ধর্ম ডেস্ক
(৫) নিজের বন্ধ্যা স্ত্রীর কথা জানিয়ে কাতর কন্ঠে ফরিয়াদ করেছেন যাকারিয়া আঃ। তার মৃত্যুর পর দাওয়াতি কাজের উত্তারাধিকারী হওয়ার মত কেউ নেই,
وَ اِنِّیۡ خِفۡتُ الۡمَوَالِیَ مِنۡ وَّرَآءِیۡ وَ کَانَتِ امۡرَاَتِیۡ عَاقِرًا فَہَبۡ لِیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ وَلِیًّا
‘আর আমার পরে স্বগোত্রীয়দের সম্পর্কে আমি আশংকাবোধ করছি। আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা, অতএব আপনি আমাকে আপনার পক্ষ থেকে একজন উত্তরাধিকারী দান করুন’। (মারইয়াম ১৯/৫)
(৬) আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কঠিন পরিক্ষার সম্মুখীন হলেন আইয়ুব (আ:)। অবিস্বাস্য সবর ধরলেন তিনি। আল্লাহ তাআলা আউয়ুবের (আ:) সবরে খুশি হলেন। আগের মত সব ফিরিয়ে দিলেন। বললেন,
وَ وَہَبۡنَا لَہٗۤ اَہۡلَہٗ وَ مِثۡلَہُمۡ مَّعَہُمۡ رَحۡمَۃً مِّنَّا وَ ذِکۡرٰی لِاُولِی الۡاَلۡبَابِ
আর আমার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ ও বুদ্ধিমানদের জন্য উপদেশস্বরূপ আমি তাকে দান করলাম তার পরিবার-পরিজন ও তাদের সাথে তাদের অনুরূপ অনেককে। (স্বাদ ৩৮/৪৩)
(৭) দাউদ (আ:) কে আল্লাহ তাআলা সন্তান দান করলেন। রব্বুল আলামীন বলেছেন,
وَ وَہَبۡنَا لِدَاوٗدَ سُلَیۡمٰنَ ؕ نِعۡمَ الۡعَبۡدُ ؕ اِنَّہٗۤ اَوَّابٌ
আর আমি দাঊদকে দান করলাম সুলাইমান। সে কতই না উত্তম বান্দা! নিঃসন্দেহে সে ছিল অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী। (সোয়াদ ৩৮/৩০)
আগের পর্ব পড়তে- সাহায্য প্রার্থনায় যেসব শিরক করে মুসলিমরা (পর্ব- ১)
(৮) স্বামী নেই। তবুও কিভাবে গর্ভবতী হলেন? মরিয়াম এমন অদ্ভুত ঘটনায় ভীষণ অবাক! সীমাহীন অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন। ইহুদিদের অপবাদের জ্বালা সইবেন কী করে? সবার অগোচরে দূরের এক স্হানে চলে এলেন। এমন দিশেহারা অবস্হায় জিবরাঈল এসে বললেন,
قَالَ اِنَّمَاۤ اَنَا رَسُوۡلُ رَبِّکِ ٭ۖ لِاَہَبَ لَکِ غُلٰمًا زَکِیًّا
সে বলল, ‘আমি তো কেবল তোমার রবের বার্তাবাহক, তোমাকে একজন পবিত্র পুত্রসন্তান দান করার জন্য এসেছি’। (মারইয়াম ১৯/১৯)
(৯) আল্লাহ তা'আলা কিছু বান্দার প্রশংসা করেছেন। সর্বশেষ প্রশংসা করেছেন। যারা বলে,
وَ الَّذِیۡنَ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَا ہَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّ اجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا
আর যারা বলে, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন’। (ফুরকন ২৫/৭৪)
উল্লেখ্য যে, এমন বিসয় সাহায্য চাওয়া, যেসকল বিষয়ে মানুষের ক্ষমতা রয়েছে এরুপ সাহায্য চাওয়া ইসলামে বৈধ রয়েছে। তবে শর্ত হচ্ছে সেটা অবশ্যই গুনাহের কাজ তেকে মুক্ত হতে হবে। যদি এমন হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রে সাহায্যপ্রার্থনাকারী ব্যাক্তিকে সাহায্য করা আবশ্যক।
(১০) শরীয়তের পরিভাষায়, হেবা বলা হয়, বিনিময়হীন দানকে। কোনো ধরনের বিনিময় ছাড়া কাউকে কোনো কিছু মালিক বানিয়ে দেয়া। আল্লাহ তা'আলা চাইলে আমাদেরকে সন্তান দান করতে পারেন এবং সেটা কোনোরকম বিনিময় ছাড়াই। আমরা দু'জনে কুরআন কারীমের উক্ত আয়াতগুলর অর্থ ও ভাব মাথায় রেখে, নবীগণের কষ্ট ও প্রাপ্তির বিষয়টা স্নরণে রেখে গভীর মনোযোগের সাথে দু'আ করে গেলে, আল্লাহ তা'আলা নিশ্চয়ই শুনবেন! আমরা আল্লাহর দরবারে রিযিক হেবা চাইব! সন্তানের রিযিক।
স্ত্রীর কথামত আমরা দু' জনেই নিয়মিত কুরআন কারীমের আয়াতগুলো আলেচনা করতে শুরু করলাম। নবীগণের আদর্শ সামনে রেখে দু'আয় মশগুল হয়ে গেলাম। আলহামদু লিল্লহ!একমাসের মাথায় রাব্বে কারীম আমাদের ডাকে সাড়া দিলেন। আমার আহলিয়া মেয়ের নাম পছন্দ করেছে মারয়াম ফারিস। আমার নাম ফারিস তাই। ফারিস মরক্কো
لِلّٰہِ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ یَخۡلُقُ مَا یَشَآءُ ؕیَہَبُ لِمَنۡ یَّشَآءُ اِنَاثًا وَّ یَہَبُ لِمَنۡ یَّشَآءُ الذُّکُوۡرَ
আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। (শুরা৪২/৪৯)
ۘ وَ تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡبِرِّ وَ التَّقۡوٰی ۪ وَ لَا تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡاِثۡمِ وَ الۡعُدۡوَانِ ۪ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ
সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ আযাব প্রদানে কঠোর। (মায়িদা ৫/২)
মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সর্বপ্রকার শিরিক থেকে হিফাজত করুন, আমিন।
লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুসলিম উম্মাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড