অধিকার ডেস্ক
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। এক সময় বিভিন্ন ধরনের জন্তু মানুষের ওপর আক্রমণ করতো। লোকালয়ে এসে মানুষ খেয়ে চলে যেত। কালের বিবর্তনে এখন সেই চিত্র বদলে গেছে। হিংস্র প্রাণীর সংখ্যা সারা পৃথিবীতেই কমে গেছে। তবে বাড়ছে মানুষের হিংস্রতা। পৃথিবীতে কোনো জন্তুই এভাবে নিজেদের প্রজাতির মধ্যে ধ্বংসলীলা চালায় না, যেভাবে মানুষ মানুষকে নির্যাতন করে।
পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষ একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। কিন্তু মানুষে মানুষে লড়াইয়ের দামামা দিনদিন বাড়ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাদ দিলে মানুষ মনে হয় মানুষের হাতেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাপানের হিরোশিমা, নাগাসাকিতে যে বোমা হামলা করা হয়েছিলো তা মানুষকে মারার জন্যই। তার ক্ষতিকর প্রভাব আজও বিদ্যমান। ক্ষমতা বা ভোগদখল নিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে বহু যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে। যুদ্ধগুলোতে শুধু মানুষকেই মারা হয়েছে। অল্প সময়ের এই দুনিয়ায় কিছুদিন ভালো থাকার জন্য একজন মানুষ আরেকজনকে মেরে ফেলছে। কাউকে গুলি করে মারছে, কেউ মারছে শ্বাসরোধ করে, কেউ বা গায়ে আগুন ধরিয়ে। পৃথিবীর কোথাও, কোনো দেশ বা কোনো জাতির মানুষ বলতে পারবে না যে তারা শান্তিতে আছে।
একজনের প্রতি অন্যজনের হিংসা বিদ্বেষ থেকে ক্ষমা পায়না নিজের আত্মীয় স্বজনরাও। নিজের মা সন্তানকে খুন করে ফেলছে বা স্বামী তার স্ত্রীকে খুন করে ফেলছে এমন ঘটনা কম নয়। অনেকেই আবার ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষকে শুধু বন্ধু মনে করে। তবে নিজ ধর্মের মানুষের মাঝেও এই ঘটনা ঘটে। এখন আসলে কেউ কাউকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতায় নেই। মানুষের যে ন্যুনতম মানবিকতা বা মূল্যবোধ থাকার কথা তা বর্তমান সময়ে নেই।
হয়তো এসব সৃষ্টির শেষ সময়ে চলে আসার লক্ষণ হতে পারে, তবে আমাদের আসলেই হলোটা কী? এতোটা উগ্র মানসিকতা পোষণ করা আসলেই সন্দেহজনক। এক সময় বন্যা হলে সারা দেশের মানুষের মধ্যে একটা হাহাকার লেগে যেতো। মানুষ পাগল হয়ে যেতো বন্যার্তদের সাহায্য করার জন্য। বিভিন্ন পর্যায়ের সংগঠন বিভিন্নভাবে মাঠে নেমে যেতো কাজ করতে। এখন তেমন কিছু খুব কমই দেখা যায়। রাস্তায় মানুষ বিপদে পড়লে আরেকজন এগিয়ে আসে না। কোনো দুর্ঘটনা দেখলে আগে ছবি তুলতে মত্ত হয়ে যায়। জাতিগত নিধন বর্তমানে একটা বড় সমস্যা। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের উপর নির্যাতন এখন শাসকদের ফ্যাশন হয়ে গেছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের চেয়েও মানুষ এখন মানুষের জন্য বড় ভয়। আমাদের দেশে দেখা যায় কোনো অপরাধ সংগঠিত হলে তার জন্য আন্দোলন করে বিচার চাইতে হয়। বিচারহীনতা অপরাধ বেশি হওয়ার প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। মোমবাতি জ্বেলে মনের দোষ দূর করা সম্ভব না। জ্বালাতে হবে মনের বাতি।
লেখক : মাহবুব নাহিদ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড