• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ট্রেনে পানি বিক্রি, ফুটপাথে রাত কাটিয়ে ফোর্বসের তালিকায়

  ফিচার ডেস্ক

১৯ আগস্ট ২০১৯, ১২:০৬
ভিকি
ভিকি রায়; (ছবি- ইন্টারনেট)

ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রম মানুষকে নিয়ে যায় সাফল্যের দুয়ারে। আর যারা নিজের চেষ্টায় ও পরিশ্রমে সফলদের খাতায় নাম লেখান তাদের অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করেন সবাই। এই যেমন ভারতের ভিকি রায়। মাত্র ১১ বছর বয়সে ঘর ছেড়েছিলেন। ভেবেছিলেন নয়াদিল্লি গিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করবেন। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। ট্রেনে পানি বিক্রি করে আর ফুটপাতে রাত কাটিয়ে চলছিল জীবন।

তবে জীবন ট্রেনের কামরা আর ফুটপাতে থেমে থাকেনি। ভাগ্য আর নিজের চেষ্টা বদলে দিয়েছে ভিকির জীবন। আর তাইতো বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সাময়িকী ফোর্বস এশিয়ার ‘৩০ আন্ডার ৩০’ তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন তিন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের জনপ্রিয় পেইজ ‘হিউম্যানস অব বোম্বে’তে নিজের জীবনের কাহিনী লিখেছেন ভিকি। আর তার সেই গল্প ছুঁয়ে গেছে হাজারো মানুষের মন। ছোট্ট ভিকিকে বেঁচে থাকার তাগিদে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছিল। এমনকি অন্যের বাসায় থালা-বাসন ধোয়ার কাজও করতে হয়েছে তাকে।

জীবন ধারণের সংগ্রাম যে কতটা কঠিন তা হাড়ে হাড়ে অনুধাবন করেছেন ভিকি। এরপর তার জীবনে দেবদূত হয়ে আসেন একজন চিকিৎসক। তার মাধ্যমেই এক এনজিওর সংস্পর্শে আসেন ভিকি। ‘সালাম বালাক’ নামের এই এনজিওর কল্যাণে তার কপালে জুটে তিন বেলা আহার, পোশাক আর মাথার ওপর একটা ছাদ। স্কুলেও ভর্তি করানো হয় তাকে।

এরপর ভিকির জীবনে আসে নতুন মোড়। ধীরে ধীরে বদলে যেতে শুরু করে সব। এক ব্রিটিশ ফটোগ্রাফারের সঙ্গে দেখা হয় তার। ভিকি বলেন, ‘আমি তার কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। রাস্তায় বসবাসের ফলে মানবতার এত মাত্রা আমাকে দেখিয়েছিল যা আমি আগে দেখিনি। আমি চাইতাম তার মতো করে ছবিতে সেটা ফুটিয়ে তুলতে।’

ভিকির বয়স যখন ১৮ বছর তখন সেই এনজিও তাকে ৪৯৯ রুপি দামের একটি ক্যামেরা কিনে দেয়। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় স্থানীয় এক ফটোগ্রাফারের কাছে। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি ভিকিকে। এগিয়ে চলেছেন নিজের যোগ্যতায়।

সেই ফটোগ্রাফারের সাহায্যে স্ট্রিট ড্রিমস নামের একটি চিত্র প্রদর্শনী করেন তিনি। সেখান থেকে বিখ্যাত হতে শুরু করেন তিনি। তার ছবি খ্যাতি পেতে শুরু করে। মানুষ সেসব ছবি কিনতে শুরু করে। ক্রমে সারা বিশ্ব ঘুরে ফেলেন ভিকি। শুধু ছবি তুলেই নিউ ইয়র্ক, লন্ডন, দক্ষিণ আফ্রিকা, সান ফ্রানসিসকোসহ একের পর এক স্থানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে তার।

নিজের জীবন সম্পর্কে ভিকি বলেন, ‘কখনো কল্পনা করিনি আমি নিজের ভাগ্যকে এতটা বদলে ফেলতে পারব।’

ভিকির ওয়েবসাইট হিউম্যানস অব বোম্বো ডট ইন থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে তিনি এমআইটি মিডিয়া ফেলোশিপ পেয়েছেন। ২০১৬ সালে ফোর্বস এশিয়া ৩০ আন্ডার ৩০ তালিকায় নাম ঢুকে পড়ে তার।

বুধবার (১৪ আগস্ট) সকালে ফেসবুকে নিজের জীবনের কথা পোস্ট করেন ভিকি। এখন অব্দি তাতে লাইক পড়ে ৩৩ হাজারেরও বেশি। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষ শেয়ার করেছে তার এই পোস্ট। ভিকি সম্পর্কে এক ব্যক্তি লিখেছেন, এ জন্যই বলা হয় বৃষ্টি শেষে সবসময় রোদ্দুর ওঠে।

ওডি/এনএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড