• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গুরুত্ব দেননি শিক্ষক, রাকিবার এক বছর উধাও

  শিক্ষা ডেস্ক

১৫ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:৩১
আবুল কালাম আজাদ
জেবুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ (ছবি : সংগৃহীত)

ঝালকাঠি সদর উপজেলার জেবুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল রাকিবা আক্তার। পরীক্ষার ফল আসলে তাকে ইংরেজি বিষয়ে ফেল দেখানো হয়। তবে ফল পুনঃনিরীক্ষণে ওই বিষয়ে উত্তীর্ণ হয় সে।

পরীক্ষায় পাস করলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের অবহেলায় শিক্ষা জীবনে এক বছর পিছিয়ে গেল রাকিবা। ফল সংশোধনের পর তার পরীক্ষার নম্বর তালিকা বিদ্যালয়ে আসলেও বিষয়টি গুরুত্ব দেননি প্রধান শিক্ষক। উপরন্তু ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষা দিতে নির্বাচনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তার বাবা সৈয়দ জাকির হোসেনকে ফোন করেন। ১৫০ টাকা ফি দিয়ে ইংরেজি বিষয়ে নির্বাচনি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ায় ফরম ফিলাপের জন্য ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।

দরিদ্র বাবা ২ হাজার টাকা দিতে অসামর্থ্য হওয়ায় প্রধান শিক্ষককে দেড় হাজার টাকা দেয়। এতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। হতাশ হয়ে বাজারে এসে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর দপ্তরি দেলোয়ারের সঙ্গে দেখা হয় তার।

এ সময় সে ঘটনা শুনে জাকির হোসেনকে মেয়ের ফরম ফিলাপ না করে সেই টাকায় স্কুলে মিষ্টি নিয়ে যেতে বলেন। দেলোয়ার তাকে বলেন, ‘আপনার মেয়ে তো পাস করেছে ফরম ফিলাপ করতে হবে না।’ এ ঘটনায় জাকির হোসেন আফসোস করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের গাফিলতিতে আমার মেয়ের শিক্ষাজীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গেল। সহপাঠীদের থেকে এক ব্যাচ পিছিয়ে গেল। এ বিষয়ে রাকিবা আক্তার বলেন, ‘স্যারের (প্রধান শিক্ষকের) গাফিলতিতে আমার জীবন থেকে একটি বছর নষ্ট হয়ে গেল। এখন কোথাও এইচএসসিতে ভর্তি হবার সুযোগ নেই। সারাজীবনের তরে সহপাঠীদের কাছ থেকে পিছিয়ে গেলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্যার এখন ভুল স্বীকার করলেও তিনি তো আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া একটি বছর ফেরত দিতে পারবেন না।’ বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন সে। প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘পুনঃনিরীক্ষণ স্কুলের মাধ্যমে করলে আমার মোবাইলে ম্যাসেজ আসতো। নিজেরা পুনঃনিরীক্ষণের কাজটি করায় ম্যাসেজ তাদের মোবাইলে যায়। কিন্তু আমাকে তারা (রাকিবার অভিভাবক) কিছুই জানায়নি। বোর্ড থেকে যখন মার্কশিট আসে তখন সবগুলো যাচাই করা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ফরমফিলাপের সময় অকৃতকার্যের তালিকা করার পর রাকিবার নাম না আসায় কাগজ যাচাই করায় বিষয়টি প্রকাশ পায়। তারা (রাকিবার অভিভাবক) চাইলে এখন বিনয়কাঠি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি করা সম্ভব হবে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও নবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক আকন্দ জানান, অনেক কাজের মধ্যে ২/১টি ভুল হতে পারে। এ ভুলটি প্রধান শিক্ষকের অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে। রাকিবার অভিভাবকরা চাইলে তাকে এইচএসসিতে ভর্তি করার সুযোগ এখনো আছে। আমরা ভর্তিতে সহযোগিতা করতে পারি।

ওডি/জেআই

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড