আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবান। রাজধানীর অন্তর্বর্তীকালীন মেয়র হামদুল্লাহ নামোনি বলেছেন, তালেবান নেতারা কাবুল পৌরসভার অনেক নারী কর্মীকে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তালেবানের নতুন এই নির্দেশের তথ্য নিশ্চিত করেন জানান কাবুলের এই মেয়র।
হামদুল্লাহ নামোনি বলেছেন, আফগান নারীদের পরিবর্তে পুরুষদের কাজ করার বিকল্প নেই। শুধুমাত্র এমন ক্ষেত্রে নারীদের কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নকশা এবং প্রকৌশল বিভাগের দক্ষ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নারীদের জন্য পাবলিক টয়লেটের নারী কর্মীরাও আছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, কাবুলের মেয়রের এ মন্তব্য দেশটিতে নারীদের প্রকাশ্যে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ তালেবানের কট্টর ইসলামি শাসনের প্রত্যাবর্তন যে ঘটছে সেটিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও সহনশীলতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তালেবান।
১৯৯০-এর দশকের শাসনের সময় তালেবান একইভাবে মেয়ে ও নারীদের চাকরি এবং শিক্ষার অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। যদিও কাবুলের মেয়র বলেছেন, কাবুল পৌর বিভাগের নারী কর্মীদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো ঝুলে আছে, এমনকি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত নারীরা তাদের বেতন পাবেন।
কাবুলের মেয়র বলেছেন, গত মাসে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবান দখলে নেওয়ার আগ পর্যন্ত পৌরসভার সব বিভাগের প্রায় তিন হাজার কর্মীর মধ্যে এক তৃতীয়াংশই ছিলেন নারী।
আরও পড়ুন : নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয়েও আফগান নারীদের প্রবেশ বন্ধ
গেল কয়েকদিন তালেবানের নতুন সরকার নারী ও মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের অধিকার বাতিল করে আদেশ জারি করে। এর মধ্যে ছেলেরা স্কুলে ফেরার অনুমতি পেলেও তালেবান নেতারা বলছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে এখনই মেয়ে শিক্ষার্থীরা ফিরতে পারবে না।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পৃথকভাবে বসার ব্যবস্থা করার পর ছাত্রীদের ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কঠোর ইসলামি পোষাকবিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আফগানিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে ছেলে এবং মেয়েদের সহশিক্ষার অনুমতি থাকলেও তালেবান বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
এর আগে শুক্রবার আফগানিস্তানের নারী কল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পাল্টে ‘অপরাধ এবং পাপ-পুণ্য প্রচার প্রতিরোধ’ মন্ত্রণালয় করেছে তালেবান। রবিবার ওই মন্ত্রণালয়ের সামনে এক ডজনেরও বেশি নারী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
এ সময় তারা সরকারের সব স্তরে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের আহ্বান জানান। একজন নারীর হাতে ‘যে সমাজে নারীরা সক্রিয় নয়; সে সমাজ (মৃত)’ লেখা ব্যানার দেখা যায়। কাবুলে নারীদের এই বিক্ষোভ প্রায় ১০ মিনিটের মতো স্থায়ী ছিল। সেখানে একজন ব্যক্তির সঙ্গে বিক্ষোভরত নারীদের বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়।
আরও পড়ুন : অর্ধেক ভোট পেয়েই নির্বাচনে পুতিনের দলের জয়
পরবর্তীকালে ওই নারীরা গাড়িতে চড়ে সেখান থেকে চলে যান। এ সময় সেখানে তালেবানের অন্তত দুটি গাড়ি থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায়। গত ১৫ আগস্ট তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটির বিভিন্ন শহরে নারীরা আন্দোলন করেন। যদিও অধিকাংশ বিক্ষোভই তালেবানের সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে, লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সূত্র : এপি
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড