নিশাত মজুমদার
‘ঐশী’ সম্পর্কে শুধু এটুকু বললে ভুল হবে। ‘ঐশী’ এক যোদ্ধার নাম। প্রতিনিয়ত সমাজের সাথে যুদ্ধ করে যে এগিয়ে চলে। সেবক ঐশীর ধীরে আসে প্রেম, ধীরে গড়ায় বর্তমান আর খুব ধীরে আসে ভবিষ্যৎ ।
ঐশী, যে প্রতিনিয়ত তার সংসার গড়ার স্বপ্নটাকে বড় করে। কিন্তু অত্যন্ত সাম্প্রদায়িক দেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনা তখনো মাথা তুলে ওঠেনি। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান ব্যবধানে বলি হয় তাঁরা । পুঁজিবাদ সমাজের আঘাতে জর্জরিত হতে হয় প্রতিনিয়ত। রাজনীতির নাম করে চ্যালাচুলারা যেভাবে গরীবদের রক্তচোষে জোঁকের ভূমিকায়, গরীবেরা বলবানের পদতলে দলায়মলায় হয় যেভাবে তা এই উপন্যাসে স্পষ্ট।
যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়ে বেশি চিত্তাকর্ষক এই উপন্যাস। অনার্স ২য় বর্ষের একটা মেয়ে এরকম শব্দ চয়ন, ভাব প্রকাশ কিভাবে করতে পারে! অবাক হয়ে গেলাম বইটি পড়ে। ‘ঐশী’র শুরুটাও সুন্দরভাবেই। একটি উপন্যাসে উঠে এসেছে সমাজের রুঢ় বাস্তবতা। মাটির কথা, সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালন এবং সম্প্রীতির নমুনাও। নারীর জীবনে কতটা 'ঠোক্কর' খেতে হয় তার অবয়ব জীবনধারায় উঠে এসেছে। সবকিছু ছাপিয়ে ভালোবাসার গভীররূপ টুকু ধরা পড়েছে লেখকের কলমে।
মনের ভ্রান্তির অসম প্রেমের ধারার গল্পে মোড়ানো ‘ঐশী’। বাঙালী সংগ্রামী এক নারীর পথচলা, ঠেকে, ঠকে উত্থান পতন সবই যেন বাস্তব জীবনেরই দর্পণ। শব্দ চয়নে কোনো কাঁচিকুঁচি নেই, যেটা যখন দরকার প্রয়োজনমত ব্যবহার করেছেন লেখক। সাধারণ আট দশটা মানুষের আদিম কু-রিপুর আস্ফালন কলমের ডগায় উঠিয়ে আনা চাট্টেখানি কথা নয়। আমাদের সমাজে এমন অসংখ্য ঐশী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সব ঐশীদের গল্প আমাদের জানা নেই।
নতুন লেখকদের বইয়ে মোহাচ্ছন করার ক্ষমতা দেখিনি। এই বইতে সেটা পেলাম। আবর্জনা ছাড়াও কিছু নতুন লেখক ভালোই লিখে। আমার বিশ্বাস ‘ঐশী’ বই সবার মনে দাগ কাটবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড