• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এক কাপ কফির পর কী হচ্ছে আপনার সাথে?

  জুবায়ের আহাম্মেদ

২৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৬:২০
কফি
এক কাপ কফিতে কী আসলেই ক্ষতি?

দিনের কাজ করতে করতে ক্লান্তি লাগছে? চটজলদি সমাধান হয়তো এক কাপ কফি। বন্ধুদের নিয়ে একটু ভালো সময় কাটাতে চাইছেন? চায়ের বদলে হয়তো আজ কফিই খেতে চাইবেন। কিংবা হয়তো দিনের সূচি আজ বেশ লম্বা। শরীর চাঙ্গা রাখতেও সমাধান ওই কফি। কিন্তু এক কাপ কফির পর ঠিক কী হচ্ছে আপনার শরীরে? শুধুই কি ক্লান্তি দূর করছেন? নাকি অন্যকিছুও হচ্ছে আপনার সাথে?

কফি আসলে কী? কফি মূলত এক ধরনের রাসায়নিক পানীয়। অস্বাভাবিক শুনলেও কফি আসলেই উচ্চমাত্রার রাসায়নিক পানীয়। এটি খুব দ্রুত আপনার শরীরে শোষিত এবং বন্টন হয়ে যায়। পুরো শরীরেই কফির প্রভাব রয়েছে। হোক তা ব্রেইন ফাংশানে, হোক দৃষ্টিশক্তি। এমকি হজম প্রক্রিয়াতেও কফির প্রভাব বিজ্ঞানীরা শনাক্ত করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, এক কাপ কফিতে থাকা ক্যাফেইন মাত্র ২০ মিনিটেই রক্তে মিশে যায়। এবং প্রায় ১২ ঘণ্টা রক্তে এর কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া যায়।

কফি বনাম হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ

কফি পানের কিছুক্ষণের মাধ্যেই আপনার শরীরে রক্তচাপ খানিক বেড়ে যাবে। যদি না আপনি কফি নিয়মিত পান করেন। এমন যদি হয় কালেভদ্রে আপনি এক কাপ কফি খেয়ে ক্ষান্ত হচ্ছেন সেক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটতে পারে। আপনার হৃদপিন্ডেও এর একটা প্রভাব পড়ে।

রক্তচাপ বেড়ে যাবার কারণে হার্টবিট খানিক কমে আসতে শুরু করে। তবে ঘাবড়ানোর বেশি কিছু নেই। আপনার যদি উচ্চরক্তচাপ এবং হৃদরোগজনিত সমস্যা না থাকে তবে এই দিক থেকে আপনি খানিক নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।

পাকস্থলী

ভারি কিছু খাওয়া হয়েছে কিংবা বিকালে একদফা নাস্তা করে ফেলেছেন, এখন এককাপ কফি আপনার জন্য খুবই উপকারী। কফিতে থাকা ক্যাফেইন পাকস্থলির গ্যাস্ট্রিক জুসের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়।

সেক্ষেত্রে আপনার হজমের জন্য কফি খুবই কার্যকরী প্রভাব ফেলবে। কিন্তু সাবধান থাকুন। খালি পেটে কফি একেবারেই বর্জনীয়। খালি পেটে গ্যাস্ট্রিক জুসের নিঃসরণের ফলে পেটে জ্বালাপোড়া, ব্যথা হতে পারে। এমনকি হৃদপিণ্ডেও এর প্রভাব পড়তে পারে।

অন্ত্র এবং মূত্রথলি

কফিতে থাকা রাসায়নিক উপাদান অন্ত্রের কার্যকলাপ উদ্দীপ্ত করে তোলে। বর্জ্য নিষ্কাশনে খুব দ্রুত সাড়া দেয় এবং অনেকের ক্ষেত্রে কফি পানের ৫ থেকে ৭ মিনিটের মাঝেই এর ফলাফল দেখা যায়। অবশ্য এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা ক্যাফেইনকে দায়ী করেন না। কারণ ক্যাফেইনহীন কফি পানের পরও এ ধরনের আন্ত্রিক প্রভাব তারা লক্ষ্য করেছেন।

তবে ব্রিটিশ ডাক্তার ড. বেইন বিশ্বাস করেন কফি মূত্রথলি দ্রুত পূর্ণ করে এটি শুধুই একটি মানসিক ধারণা। মূলত কফি এবং পানি শরীরে এইক্ষেত্রে একই প্রভাব ফেলে। মানব শরীরে কফির হাইডেশন ক্ষমতা বেশ কম বলে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

চোখ

কফি খেলে ঘুম কেটে যায়। এ কথা আমরা সবাই জানি। এবং এটি একটি বাস্তব সত্য। তবে ঘুম কাটে নাকি চোখের ক্ষমতা বাড়ে? আসলে কফি পানের পর আপনার চোখের ক্ষমতা বেড়ে যাচ্ছে। আপনারদৃষ্টিশক্তি বেশ প্রখর হচ্ছে। কফি পানের ফলে আপনার শরীরে এড্রেনালিন নিঃসরণ বেড়ে যায়।

এড্রেনালিনের এই ক্ষরণের ফলে আপনার চোখের পিউপিল খানিক বড় হয় এবং দৃষ্টিশক্তি আগের চেয়ে একটু ভালো অবস্থায় পৌছে যায়।

ব্রেইনের কার্যকারীতা এবং স্মৃতিশক্তি

কফি পানের ২০ মিনিট পর যখন সম্পূর্ণভাবে ক্যাফেইন আপনার রক্তে মিশে যাচ্ছে আপনি আগের চেয়ে নিজেকে আরও বেশি সচেতন এবং সজাগ অবস্থায় আবিষ্কার করতে পারেন। এছাড়া কফির প্রভাবে পরবর্তী ১২ ঘণ্টা আপনার স্মৃতিশক্তি অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় অনেকখানি চাঙ্গা থাকবে।

আপনার কাছে আপাতভাবে মামুলি মনে হলেও আপনার স্মৃতিশক্তি কিন্তু যে কোন ঘটনার বিপরীতে সত্যিকার অর্থে স্বাভাবিক সময়ে মাত্র ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা কাজ করে। আপনি ছাত্র হয়ে থাকলে পরীক্ষার আগে কফি পানের ধারণা সম্ভবত এখন থেকে আরও দৃঢ় হবে।

এছাড়া কফি পানের পর কিন্তু ফুসফুস বিষ্ময়কর ভাবে সহজে কাজ শুরু করে। এছাড়া কফি পানের ১ ঘণ্টার মাঝে আপনার দুশ্চিন্তা কমে আসতে শুরু করে। তাই দিনটা একটু বাজে হলে এক কাপ কফি হাতে তুলে নিন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড