• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অনুবাদ কবিতা

জর্জ সেফেরিসের ‘রেক্স ওয়ারনারকে লেখা চিঠি’

  অনুবাদ: কুমার চক্রবর্তী

২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:১০
কবিতা
ছবি : প্রতীকী

আমেরিকার কনেকটিকাটের স্টোরসের বাসিন্দা তাঁর ষাটতম জন্মদিনে

আমাদের দেখা হওয়ার সময় নপুংসকদের রাজ্যে আকাশকুসুম-কল্পনার এক গল্প বলছিলে তুমি; ওখানকার ফুটবল খেলার মাঠ চাক্ষুষ করেছিল নির্লজ্জ হত্যাযজ্ঞ। এক মর্মরনির্মিত স্টেডিয়াম থেকে ফিরছিলাম যেখানে একগুঁয়ে আহত এক ম্যারাথন দৌড়বিদ দেখল রক্তের গভীরে গুনটানা। এজন্যই অনুভব করলাম কে-ছিলে তুমি, আর তাই বন্ধুত্ব হলো তোমার-আমার।

যুদ্ধে নিকেশ হওয়া এক দেশে ছিলাম আমরা– তারা এমনকি শিশুদের পুতুলগুলোকেও করে দিয়েছিল খোঁড়া। আলো ছিল তীব্র আর সঞ্চরণশীল, সবকিছুকে কামড়ে ধরেছিল, হয়ে পড়েছিল পাথরের মতো শক্ত। সাইকেল আর ঘুড়ির মাঝ দিয়ে হেঁটে বেড়িয়েছি আমরা, দেখেছি রং, কিন্তু আমাদের কথাবার্তা উদ্দেশ্যবিহীনভাবে বিষিয়ে উঠল এক আতংকে।

দিন যায় বছর যায়, আর একসময় লকলকিয়ে ওঠা বৃক্ষপল্লবিত জমিনে খুঁজে পেলাম তোমাকে, যেখানে বিষাক্ত আইভিলতা কখনও-সখনও থাকে অপেক্ষমাণ পড়ুয়া শিশুরা উদ্ঘাটিত করতে শেখে পুস্তকের জ্ঞানভাণ্ডার, আর ভালোবাসার গোলকধাঁধা। সবসময়ই তুমি প্রশংসা করতে হোমার আর তাঁর শিক্ষাকে। এক কাঠবেড়ালি–আকস্মিক, বিশাল এক গাছের উপর থেকে আরও উপরে গেল উঠে আর তা দেখে তুমি খিলখিলিয়ে উঠলে হেসে।

আমাদের জীবন এক নিরন্তর বিচ্ছিন্নতা আর এর চেয়েও এক কঠিন বাস্তবতা।

এখন, অসংখ্য অলিগলিময় এই শহরে, আবারও তোমাকে ভাবছি আরেকবার। সবকিছুই দূরদর্শন, কাছ থেকেও সহজে ধরতে পারবে না কিছু এই বৈদ্যুতিক আলোতে, সমুদ্রতলের এই শুনশান নীরবতায়, আলোকিত সুউচ্চ অট্টালিকার জানালাগুলোর মৃদু ঝিলিক যেন বিশাল সমুদ্রদানবের চামড়ার মতো ভাঙছে ঢেউগুলোকে। বহুরূপী মানুষেরা পূর্ণ করে চলছে নিজেদের, কনুই দিয়ে ধাক্কা মারা অগুনতি লোকজন অন্য এক আনন্দ আর উদ্বেগের আশায় যাচ্ছিল চলে ওই সময়ে। শূন্যগর্ভ তারা,– হৃদয়হীন– সেই পাখির বহুখোপবিশিষ্ট বাসার মতো যে-পাখির ডাকনাম বাবুই

—ফিলেতায়েরুস সোসিউস; কণ্টকময় অ্যাকাশিয়ার ডালে বা জাদুঘরে খুঁজলে তুমি তাদের দেখা পাবে। ‘শক্ত খোসার রসালো ফলটির জন্য এখন আমার দুঃখ হয়’ বিশাল নিনেভেহ শহরের দিকে চেয়ে বিড়বিড় করে চলে নবী জোনাহ। জাগ্রত স্বপ্নের দিকে মনের অর্গল খুলে দেয় তাঁর কথা একত্র হয় দৈনন্দিন কাজের দিনক্ষণ: মুখ হাঁ-করা ষাঁড় আর অশ্ব আর তাদের জিহ্বা যেন আকস্মিক দেখা ছুরির ফলার মতো; এল গ্রেকো নামের এক অভিবাসী নরকের ভাষায় বলছে কথা যা দুর্বোধ্য ঠেকছে সবার কাছে; আর সেই ভাস্কর যিনি বিশ্বাস করতেন আকাশটার রং লাল আর ছিলেন তিনি সংগ্রামরত সর্বগ্রাসী শূন্যতায় যে-শূন্যতা গ্রাস করছিল তাঁর হাতে থাকা ভাস্কর্য: নঞর্থকতার দিকে এখনও যা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর, স্থির আর সরু। চলে গেল তারা চোখের আড়ালে যখন রমণীমোহন যুবক মেগাক্লেস, বাম বাহুতে ক্রীড়াবিদের তেলের শিশি ঝুলিয়ে, সশরীরে গিয়ে হাতের তিন আঙুলে ধরে রাখা ডালিম ফল দিল অর্ঘ্য পার্সেফোনেকে, গদগদচিত্তে।

এখন তোমার বয়স ষাট কিছুই তোমাকে দেবার নেই আর এইসব অলস বকবকানি ছাড়া। এখনও, মনে হয়, আমাকে ঘিরে রেখেছে আর করছে প্ররোচিত একঝাঁক বাবুই পাখি।

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড