আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার সংঘাত থামানোর জন্য রাশিয়ার পক্ষ থেকে নতুন আহ্বান জানানো হয়েছে। রুশ বৈদেশিক গোয়েন্দা প্রধান বলেছেন, বিরোধপূর্ণ এই পাহাড়ি ছিটমহল ইসলামি জঙ্গিদের ঘাঁটিতে পরিণত হতে পারে। তার এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরার পর মস্কোর পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) নতুন এই আহ্বান জানানো হলো।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, আর্মেনীয় ও আজেরিদের মধ্যে দীর্ঘ ২৫ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত টানা দশম দিনে গড়ানোতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। যদিও ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আজারবাইজান ছাড় দিতে প্রস্তুত থাকলে আর্মেনিয়াও তা করবে।
প্রতিবেদনটিতে এই প্রস্তাবের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। শুধু উল্লেখ করা হয়েছে প্রস্তাবটি আর্মেনীয় প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান দিয়েছেন। আজারবাইজান আগেই জানিয়েছে, আর্মেনিয়া যদি নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের দিনক্ষণ ঘোষণা দেয় তাহলে তারা লড়াই থামাবে।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত হলে আর্মেনিয়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। এই সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়। সর্বশেষ পুরনো সংঘাত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনের সংঘাতে প্রায় তিনশ’ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
আরও পড়ুন : আর্মেনীয়দের চরম নিষ্ঠুরতায় সেদিন উচ্ছেদ হয়েছিল লক্ষ আজেরি
রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক ফোনালাপে উত্তেজনাবৃদ্ধি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
রাশিয়ার এসভিআর ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস প্রধান সের্গেই নারিশকিন বলেছেন, এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যের ভাড়াটে যোদ্ধা ও জঙ্গিদের আকৃষ্ট করছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা শত শত ভাড়াটে যোদ্ধা ও জঙ্গির কথা বলছি। এখন এমনকি কয়েক হাজার জঙ্গি নতুন কারাবাখ যুদ্ধে অর্থ উপার্জনের আশা করছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের নতুন ঘাঁটিতে পরিণত হতে পারে। যেখান থেকে জঙ্গিরা রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পৌঁছাতে পারবে।
আরও পড়ুন : আর্মেনিয়ার যুদ্ধে আজারবাইজানকে যে বার্তা দিল ইরান
এর আগে আজারবাইজানের ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাশিয়াকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার সংঘর্ষ আরও তীব্র হলে তাতে আঞ্চলিক শক্তিগুলো জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর সামরিক জোটের সদস্য আর্মেনিয়া, যার নেতৃত্বে রয়েছে রাশিয়া।
আরও পড়ুন : কারাবাখ যুদ্ধে এরদোগানকে ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি আসাদের
আবার আর্মেনিয়ার সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক থাকা তুরস্ক আজারবাইজানের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান আজারবাইজানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়া ইরান সংঘাতে লিপ্ত দুটি দেশেরই প্রতিবেশী।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড