শব্দনীল
রুদ্রাক্ষ রায়হান। যিনি কবিতা পড়তে পড়তে বুঝেছিলেন, কবিতা লেখা যায়। সে আত্মবিশ্বাস থেকেই কাব্য চর্চায় মনোনিবেশ করেন। তার কবিতার মাঝে তিনি যেমন প্রেম ও বিরহের কথা ফুটিয়ে তুলেছেন উপমার মাধ্যমে। তেমনি তির্যক শব্দের মাধ্যমে বিদ্রোহ করেছেন সমাজবৈষম্য ও শাসক শ্রেণীদের বিরুদ্ধে। তিনি ১০ মে বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সাদেকপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯-এ ‘পরিবার পাবলিকেশন’ থেকে রুদ্রাক্ষ রায়হানের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বহুগামী ঘোড়া’ প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘বহুগামী ঘোড়া’কে নিয়ে রুদ্রাক্ষ রায়হান মুখোমুখি হয়েছিলেন দৈনিক অধিকার’-এর।
দৈনিক অধিকার : কেমন আছেন রুদ্রাক্ষ রায়হান?
রুদ্রাক্ষ রায়হান : ভালো নেই; আসলে ভালো থাকার অভিনয় করছি। বাকরুদ্ধ একটা দেশে অন্তত মানুষ ভালো থাকতে পারে না। কবি তো মোটেও না।
দৈনিক অধিকার : আপনার প্রথম কাব্যগ্রন্থ নিয়ে কিছু বলুন-
রুদ্রাক্ষ রায়হান : প্রথম বই সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয় এটা কবিতার বই। এই বইয়ে আসলে কবিতা নেই। আমার কান্না, আমার চিৎকার রয়েছে। বলতে পারেন আমি এই বইকে আশ্রয় করে, আমার কবিতাকে আশ্রয় করে যে কথাগুলো বলা যায়না তা বলতে চেয়েছি। সমাজ, সময়, জীবন, প্রেম সবকিছুই এসেছে।
দৈনিক অধিকার : ‘বহুগামী ঘোড়া’ কি শুধুই কাব্যগ্রন্থের নাম নাকি এই নামের অন্তরালে অন্যকিছু আছে?
রুদ্রাক্ষ রায়হান : না, শুধুই কবিতার বই নয়, অন্য অনেক কিছু রয়েছে। তবে তা জানতে বইটি পড়তে হবে।
দৈনিক অধিকার : কবির নিজের মাঝে কিছুটা বিদ্রোহের ছাপ পাওয়া যায়। এই বিদ্রোহ কি নিজের সাথে নিজের নাকি সমাজব্যবস্থাও জড়িত আছে?
রুদ্রাক্ষ রায়হান : আমার নিজের সাথে কোন বিদ্রোহ নেই, সমাজের সাথেও না। এই সমাজের সাথে বিদ্রোহ করার কিছু নেই। বিদ্রোহ চলে ক্ষমতাধরের বিরুদ্ধে! এই সমাজ কপট ধূর্ত, শেয়ালের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়না। আমি বরং সমাজ কে চপেটাঘাত করেছি। আঙ্গুল তুলেছি, প্রয়োজনে গালি দিয়েছি।
দৈনিক অধিকার : সাহিত্যের অনেক অধ্যায় আছে তবু কবিতা কেন লেখেন?
রুদ্রাক্ষ রায়হান : সব সাহিত্য তৈরি করা যায়। কবি একটা মানসিক অবস্থার নাম। আমি কবি। শুধুমাত্র কবি তাই কবিতা লিখি। কিংবা অন্য কিছু হয় না বলে লিখি।
দৈনিক অধিকার : ‘বহুগামী ঘোড়া’র মধ্যে আমি যা বুঝাতে চেয়েছেন তা কি শুধু ব্যক্তিগত স্থান থেকে উপলব্ধি করা?
রুদ্রাক্ষ রায়হান : ব্যক্তিগতই। প্রত্যেকটা মানুষই ব্যক্তিগত চিন্তা থেকেই কাজ করে। আরোপিত কোনকিছুই হয়না, টেকেনা। আমি এখানে যা বুঝাতে চেয়েছি তার পুরোটাই ব্যক্তিগত স্থান থেকে উপলব্ধি করা।
দৈনিক অধিকার : পাঠক আপনার কবিতার মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাবে এমনটা নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
রুদ্রাক্ষ রায়হান : না, পাঠকের খুঁজে পাওয়ার কিছু নেই তো এখানে। আমি আমার অভিজ্ঞতা লিখেছি। এখানে যার অভিজ্ঞতা আমার সাথে মিলবে তার সাথে কবিতার চিন্তা মিলবে। আর যে আমার অভিজ্ঞতার সাথে পরিচিত নয় সে অন্তত এটা জানবে যে তার চিন্তার বাইরেও অন্য কিছু ঘটছে।
দৈনিক অধিকার : আপনার লেখালেখির শুরুর গল্পটা জানতে চাই।
রুদ্রাক্ষ রায়হান : গল্প নেই, কবিতা পড়তে শুরু করার পরে মনে হয়েছে এমন আমিও পারি। একটু দেরিতে আসা কবিতায়। বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বিজ্ঞান পড়ে কবিতা পড়তে ঝামেলা হয় তাই আইনে ভর্তি হই বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ছি এখনো, লিখতে চেষ্টা করছি, হলে হলো না হলেও কিছু যায় আসেনা।
দৈনিক অধিকার : বইটি পাঠক কীভাবে নিচ্ছে?
রুদ্রাক্ষ রায়হান : বিক্রি এখন পর্যন্ত দারুন বলতে হবে; প্রথম সপ্তাহে ৫০ কপির বেশী কবিতার বই বিক্রি ভালোই বলা যায়। তবে পাঠকের মতামত জানতে একটু সময় লাগবে।
দৈনিক অধিকার : প্রথম প্রকাশের অনুভূতি কেমন ছিল সে বিষয়ে কিছু বলুন-
রুদ্রাক্ষ রায়হান : অনুভূতি বলতে পরিবার পাবলিকেশনের মালিক সোহানুর রহিম সাওন ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা বোধ ছাড়া তেমন কোন অনুভূতি নেই। প্রকাশ হওয়ার আগে মনে হয়েছিলো কি যেন একটা হয়ে যাচ্ছে, এখন স্বাভাবিক। বইটা বিক্রি করে প্রকাশক তার বিনিয়োগ ফেরত পেলেই খুশি।
দৈনিক অধিকার : রুদ্রাক্ষ রায়হানকে নিয়ে পাঠক অনেক না জানা কিছু জানলো আজকে। আপনার এবং আপার কাব্যগ্রন্থের জন্য শুভকামনা রইলো। ভালো থাকবেন।
রুদ্রাক্ষ রায়হান : আপনিও ভালো থাকুন। পাঠক ভালো থাকুক। ২১৩ পরিবারের স্টলে এসে ঘোড়ায় উঠুক।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড