ধর্ম ডেস্ক
সাহায্য প্রার্থনা করা একটি ইবাদত । মহান আল্লাহ বলেন :
اِیَّاکَ نَعۡبُدُ وَ اِیَّاکَ نَسۡتَعِیۡن
আপনারই আমরা ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট আমরা সাহায্য চাই। (১/৫)
অত্র আয়াত দ্বারা প্রমানিত হয় ঐসকল বিষয়ে যা কোন মাখলুক তথা সৃষ্টি করতে সক্ষম নয় সে সকল ক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড়া কাহারও নিকট সাহায্য চাওয়া শিরক। যেমন- কোন পির ফকির মাজার, দরগা দূর্গা কারও বন্ধাত্ব্য দূর করে ছেলে মেয়ে দিতে পারে বলে তার নিকট দোয়া করা।
অনেকেই বলেন, ওমুক হুজুর আমাকে বাচ্চা দিয়েছে। পাগলের মাজারে গিয়ে সন্তান হারানো মা-বাবা কাঁদছে। এসব আবার আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গিয়েছে। সিনেমায় দেখা যায় জীবনে সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মাজারে গিয়ে মাথা ঠেকাচ্ছে আর দোয়া কামনা করছে। এসব সংস্কৃতি হলো শিরকি সংস্কৃতি।
পক্ষান্তরে দ্বীনি সংস্কৃতি হলো যেমন, একজন দ্বীনি ব্যক্তির ঘটনা পড়লাম। সে তার বৃত্তান্ত লিখেছে এভাবে : ‘কিছুদিন আগে চাকরি নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ালাম। সন্তান হচ্ছে না বলে দু'জনেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হলাম। দোয়া তদ্বির করলাম। আমার স্ত্রী একদিন বলল- আপনি কি একটা ব্যপার লক্ষ করেছন? জানতে চাইলাম কোন ব্যাপার? সে উত্তরে বলল, ‘সন্তান আল্লাহর দেওয়া এক প্রকার রিযিক! অন্যতম শ্রেষ্ঠ রিযিক। কুরআন কারীমে যেখানেই এই সন্তানের রিযিকের কথা এসেছে, সেখানে হেবা শব্দটা ব্যবহৃত হয়েছে।’
( ১) ইবরহীম (আ:) আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করলেন,
رَبِّ ہَبۡ لِیۡ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ
‘হে আমার রব, আমাকে সৎকর্মশীল সন্তান দান করুন (সফফাত ৩৭/১০০)
আল্লাহ তাআলা জবাবে বলেছে :
فَبَشَّرۡنٰہُ بِغُلٰمٍ حَلِیۡمٍ
অতঃপর তাকে আমি পরম ধৈর্যশীল একজন পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিলাম। সফফাত(৩৭/১০১)
(২) পিতার সাথে মতের অমিল হলো।ইবরাহীম (আ:) বাড়ি ঘর ছেড়ে সরে পড়লেন। মহান আল্লাহ বলেছেন-
فَلَمَّا اعۡتَزَلَہُمۡ وَ مَا یَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ۙ وَہَبۡنَا لَہٗۤ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ ؕ وَ کُلًّا جَعَلۡنَا نَبِیًّا
অতঃপর যখন সে তাদেরকে এবং আল্লাহ ছাড়া যাদের তারা ইবাদাত করত তাদের সবাইকে পরিত্যাগ করল, তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়া‘কূব এবং তাদের প্রত্যেককে নবী করলাম। (মারইয়াম১৯/৪৯)
(৩) বৃদ্ধ বয়সে (৮৬ বছর) আল্লাহর কাছে সন্তান প্রার্থনা করে পেয়েছেন মুসলিম উম্মাহর পিতা ইবরাহীম (আ:)। মনটা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় নুয়ে থাকে সব সময়। মুখ দিয়ে বের হয়ে গেছে,
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ الَّذِیۡ وَہَبَ لِیۡ عَلَی الۡکِبَرِ اِسۡمٰعِیۡلَ وَ اِسۡحٰقَ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ لَسَمِیۡعُ الدُّعَآءِ
‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি বৃদ্ধ বয়সে আমাকে ঈসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন। নিশ্চয় আমার রব দো‘আ শ্রবণকারী’। (ইবরহীম ১৪/৩৯)
(৪) যাকারিয়া (আ:) এর সন্তান হচ্ছিলো না। বৃদ্ধ হয়ে গেছেন।আল্লাহ তাআলার কাছে অনবরত দোয়া করে যাচ্ছেন ইয়া রব!
ہُنَالِکَ دَعَا زَکَرِیَّا رَبَّہٗ ۚ قَالَ رَبِّ ہَبۡ لِیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ ذُرِّیَّۃً طَیِّبَۃً ۚ اِنَّکَ سَمِیۡعُ الدُّعَآءِ
সেখানে যাকারিয়া তার রবের কাছে প্রার্থনা করেছিল। সে বলল, ‘হে আমার রব, আমাকে আপনার পক্ষ থেকে উত্তম সন্তান দান করুন। নিশ্চয় আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী’। (ইমরান ৩/৩৮)
(৫) নিজের বন্ধ্যা স্ত্রীর কথা জানিয়ে কাতর কন্ঠে ফরিয়াদ করেছেন যাকারিয়া (আ:)। তার মৃত্যুর পর দাওয়াতি কাজের উত্তারাধিকারী হওয়ার মত কেউ নেই-
وَ اِنِّیۡ خِفۡتُ الۡمَوَالِیَ مِنۡ وَّرَآءِیۡ وَ کَانَتِ امۡرَاَتِیۡ عَاقِرًا فَہَبۡ لِیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ وَلِیًّا
‘আর আমার পরে স্বগোত্রীয়দের সম্পর্কে আমি আশংকাবোধ করছি। আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা, অতএব আপনি আমাকে আপনার পক্ষ থেকে একজন উত্তরাধিকারী দান করুন’। (মারইয়াম ১৯/৫)
চলবে...
লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুসলিম উম্মাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড