রওনক জাহান
তোমার অতন্দ্রিলা
নিজের মাঝে ভাঙছি ভীষণ, তোলপাড়ো হয় বেশ। তোমার মাঝে শুভ-সূচনা, চাই তোমাতে হোক শেষ।
শত ব্যথার কাব্য ফুরিয়ে, সুখের তরে হায়! অবেলায় ও বেলা আমার, হাজার দ্বিধায় যায়।
জগৎজুড়ে চলছে কেবল; চাওয়া পাওয়ার খেলা। আজ সবকিছুতে মানিয়ে গেছে, তোমার অতন্দ্রিলা।
তুমি তারে আর ডেকো না, নাওনা কোন খোঁজ, সে এখন ভুলেই গেছে, ভাবতে তোমায় রোজ।
শুধু তার রুমাল ভাঁজে, আটটা দশটা বকুল। তোমার স্বপ্নে বিভোর থাকে। তোমার জন্যই আকুল।
আজও কিন্তু লিখে চিঠি; নিয়ম করে রোজ। যদিও তোমার হয়না সময়, নিতে তার খোঁজ।
রোজ বিকেলে রেলিং ছুঁয়ে, অতন্দ্রিলা দাঁড়ায়। নিজের মাঝে নিজেকে সে, সহস্রবার হারায়।
তুমি যদিও চাও না জানতে, কেমন আছে সে! মেয়েটা কিন্তু বেশ বেহায়া। তোমার কথাই ভাবে।
বলো না যেন ন্যাকা ভারী; ভীষণ রকম অভিমান। তোমার জন্যই খাঁ খাঁ করে, অতন্দ্রিলার প্রাণ।
শহরের সব অলিগলি, তোমায় খুঁজে তবুও। চলতে গিয়ে হঠাৎ করেই; দেখা হলে কভু!
চোখ দুটো তার কৌতূহলী। ফিরে ফিরে চায়, ভীষণ বোকা অতন্দ্রিলা, ভালোবাসে তোমায়।
গল্পতো হয় বেশ
আকাশটাতে মেঘ করেছে, বৃষ্টি নামবে বলে মাটির নাকি চিঠি লিখেছিলো! ধুয়ে দিতে তারে, নীরব সকালে,মুক্ত আকাশে,স্নিগ্ধ চিলের দল। মনটা তাও আজ আটকে আছে, কাক ভেজা কার্নিশে।
বনসাইয়ের ভেজা পাতায় রোদ ছুঁই ছুঁই করে। হালকা করে হাওয়া এসে ঝাপটা লাগায় গায়ে, আহ্লাদী বৃষ্টিটাও যাচ্ছে খানিক ছুঁয়ে, রোদ-বৃষ্টির আজব খেলা চলছে বহুক্ষণ। আজব আজব ভাবনা ভেবে স্বপ্নে বিভোর মন।
তুমিটাও তেমনি অবুঝ, বুঝতে চাওনা মোটে। অনুরাগের কুড়িতে তাই অভিযোগ'ই ফুটে। বিস্ময়ে তাও চোখ দুটো জানালাতে তাকায়! আবেগ গুলোও ঠিকরে পড়ে অনুযোগে মাখায়। কেন জানি বুঝছো না তাও, কেমনে আছি আমি! একটা দুটো স্বপ্ন গুছাই, আনমনে আবার থামি।
আচমকা যখন ঘোর কেটে যায়?যেই আছি সেই আমি! হারিয়ে যায় আকাশ আমার হারিয়ে যায় চিল। এতো এতো গল্প লিখি পাইনা খুঁজে মিল। আবেগে আজ ঘাটতি বড়ো, মূল্য চড়া স্বপ্নেরো!
একলা আমি,একলা তুমি,একলা ভেজা চড়ুই। বেলা শেষে একলা সবাই বৃষ্টি ধুলোয় লুটোই। বাদলা নূপুরের শ্রান্ত দুপুর একলা একলা ফুরয়। বেদনাতে জলকেলি হয়, অশ্রুতে সুখ কুড়োয়। সেমিকোলন কিংবা বিস্ময় !প্রয়োজনে থামি। কাব্য রচি ভালোবেসেই, আমি কাব্যপ্রেমী।
কলম যখন অচল অসার সঙ্গী কিছু কথা। সঙ্গী হয়ে থাকে বৃক্ষ, অতৃপ্ত ডাল-পাতা আমার বেলা এমনি ফুরয় একলাটি পথ হেঁটে। যেচে পড়ে মন্দ হয়ে গ্লানিতে যাই ঢেকে। তবুও সময় যাচ্ছে ভালোই।আছি আমি বেশ। শব্দের পর শব্দ জুড়ে গল্প তো হয় বেশ!
একটু যদি থামি
আমি তখন ষোড়শী,মাধ্যমিকে পড়ি। সে তখন রোজই দেখতো, কখনো পথ আগলাতো না। আমার যাওয়া-আসার সময়টা, রপ্ত করেছিলো বেশ।
নামও দিয়েছিলো একটা, ডাকতো আমায় মাঝে মাঝেই। চাইতাম যখন চোখ রাঙিয়ে, তাতেই সব উৎসাহ শেষ।
দাঁড়াতো রোজ ভোরেই এসে, ডাকতো কখন-সখন; বলতো আমায় নিচু স্বরে: শুনছো নীলাঞ্জনা, কাজলটা আজ দিয়েই আসতে। ধূরস লাগতো না। কপালটা বেশ ফাঁকা লাগে, কালো টিপটা ছাড়া; তুমি ভীষণ ব্যস্ত বুঝি। কদিন ধরেই আয়না দেখছো না।
আমি শুনতাম শুধু। শুনে হেসেই লুটোপুটি, এসব কথাও কি গায়ে মাখে কেউ! তার উৎসাহ বড্ড রকমে। দেখতে চাইতো তাও। তখন আমি কৈশোরে,সেতো তেমন নয়। আমার মাঝে তিলে তিলে হচ্ছিলো তার ক্ষয়।
রোজ দাঁড়াতো পথটাতে তাও, যদি একটু তাকাই। ক্ষীণ আশা আরো ক্ষীণরূপ, যদি না ফিরে চাই। সে তবুও নিরাশ হয়নি ডাকতো তবুও আমায়। একলা পথে একলা পেলে তক্ষুনি ডেকে থামায়। হাল্কা কিছু অজুহাতে বেরিয়ে যেতাম আমি, তবুও সে থাকতো আশায়, একটু যদি থামি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড