লাইফস্টাইল ডেস্ক
বাগানপ্রেমীদের জন্য যে কোনো গাছই ভালো লাগার। গাছ দিয়ে ঘর, বারান্দা, ছাদ সবকিছু সাজাতেই ভালোবাসেন তারা। এর মধ্যে বাড়তি সৌন্দর্য ফুটে ওঠে পানিতে যদি গাছ বড় হয়। বাগানের ভাষায় একে বলা হয় ওয়াটার গার্ডেন বা জল বাগান। পানিতে ঘর ঠাণ্ডা থাকে আর গাছ দেয় অক্সিজেন। দুইয়ে মিলিয়ে ঘরে থাকে অন্যরকম স্নিগ্ধতার ছোঁয়া। তাই মাটিতে গাছ লাগানোর পাশাপাশি পানির গাছও বাড়াবে সৌন্দর্য, দেবে মোহিত রূপ।
ঘরের ভেতর জল বাগান করতে খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না। অল্প জায়গাতেই সুন্দর আর পছন্দনীয়ভাবেই বানিয়ে ফেলা যায়। এর জন্য শুধু প্রয়োজন পানি ধরে রাখতে পারবে এমন পাত্র। তামা, পিতল, সীসা, যে কোনো ধরনের ধাতব পাত্র এড়িয়ে চলুন। কারণ গাছে দেওয়া সারের সঙ্গে ধাতবের মিশ্রণে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ক্ষতি হতে পারে গাছের। চাইলে বোতল বা বয়াম দিয়েও বানিয়ে ফেলা যায় জল বাগান। সবচেয়ে ভালো হয় মাটির পাত্র দিয়ে কাজ করলে।
কীভাবে শুরু করবেন:
- যেহেতু ঘরের সৌন্দর্য বাড়াবে ওয়াটার গার্ডেন তাই শুরুতেই নজর দিতে হবে এদিকেই। যার ভেতরে গাছ রাখা হবে সেটি পানি, নুড়ি, বালি, বিভিন্ন রঙের মার্বেল, পুঁতি ইত্যাদি দিয়ে পূর্ণ করে নিন। পানি জমে যেন দুর্গন্ধ না হয় সেজন্য উপাদানগুলোর সঙ্গে কাঠ-কয়লার (চারকোল) এক চিমটি গুঁড়ো বা ছোট একটি টুকরা যোগ করুন।
- পানি ও সারের মিশ্রণ তৈরির জন্য এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ পানির সাথে দ্রবণীয় সার ব্যবহার করুন।
- বাড়ির ভেতরের তাপমাত্রায় ভালো থাকবে এমন গাছ বেছে নেওয়া সবচেয়ে জরুরি। তাই তাপমাত্রা সহায়ক গাছ বেছে নিন। পছন্দসই গাছের সাথে মানিপ্ল্যান্ট ঝুলিয়ে দিতে পারেন। এরা পানিতে খুব সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে।
- গাছ লাগানোর পূর্বে পরিষ্কার পানিতে গাছটি ভালোভাবে ধুয়ে, শিকড়ের মাটি, পচে যাওয়া ডাল-পাতা পরিষ্কার করে নিন।
- এবার পানিতে রাখুন গাছ। অবস্থা বুঝে মাঝে মাঝে সার বদলে দিতে পারেন। প্রতি চার থেকে ছয় সপ্তাহ পরপর নিউট্রিশন সল্যুশন প্রতিস্থাপন করতে হবে। অন্ধকার বা অস্বচ্ছ ধারক হলে শ্যাওলার বৃদ্ধি কম হবে। তবে যদি বাগানের জন্য শ্যাওলা সমস্যা বেড়ে যায় সেক্ষেত্রে ঘন ঘন পানি বদলে দিতে হবে।
গাছ নির্বাচনে লক্ষণীয়:
- ওয়াটার গার্ডেনের জন্য যখনই আপনি গাছ নির্বাচন করতে যাচ্ছেন তখন আপনাকে দুটি বিষয় অবশ্যই ভাবনায় রাখতে হবে। এক, গাছের শোভাময় গুণাবলি আর দুই, গাছের ব্যবহারিক মূল্য। এই দুটির সমন্বয় পানিতে অক্সিজেন ধরে রাখে, সাহায্য করে শ্যাওলা সরিয়ে পানি পরিষ্কার রাখতে। এছাড়াও নাইট্রোজেনের অংশটুকু সরিয়ে জলটবের বাস্তুসংস্থানে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
- জলবাগান করার আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই বিষয়ে সঠিক পরিকল্পনা। গাছ বাছাইয়ের সময় খেয়াল রাখুন পানির দুই-তৃতীয়াংশের বেশি জায়গা যেন গাছ না নেয়।
- জলবাগানে অন্য গাছের সাথে আপনি নিশ্চিন্তে রাখতে পারেন কচুরিপানা বা পানি লেটুস। এরা পানির উপর অবাধে বড় হয়। পাতার সাহায্যে পানিতে ছায়া প্রদানের পাশাপাশি শ্যাওলা জন্মানোর জন্য প্রয়োজনীয় আলোর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। আর এ কারণে জলটবের পানি থাকে পরিষ্কার।
- গাছ বাছাইয়ের সময় লক্ষ্য করুন গাছের শেকড় সাদা, দৃঢ় এবং বাল্ব ও টিউব লম্বায় বড় কিনা। এমন হলে বুঝবেন গাছ সুস্থ এবং জলবাগানের জন্য উপযুক্ত।
- জলজ উদ্ভিদের জন্য কাদামাটি উপযুক্ত। এতে গাছে পুষ্টি বজায় থাকে। বড় গাছের জন্য মাটি ভালো হয়। আর যদি ছোট গাছ লাগাতে চান তবে বালিও ব্যবহার করতে পারেন।
পছন্দের গাছ দিয়ে ওয়াটার গার্ডেন বানানো জটিল কিছু নয়। প্রয়োজনানুযায়ী আর পছন্দসই মাপে জায়গা বুঝে বানিয়ে নেয়া যায়। প্রতিদিন পানি দিতে হবে এমন চিন্তা থাকে না বলে রক্ষণাবেক্ষণ করাও বেশ সহজ। তাই ঘরের সৌন্দর্যের সাথে সাথে নিজের পছন্দের সাথে মিলিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন ঘরের জলবাগান।
ওডি/এএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড