• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অভিন্ন পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ হবে

  ক্যাম্পাস ডেস্ক

১৯ আগস্ট ২০১৯, ২১:১৬
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি : সংগৃহীত

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিন্ন পদ্ধতিতে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালা কার্যকর হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে। তাতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা হিসেবে উচ্চতর ডিগ্রিতে সিজিপিএ-৩ দশমিক ৫ পয়েন্ট লাগবে। নিয়োগের জন্য লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে নীতিমালাটি কার্যকর করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, অভিন্ন শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা চূড়ান্তকরণে গত ৪ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সভা হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষামন্ত্রীর স্বামী অসুস্থ থাকায় ওই সভা স্থগিত করা হয়। মন্ত্রী দেশে ফিরলে আবারও এ সংক্রান্ত সভা ডাকা হবে। শিক্ষামন্ত্রীর অনুমোদনের পর ইউজিসি থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালাটি কার্যকর করা হবে।

অভিন্ন নীতিমালার খসড়ায় বলা হয়েছে যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য অনার্স ও মাস্টার্স উভয় স্তরে আলাদাভাবে সিজিপিএ- ৩ দশমিক ৫ পয়েন্ট থাকতে হবে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে। যেসব প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন তাদের মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হবে। মৌখিক পরীক্ষার সঙ্গে প্রার্থীর পাঠদানের স্কিল যাচাইয়ে একটি ক্লাসে লেকচার দিতে বলা হবে।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা অনুযায়ী প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, যোগ্যতার ক্ষেত্রে লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই বলে কর্তৃপক্ষের পছন্দের ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এ সকল নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। এ সকল সমালোচনা ও সমস্যা নির্মূলেই এই নীতিমালা।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বর্তমানে থিসিসসহ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেতে ন্যূনতম দশ বছর সহ ২২ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এমফিল প্রার্থীর ক্ষেত্রে সাত বছর সহ ১৭ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় থাকতে হবে। পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্তদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতাসহ ন্যূনতম ১২ বছর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

সহকারী থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতিতে একজন শিক্ষককে কমপক্ষে সাত বছর ক্লাসরুম শিক্ষকতাসহ ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। থিসিসসহ এমফিল প্রার্থীর ক্ষেত্রে ন্যূনতম ছয় বছরসহ ৯ বছর সক্রিয় শিক্ষকতায় থাকতে হবে। পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম চার বছরসহ ৭ বছর শিক্ষকতা করতে হবে।

সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেতে একজন শিক্ষককে ন্যূনতম তিন বছরের সক্রিয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। থিসিসসহ এমফিল ডিগ্রিধারীদের জন্য দুই বছর এবং পিএইচডি ডিগ্রি থাকলে এক বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। একইসঙ্গে স্বীকৃত কোনো জার্নালে অন্তত চারটি প্রকাশনা থাকতে হবে।

এছাড়া বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, কলা, মানবিক, বিজনেস স্টাডিজ, চারুকলা ও আইন অনুষদ ভুক্ত বিষয়গুলোর জন্য প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক, সহকারী থেকে সহযোগী এবং সহযোগী থেকে অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য একটি অভিন্ন শর্তাবলী যোগ করা হয়েছে নীতিমালায়। একইভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিষয়, মেডিসিন ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা শর্ত যুক্ত হয়েছে।

গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-২-তে উন্নীত হতে হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে অধ্যাপক পদে অন্তত চার বছর চাকরি এবং স্বীকৃত কোনো জার্নালে বিষয় ভিত্তিক দুটি নতুন আর্টিকেল প্রকাশের শর্ত যোগ করা হয়েছে। একইভাবে দ্বিতীয় গ্রেড প্রাপ্ত অধ্যাপকদের মোট চাকরি কাল অন্তত ২০ বছর এবং দ্বিতীয় গ্রেডের সর্বশেষ সীমায় পৌঁছানোর দুই বছর পর জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রথম গ্রেড দেয়ার শর্ত দেয়া হয়েছে। তবে এ সংখ্যা মোট অধ্যাপকের ১৫ শতাংশের বেশি হবে না।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেতে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষককে ১৫ থেকে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে হয়। আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র ১১ বছরেই অধ্যাপক হওয়ার সুযোগ থাকে। কোথাও প্রভাষক পদে যোগ দিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে প্রথম শ্রেণি বাধ্যতামূলক। আবার কোথাও যেকোনো একটিতে প্রথম শ্রেণি থাকলেই হয়। অভিন্ন নীতিমালা হলে এ সকল সুযোগ বন্ধ হবে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষার যথাযথ মান বজায় রাখতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একই মানে উন্নীতকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিন্ন নীতিমালা কার্যকর হলে শিক্ষার মান উন্নত হবে। শিক্ষকদের মধ্যে পদোন্নতি বৈষম্যও দূর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেতেই নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিরা বঞ্চিত হচ্ছেন, উপাচার্য কিংবা উপ-উপাচার্যের পছন্দের ব্যক্তিরা শিক্ষক পদে নিয়োগ পাচ্ছেন। যোগ্যতার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোন দিকনির্দেশনা না থাকায় এ নিয়ে এক ধরনের বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ সকল বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে একটি অভিন্ন শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা কার্যকর হচ্ছে।’

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড