• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

৬ কর্মকর্তার পদোন্নতি, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে দুদকের হানা

  রাজশাহী প্রতিনিধি

০৬ মার্চ ২০২০, ১০:৫০
রাবি
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড ( ছবি : সংগৃহীত)

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে ঘুষ গ্রহণ করে অনিয়মের মাধ্যমে ৬ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। বোর্ড সভা ছাড়াই ৬ কর্মকর্তাকে ৭ম গ্রেড থেকে সরাসরি ৫ম গ্রেডে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি এনফোর্সমেন্ট শিক্ষা বোর্ডে অভিযান চালায়ে এই অনিয়মের প্রমাণ পায়। তবে বোর্ড চেয়ারম্যানের দাবি সংশ্লিষ্ট ৬ কর্মকর্তার পদোন্নতিতে কোনো অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়নি।

পদোন্নতি পাওয়া ছয় কর্মকর্তা হলেন- উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (জেএসসি) ফরিদ হাসান, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (স্ক্রিপ্ট) রুবী, উপসচিব (ভাণ্ডার) দুরুল হোদা, উপসচিব (প্রটোকল) খোরশেদ আলম, উপবিদ্যালয় পরিদর্শক (রেজিস্ট্রার) মো. নুরুজ্জামান ও লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন ডকুমেন্টেশন অফিসার সুলতানা শামীমা আক্তার।

শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মকবুল হোসেনের মদদে তাদের প্রত্যেককে সপ্তম গ্রেড থেকে পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ষষ্ঠ গ্রেড টপকে সরাসরি তাদের পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়। বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত না হলেও এ বছরের ১৫ জানুয়ারি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মকবুল হোসেন এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের পদোন্নতির আদেশ জারি করেন।

এরপর ২৬ জানুয়ারি সই করার জন্য বোর্ডের সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে বেতনশিট উপস্থাপন করা হলে পদোন্নতির বিষয়টি জানাজানি হয়। বিধিসম্মতভাবে পদোন্নতি না হওয়ার অভিযোগ তুলে সচিব বেতনশিটে সই করা থেকে বিরত থাকেন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বোর্ডের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৫ ফেব্রুয়ারি চেয়ারম্যান ড. মকবুল হোসেন নিজের ক্ষমতাবলে বেতন প্রদান করেন। এ দিকে অনিয়মের মধ্যে এই পদোন্নতির বিষয়ে দুদকের হটলাইন ১০৬ নম্বরে একটি অভিযোগ হয়। পরে বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) শিক্ষাবোর্ডে অভিযান চালায় দুদক।

দুদকের অভিযানকালে চেয়ারম্যান ড. মকবুল হোসেন বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন।

দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেন জানিয়েছেন, তাকে না জানিয়েই ছয় কর্মকর্তার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। পদোন্নতি দেওয়া পদে বেতন-ভাতার ফাইল তার কাছে উপস্থাপন করা হলে তিনি পদোন্নতির বিষয়টি জানতে পারেন।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তারা অভিযোগ পান যে বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মকবুল হোসেন কোনো প্রকার বোর্ড সভা না করেই ৬ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেন। এর বিনিময়ে চেয়ারম্যান প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা করে ঘুষ গ্রহণ করেন বলেও অভিযোগ পান। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতেই শিক্ষাবোর্ডে এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালানো হয়।

দুদক জানিয়েছে, সরেজমিনে পরিদর্শন ও রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে পদোন্নতিতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। বিদ্যমান জনবল কাঠামোতে কোনো শূন্য পদ না থাকলেও মনগড়া পদ সৃষ্টি করে ছয় কর্মকর্তাকে ষষ্ঠ গ্রেড পাস করে সপ্তম গ্রেড থেকে সরাসরি পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। এরপর সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ হবে।

অনিয়মের বিষয়ে কানাডায় অবস্থানরত শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান ড. মকবুল হোসেনের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দুদক তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। অভিযানের বিষয়েও কিছু জানেন না।

আরও পড়ুন : বেরোবিতে কারাতে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন

পদোন্নতির বিষয়ে তিনি বলেন, ১৯৬১ সালের অধ্যাদেশে বোর্ড চেয়ারম্যানের যে ক্ষমতা রয়েছে তা দিয়ে এই পদোন্নতি তিনি দিতেই পারেন। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি। তিনি শতভাগ সততার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।

ওডি/এমআরকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড