ভিন্ন খবর ডেস্ক
এক বন্ধুর কাছ থেকে অ্যারিজোনার টাকসনে একটি বাড়ি কিনেছিলেন জন সিমসের। কেনার পর থেকেই শুনে আসছিলেন এক গুঞ্জন। এই বাড়ির বাগানে নাকি কিছু একটা আছে! কিন্তু সেটা কী? এই উত্তর সবার অজানা। অবশেষে জন নিজেই সিদ্ধান্ত নেন তিনিই খুঁজে দেখবেন এই রহস্য।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরদিন থেকে শুরু করেন বাগান খোঁড়ার কাজ। কিন্তু কিছুই পাওয়া যাচ্ছিল না। হতাশ হয়ে জন একরকম আশা ছেড়েই দেন। মাটি খোঁড়া থেকে কিছুটা সময় বিরতি নিয়ে পৌরসভায় বাড়ির রেকর্ড খতিয়ে দেখতে যান রহস্য উদ্ধারে মরিয়া জন। সেখানেই খুঁজে পান ওই বাড়ির নকশা, সেসঙ্গে অভিযানেও আসে নতুন মোড়।
বাড়ির নকশাতে এমন কিছু ঘর দেখা যায় যার অবস্থান জনের বাগানে। রেকর্ড অনুযায়ী ‘উইটেকার পুলস’ নামে এক সংস্থা ১৯৬১ সালে এখানে কাজ করার জন্য অনুমতি নিয়েছিল। কিন্তু জনের বাড়িতে কোনো সুইমিং পুলই নেই! পুরোনো রেকর্ডগুলো দেখার পর জনের মনে সন্দেহ আর উৎসাহ দুটোই বেড়ে গেল।
রহস্য সমাধানে জন একদল বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করেন। তারা মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে সারা বাগান খোঁজা শুরু করলেও প্রথমে মেলেনি কিছুই। এরপর হঠাৎ একদিন মেটাল ডিটেক্টরে আওয়াজ পাওয়া যায়। তবে এক জায়গায় নয়, দুই জায়গায়।
উত্তেজনা ও আনন্দে আত্মহারা জন এবং তার সাহায্যকারীরা দ্বিগুণ উৎসাহে খোঁড়া শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ধাতব কিছুর উপস্থিতি টের পান। প্রায় তিন ফুট খুঁড়ে তাঁরা একটি বড় ঢাকনা দেখতে পান। জন এক প্রকার হতাশই হন। তিনি ভেবেছিলেন, এটি হয়ত কোনো সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢাকনা। কিন্তু খোঁড়া না থামিয়ে কাজ চালিয়ে যান তারা।
আরও কিছুটা খোঁড়া শেষে দেখা গেলো, এটা কোনো সেপটিক ট্যাঙ্ক নয় বরং একটি গুপ্ত রাস্তা! ঢাকনার নীচেই রয়েছে সুড়ঙ্গ, যার শেষটা কোথায় কেউ জানে না। দমকলকর্মী জন সুড়ঙ্গের ভিতরে কী আছে তা জানার জন্য ব্যাকুল ছিলেন। কিন্তু ভেতরে বিষাক্ত গ্যাস থাকার সম্ভাবনা ছিল। তাই ঢাকনা খুলে একদিন অপেক্ষা করলেন।
পরের দিন গিয়ে সুড়ঙ্গে খোঁজ পান একটি স্পাইরাল সিঁড়ির। কিন্তু সিড়ির হাল দেখে কেউ নিচে নামার সাহস দেখাননি। তাই নামার আগে প্রথমে সিঁড়ি সারানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিছুটা সারানোর পর জন ও তার বন্ধুরা একটি বড়ো পাইপ সুড়ঙ্গের মধ্যে নামান, যা বাতাস চলাচলে সাহায্য করবে। তবে স্পাইরাল সিঁড়িটি পুরোটা সারানো সম্ভব না হওয়ায় তারা মইয়ের সাহায্যে নিচে নামেন।
সুড়ঙ্গে নেমেই অবাক বনে যান সবাই। কোনো সুড়ঙ্গ নয়, বরং একটি বিশাল ঘর এটি। তবে কী এই ঘরের রহস্যের কথা বলেছিলেন সবাই? কিন্তু কেন তৈরি করা হয়েছিল এ ঘর? এখানে ছিলই বা কী? এত বড় ঘর অথচ সেখানে কোনো আসবাবপত্রের উপস্থিতি নেই। আস্তে আস্তে তারা বুঝতে পারেন, এই ঘরটি অন্য কিছু নয়, একটি বাঙ্কার। ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলাকালীন এই বাঙ্কারটি তৈরি করা হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
এরপর জানা যায়, কেবল উইটেকার পুল নয়, লস অ্যাঞ্জেলসের ক্যারোলিনা পুলস নামক এক সংস্থা ১৯৬১ সালের মধ্যে প্রায় ৫০০টি নিউক্লিয়ার শেল্টার বানায়। এটি তারই একটি।
রহস্যময় এই বাঙ্কারকে মিউজিয়ামে পরিবর্তিত করার কথা ভাবেন জন। সেই মতো তিনি একটি ওয়েবসাইট খোলেন যেখানে সাধারণ মানুষের অনুদানে তিনি বাকি সংস্কারের কাজে নামেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময়ে ব্যবহৃত নানা সরঞ্জাম যেমন হ্যাম রেডিও, গেগার কাউন্টার, পানির ব্যারেল দিয়ে তিনি সাজিয়ে যাচ্ছেন এই বাঙ্কার।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড