• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অধিকারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন

‘জাতীয় দলে টিকে থাকতে পারফরম্যান্সের বিকল্প নেই’

  এম আনোয়ার হোসেন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)

২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০৯
‘জাতীয় দলে টিকে থাকতে পারফরম্যান্সের বিকল্প নেই’
বক্তব্য রাখছেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন (ছবি : অধিকার)

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ফেনীর এই তারকা খেলোয়াড় সম্প্রতি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ১৬নং সাহেরখালী ইউনিয়নের পূর্ব সাহেরখালী গ্রামের জামাই হয়েছেন।

সম্প্রতি ওই গ্রামের কাজী রেফায়েত হোসেন ও সাহেদা চৌধুরীর কন্যা কাজী ফাতেমা তুজ জারার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জারার সাহেরখালী ইউনিয়নের আহমদিয়া হাবিবিয়া গনিয়া দাখিল মাদরাসায় শিক্ষা জীবন শুরু হলেও পরবর্তীকালে ফেনী ফালাহিয়া মাদরাসা হতে দাখিল ও আলিম সম্পন্ন করেন। একমাত্র বোনের পছন্দ হিসেবে জারাকেই চলতি বছরের ২ মার্চ জীবনসঙ্গী করেছেন সাইফুদ্দিন।

রবিবার (২৪ এপ্রিল) ইদ পরবর্তী শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। সেই হিসেবে সাহেরখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদ আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেওয়া হয় এই অলরাউন্ডারকে। পরবর্তী সময়ে একান্ত আলাপচারিতায় ক্রিকেট ও ক্রিকেটের বাইরে বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।

নিচে পাঠকের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো :

প্রশ্ন : মিরসরাইয়ের জামাই হিসেবে আজ সংবর্ধিত হলেন, আপনার অনুভূতি কি?

সাইফুদ্দিন : আসলে অনুভূতি প্রকাশ করার মতো না একটু অন্য রকম, এর আগেও নানা কারণে অনেক সংবর্ধনা পেয়েছি। বিয়ের পর জামাই হিসেবে এটাই প্রথম। আসলে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। অবশ্যই ভালো।

প্রশ্ন : জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেন এবং সম্ভবত এই প্রথম আপনি শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন, এ বিষয়ে আপনি যদি কিছু বলতেন?

সাইফুদ্দিন : সত্যি মনোমুগ্ধকর! প্রত্যেকটা মানুষেরই শ্বশুরবাড়িতে আসলে একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে, আমিও তার ব্যতিক্রম নই। আর সত্যি বলতে এখানকার পরিবেশে খুবই মনোমুগ্ধকর।

প্রশ্ন : সামনে বিশ্বকাপ, এই বিশ্বকাপে আপনার পরিকল্পনা কি, এবং বিশ্বকাপে দলে ফেরার বিষয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?

সাইফুদ্দিন : অবশ্যই, আপনারা জানেন, সাদা বলে অনেক বেশি কম্পিটিশন, এই মুহূর্তে দলের সবাই পারফর্ম করছে, এই ক্ষেত্রে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং আমার জন্য। একজন অলরাউন্ডার হিসেবে বাংলাদেশে সব সময় একটা স্পেস থাকে। ইনশাল্লাহ, এই জায়গাটা আমি ধরে রাখতে চাই। যেহেতু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ চলছে, সেখানে নিজেকে আরও ছাড়িয়ে যেতে চাই, টপ শিকারিদের একজন হয়ে থাকা আমার লক্ষ্য। যেহেতু আরও ৫ টা ম্যাচ হাতে আছে। আমি চেষ্টা করবো সেরাটা দেওয়ার এবং বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেওয়ার।

প্রশ্ন : ইদ আমাদের জীবনে অন্যরকম অনুভূতির বিষয়। নতুন বিয়ে করেছেন, বিয়ের প্রথম ইদ কিভাবে কাটালেন?

সাইফুদ্দিন : সত্যি বলতে ব্যতিক্রম কিছু না নরমালি.. আগে হয়তোবা মা, ভাই ফ্যামিলির সবার সাথে ইদ করতাম গ্রামের বাড়িতে গিয়ে, এবার যেহেতু ঘরে নতুন অতিথি এসেছে, তো আলহামদুলিল্লাহ প্রত্যেকটা মানুষের জন্য একজন লাইফ পার্টনার বা সহধর্মিণী যদি সাপোর্ট হয় তা হলে সেটা অন্যরকম হতে বাধ্য। তবে যদি আরেকটু উপভোগ করতে পারতাম, কোথাও ঘুরতে যেতে পারতাম। তবে আরও ভাল লাগতো। যদিও আমাদের টাইট শিডিউল। ইদের পরপরই আবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বাকি ম্যাচগুলো হবে, তো সুযোগ নেই। ঢাকা ফিরতে হবে কর্মব্যস্ততার জন্য। ইনশাআল্লাহ! ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ হলে তখন হয়তোবা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হবে।

প্রশ্ন : আপনি অনেক ব্যস্ত মানুষ, একজন ব্যস্ত মানুষের সাপোর্টার হিসেবে আপনার সহধর্মিণী কেমন?

সাইফুদ্দিন : আসলে তার খুব বেশি চাহিদা নেই, কোথাও ঘুরতে যাওয়ার নির্ধারিত কোন চাহিদা নেই তার। এটা আসলে একজন ক্রিকেটারের জন্য বড় পাওয়া। সে নিজ থেকে কিছু বলেনি, সব আমার উপর ছেড়ে দিয়েছে। যখন আমি সময় পাবো তখনই যাবে। এটা আমার জন্য সব চেয়ে বড় সাপোর্টের।

প্রশ্ন : যারা আপনার মতো ক্রিকেটার হতে চায়, সাইফুদ্দিন হতে চায় তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি? মানে গ্রাম থেকে যেমন আপনি আজকের বক্তব্যেও (সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য) বললেন যে, ক্রীড়াকে গুরুত্ব দেয়ার। নতুন ক্রিকেটার বা ক্রীড়াবিদ হতে হলে কি করা উচিত?

সাইফুদ্দিন : আপনি যদি দেখেন, আসলে আমাদের আগেও যারা ক্রিকেটার ছিলেন তাদের মধ্যে অনেকে মধ্যবিত্ত পরিবার কিংবা গ্রাম এবং গ্রামে ক্রিকেট খেলে উঠে এসেছেন। ধনী ফ্যামিলি থেকে কিন্তু ওরকম খুব বেশি ক্রিকেটার উঠে আসেনি। যার কারণে একটা সুযোগ তো আছে। আমাদের বাংলাদেশে আনাচে কানাচে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে। ওরা সময় এবং সুযোগের অভাবে তাদের প্রতিভা বিকাশ করতে পারে না। এ জন্য প্রতিটা স্কুলে যদি বার্ষিক কোন টুর্নামেন্ট বা ক্রীড়ার আয়োজন করে তাহলে এখান থেকে কেউ না কেউ সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল কিংবা মাশরাফির মতো বের হয়ে আসবে। আমি সাইফুদ্দিন অনেক ছোট। আমার দেশের যারা লিজেন্ড ক্রিকেটার আমি তাদের কথাই বললাম। কারণ আপনি যদি দেখেন নড়াইল, মাগুরা এসব জায়গা থেকে যদি সাকিব, মাশরাফি ভাইরা উঠে আসতে পারেন তাহলে ফেনী বা চিটাগাং এই দুইটা জায়গার ছেলেরা অনেক প্রতিভাবান। এখানকার ছেলেরা অন্যান্য জেলার ছেলেদের চেয়ে অল্পতে অনেক বেশি আয়ত্ব করতে পারে। তবে আমি মনে করি এখানকার সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি কম। স্কুল কিংবা পাড়া মহল্লার দায়িত্ববান ব্যক্তিরা যদি এদিকে একটু নজর দেন তাহলে হয়তো সামনে গর্ব করার মতো আরও অনেক তামিম, সাকিব, মাশরাফিকে খুঁজে পেতে পারেন।

প্রশ্ন : জাতীয় দলে নিজের স্থান আবার ফিরে পেতে কি করছেন আপনি?

সাইফুদ্দিন : ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ চলমান। এই লিগে ঐতিহ্যবাহী দল আবাহনীর হয়ে খেলছি। আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো যাচ্ছে। বিপিএলটা যদিও মন মতো যায়নি। এখানে শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত ভালই যাচ্ছে। ব্যাটিংয়েও টুকটাক রান পাচ্ছি। আমাদের আরও ৫টি ম্যাচ বাকি আছে। সুপার লিগের বাকি ম্যাচগুলো আগামী ৫ মে থেকে আবারও শুরু হবে। ইনশাল্লাহ আমি যাতে ভালো করতে পারি, প্রথম অথবা দ্বিতীয়তে থাকতে পারি সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রশ্ন : জাতীয় দলে ফেরার জন্য এই মুহূর্তে আপনার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ কি?

সাইফুদ্দিন : অবশ্যই পারফরম্যান্স। প্রত্যেকটা ক্রিকেটারকে দলে সুযোগ পাওয়ার চেয়ে জায়গাটা ধরে রাখার জন্য পারফরম্যান্সের কোনো বিকল্প নেই। এর আগে একটা সিরিজে আমি খারাপ করেছি, সে জন্য বাদ পড়েছি। তো জাতীয় দলে টিকে থাকতে হলে পারফরম্যান্সের কোনো বিকল্প নেই। ফিটনেস আর পারফরম্যান্স ধরে রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড