লাইফস্টাইল ডেস্ক
ভারতের অন্যতম প্রাকৃতিক স্থান হলো মেঘালয়। মেঘ, পাহাড় আর স্বচ্ছ পানি মিলে রাজত্ব চালায় এখানে। গত পর্বে মেঘালয়ের কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানিয়েছিলাম। আজ চলুন জেনে নেওয়া যাক আরও কিছু স্থান সম্পর্কে-
চেরাপুঞ্জি-
চেরাপুঞ্জি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের স্থান। শিলং থেকে ৫৬ কিঃমিঃ দূরের এই শহরের উচ্চতা ৪২৬৭ ফুট। চেরাপুঞ্জি যাওয়ার পথশোভার তুলনা হয় না। চেরাবাজার ঘিরেই চেরাপুঞ্জি। চেরাগ্রাম ঘিরে রয়েছে কমলালেবু বাগিচা। খাড়া খাসিয়া পাহাড়ের গা বেয়ে মেঘেরা উঠে এসেছে উপরে।
চেরাপুঞ্জির আরেক আকর্ষণ বাজার থেকে ৬ কিঃমিঃ দূরে বিশ্বের চতুর্থ উচ্চতম জলপ্রপাত মোসমাই ফলস। হাজার দুয়েক ফুট উঁচু থেকে কয়েকটি পানির ধারা নেমে গেছে। বর্ষায় এখানে ভয়ংকর আকার নেয়।
চেরাপুঞ্জির ডাবল ডেকার রুট ব্রিজটি পর্যটকদের মূল আকর্ষণের মধ্যে অন্যতম। এটি চেরাপুঞ্জির নংগ্রিয়াট গ্রামে অবস্থিত। জীবন্ত গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি এই ব্রীজ আপনার মনকে আনন্দে ভরিয়ে দিবে।
ডাবল ডেকার রুট ব্রিজে পৌঁছাতে হলে সকালে সিঁড়ি বেয়ে ২৫০০ ফুট নিচে নামতে হবে। ডাবল ডেকার রুট ব্রীজের সামনেই ঝর্ণার পানি পড়ে কুয়া তৈরি হয়েছে। চাইলেই গোসল করা যায় এখানে।
এছাড়া চেরাপুঞ্জির দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে ইকো পার্ক, সেভেন সিস্টার্স ফলস, মোসমাই কেইভ, রেইনবো ফলস মকটক ভিউ পয়েন্ট ইত্যাদি।
শিলং-
মেঘালয়ের রাজধানী শিলং। কেউ কেউ বলেন দার্জিলিং যদি হয় রুপের রাণী তা হলে শিলং রুপের রাজা। শিলংকে বলা হয় প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড। শিলং এর রাস্তা যেনো আয়নার মতো স্বচ্ছ, ঝকঝকে পরিষ্কার। রবি ঠাকুরের প্রিয় শহর ছিলো শিলং। শিলং এ তিনি কিছুদিন পর পরই ঘুরতে যেতেন। শিলং এর শীতল প্রকৃতি তাঁর সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করতে সহযোগিতা করতো।
আগের পর্ব পড়তে- মেঘালয় রাজ্যের পথে পথে (১ম পর্ব)
উমিয়াম লেক শিলং এর সবচেয়ে সুন্দর লেকের মধ্যে অন্যতম। নিখুঁত প্রশান্ত হ্রদের পাশে বসে নির্বিঘ্নে মনমতো ছবি তোলা যায়। শিলং ভ্রমণে গেলে এর সর্বোচ্চ কেন্দ্র শিলং পার্ক বা শিলং ভিউপয়েন্টে অবশ্যই যাওয়া উচিত। এখানকার টিলা ও উপত্যকাগুলির দৃশ্য খুবই সুন্দর।
গল্ফ লিংক শিলং এর আরেকটি আকর্ষন। ১৮টি গহ্বর যুক্ত গল্ফ ক্ষেত্রটির এখানে সেখানে বেড়ে উঠেছে পাইন গাছ, দেখে মনে হয় বিশাল সবুজ গালিচার আলতো ঢালু ঢিবির উপর ঘূর্ণায়মান রয়েছে।
কেনাকাটার জন্য শিলং এর পুলিশ বাজার হলো বাণিজ্যিক কেন্দ্র। বিক্রেতারা এখানকার ব্যস্ত রাস্তার মোড়ে ডাম্পলিং, সেদ্ধ ডিম, ঠোঙ্গায় মোড়া ভুট্টা ইত্যাদি বিক্রি করেন।
কীভাবে যাবেন-
ঢাকা থেকে মেঘালয় যাওয়ার সহজ উপায় হলো ঢাকা টু সিলেট। তারপর সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে মেঘালয় প্রবেশ করা। তামাবিল থেকে ডাউকি মাত্র ২ কিলোমিটার। ডাউকি থেকে শিলং যেতে জীপে সময় লাগবে প্রায় ৩ ঘণ্টা।
কখন যাবেন-
মেঘালয়ে সারাবছরই পর্যটক আসে। তবে সেখানে পিক সিজন এবং অফ পিক সিজন বলেও কথা রয়েছে। পিক সিজন হলো মার্চ মাস থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি। এসময় প্রচুর পর্যটক আসে তাই সবকিছুর দাম বেশি থাকে। অফ পিক সিজনে তুলনামূলক কম ব্যয়ে ঘুরে আসা যায়।
মেঘেদের সাথে যারা লুটোপুটি খেলতে চান, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ আর ঝর্ণা দেখতে চান, তারা ঘুরে আসতে পারেন মেঘালয় থেকে।
লেখক- লামিয়া আলভী।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড