সাহিত্য ডেস্ক
আমি যখন চার কেলাসে পড়ি তখন ওকাল মামু বললেন, মিয়ার বেটি, আমার আজিতেরে এট্টু পড়াইবার পারবা? এটাই মাত্র ছাওয়াল আমার, কোন মেয়াও (মেয়ে) নাই, ছাওয়ালডারে এট্টু শিক্ষিত করবার চাই । আমি মিয়ার বেটি, ওকাল মামু অবস্থাপন্ন কৃষক, এখানে একটা সামাজিক ব্যবধান আছে, কিন্তু গ্রামগঞ্জে আত্মিয়তার সম্পর্ক বাদে মিয়া কৃষকরা মিলেমিশেই থাকে, অন্তত আটত্রিশ বছর আগে যেরকম দেখেছি সেই ভাবনা থেকে বলা, আমিতো মহা খুশি, ছাত্রজীবনেই মাস্টার হতে যাচ্ছি।
আজিত (আসল নাম আজিজ) কে পড়ানো শুরু করলাম, হতভাগা এমন গাড়ল কে জানতো! একসপ্তাহের মধ্যে অনুভব করলাম, আমি আমার পড়াই ভুলে যাচ্ছি। আজিতের মাথায় টাকা কামানোর চিন্তা ছাড়া আর কোন ভাবনা নেই, বর্ণশিক্ষা কিংবা জসিমুদ্দিনের কবিতা এসবে ওর কোন আগ্রহ নেই, এমনকি তার বাবার জমিগুলো চাষ করার বিষয়েও কোন আগ্রহ? নেই, একেবারেই নেই।
মামুকে বললাম, পারুম না মামু, ও পড়বার চায় না, মামু আশাহত হলো, আজিত কিন্তু নেহায়েত বালক ছিলো না, আমার চেয়েও বড় কিন্তু সেই কেলাস ওয়ান পাশ দেয়া ওর আর হলো না।
সাতবছর পরে শুনলাম আজিত বাস ড্রাইভার, পরের বছর শুনি, কোন দুর জনপদের এক ভদ্রলোকের মেয়েকে ভাগিয়ে এনেছে ও, ওর বাবা মা খুব আহাজারি করতো, ‘হায় রে আমাগের জমিজিরাত কিডায় দেখপে’ তারপর খবর পেলাম আজিত মরে গেছে।
সে বড়লোক হয়েছিলো, আরও ধনী হওয়ার জন্য ইয়াবার চোরাচালান শুরু করেছিলো, কার কার সাথে দ্বন্দ্ব ছিলো তা আমি জানি না, আমার জানার কথাও নয়, কেবল জানি ওর বাবার আমন ক্ষেতের আলে পড়ে ছিলো লাশটা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড