ফিচার ডেস্ক
এই বাবা দিবসটা কেনো জানি মনের মধ্যে খুব পীড়া দেয়। এতিম এতিম লাগে নিজেকে।
বাবাকে দেখি না গত দুবছর! ঘুমের মধ্যে হঠাৎ করেই বাবার মৃত্যু। শেষকথা কিছুই বলে যেতে পারেননি। এখনো মনে হয় আমার ফোনের স্ক্রিনে আরেকবার যদি "আব্বাজান" লেখা কন্টাক্ট নাম্বারটা ভেসে উঠতো! তাহলে এইবার বাবাকে বলতাম তাঁকে আমি অনেক ভালোবাসি।
ছোটবেলার কথা ঠিক যতদূর মনে পড়ে একটা সময় প্রতিদিন বাবার হাত ধরে স্কুলে যেতাম। অনেক বড় বড় করে পা দিতে হতো আমার। বাবার হাঁটার গতির সাথে তাল মিলাতে পারতাম না। একসময় আমি পিছনে আর বাবা আমার সামনে চলে যেতো। তারপর আবার বাবা আমার জন্য দাঁড়িয়ে পিছনে তাকিয়ে থাকতো আর আমি আবার দৌঁড়ে গিয়ে তাঁর আঙ্গুল ধরে হাঁটা শুরু করতাম।
সময়ের সাথে হঠাৎ বড় হতে থাকলাম আর বাবাও জীবিকার তাগিদে ব্যস্ত সময় কাটাতেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবাদের গল্পগুলো মনে হয় ঘুরে ফিরে একই রকম হয়। জীবিকার তাগিদে সন্তানের সাথে বেশী সময় কাটানো কখনোই তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না।
কিন্তু তাঁরা সর্বদাই সন্তানের সাথেই থাকেন। সব সময় এগিয়ে যাবার পথ দেখান। এখন চাইলেও আর বাবাকে বাবা বলে ডাকতে পারি না।
মানুষকে বলতে শুনেছি আজ মরলে কাল দুইদিন। কেউ কারো কথা মনে রাখে না। কথাটার সত্যতা আমি খুঁজে পাইনি। আজ অব্দি এমন কোনো রাত নেই যে বাবার কথা মনে করে না কেঁদে ঘুমিয়েছি। জীবনে চলার পথে বাবাদের যে কতো ভূমিকা তা মেয়ে হয়ে হারে হারে টের পাচ্ছি।
বাবারা চিরদিন হয়তো থাকেন না একথা সত্যি কিন্তু একটা সময় পর্যন্ত সন্তানদের মাথার ওপর ছায়া হয়ে থাকাটা খুব জরুরি। বাবার সাথে অনেক গল্পই বাকি ছিলো আমার। ভেবেছি চাকরী থেকে অবসর নিলে সব চুকে নেবো। হাজারটা গল্প করবো, আব্বুকে নিয়ে এখানে সেখানে ঘুরতে যাবো। তা আর সম্ভব হয়নি।
আল্লাহ কিছু মানুষের জীবনে কিছু অপ্রাপ্তির গল্প রেখে দেয়। আমিও তাদের দলের একজন। সবাইকে বাবা দিবসের শুভেচ্ছা।
পৃথিবীর সব বাবারা বেঁচে থাকুক, সন্তানের সাথে থাকুক, তাদের দোয়ায় থাকুক।
লেখক : তামান্না তমা।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড