চিত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। নির্বাক চলচ্চিত্রের যুগে মানুষকে হাসানোর মতো দুরূহ কাজটি শুধু অঙ্গভঙ্গি দিয়ে যিনি করতেন অত্যন্ত সফলভাবে। সাদাসিধে ভবঘুরে একজন মানুষ, যার পরনে নোংরা ঢিলেঢালা প্যান্ট, শরীরে জড়ানো জীর্ণ কালো কোট, পায়ে মাপহীন জুতো, মাথায় কালো মতো হ্যাট আর হাতে লাঠি। যে ব্যাপারটি কারও চোখ এড়ায় না তা হচ্ছে লোকটির অদ্ভুত গোঁফ। তিনি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন আর ঘটাচ্ছেন অদ্ভুত সব কাণ্ড-কারখানা। আর এসব দেখেই হেসে কুটিকুটি হচ্ছেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। এক নামে পুরো বিশ্ব চিনতে শুরু করে চার্লি চ্যাপলিনকে।

১৯৭৭ সালের শুরু থেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন তিনি। সে বছরের ২৫ ডিসেম্বর প্রায় নিঃসঙ্গ অবস্থায় রম্য অভিনেতা চার্লি মারা যান সুইজারল্যান্ডের কার্সিয়ারে। একটি ডিঙ্গিতে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরের বছরই তার মৃতদেহ চুরি হয়ে যায়। ১৬ দিন পর উদ্ধার করার পর তা আবার সমাহিত করা হয়।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট

ওডি/এএন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড