• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

হরতাল-অবরোধকে বর্জন করেছে দেশবাসী

  মো. খসরু চৌধুরী সিআইপি

০৪ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৫০
খসরু

দেশে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিএনপি-জামায়াত ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী হরতালের ডাক দেয়। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়াসহ মানুষ পুড়িয়ে মারতে দ্বিধা করেনি। যা তাদের নিকট অতীতের অগ্নিসন্ত্রাসের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। এরপর বিএনপির ৭২ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। যাতে জনগণ কোনো সাড়া দেয়নি। দেশকে ধ্বংস করতে তারা ৫ ও ৬ নভেম্বর আবারও অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে।

বিএনপির এই অবরোধ কর্মসূচি জনজীবনে বয়ে এনেছে দুর্ভোগ ও অনিশ্চয়তা। হরতাল অবরোধ হয়ে উঠেছে অসহনীয়। যানবাহনে অগ্নিসংযোগ অবরোধ পণ্য-পরিবহনে বাধা ভয়ভীতি আতঙ্কে সমূহ বিপদে পড়েছে জাতীয় অর্থনীতি।

ব্যবসায়ী সংগঠন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর মতে, হরতালে একদিনে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। হরতাল-অবরোধের কারণে নতুন চাপে পড়েছে জাতীয় অর্থনীতি। বিদেশে তৈরি হচ্ছে দেশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি। বিএনপির হাই কমান্ডকে বুঝতে হবে, এর ফলে তারাও কোনোভাবেই লাভবান হতে পারবে না।

হরতাল-অবরোধ দিয়ে সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব নয়। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও ঢাকা চেম্বারের নেতৃবৃন্দ হরতালের বিকল্প কর্মসূচি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন রাজনৈতিক দলগুলোকে। এও বলেছেন, যেসব রাজনৈতিক দল হরতাল-অবরোধ ডাকবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে হরতাল-অবরোধবিরোধী আইন প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। সর্বোপরি জনজীবনের চরম দুর্ভোগের বিষয়টি বিএনপি নেতাদের মানবিক দৃষ্টিতে সহানুভূতির চোখে দেখতে হবে। নিকট অতীতের অগ্নিসন্ত্রাস ও বোমাবাজি থেকে তারা বিরত থাকবে, এমনটাই প্রত্যাশা।

হরতাল-অবরোধ আইন করে নিষিদ্ধ করা হোক। কারণ হরতাল-অবরোধের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে মারাত্মক ধস নামে। একের পর এক হরতাল আর অবরোধের দিনগুলোতে কারখানা চালু থাকলেও উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। উৎপাদিক পণ্য সরবরাহ করতে পারায় কারখানাগুলোর গুদামঘর ভরে ওঠে। ফলে দেশের ভেতরে উৎপাদন-বিপণনের পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানিও স্থবির হয়ে পড়ে। সরকারের রাজস্ব আদায় ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

নিরলস পরিশ্রম করে শেখ হাসিনা যখন দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন, তখন বিএনপি-জামায়াত হরতাল-অবরোধ করে দেশকে পেছনের দিকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা শেখ হাসিনাকে সরাতে নানা ষড়যন্ত্র করছে। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে হবে। সংবিধানের বাইরে কিছু হবে না।

শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্য যত প্রসারিত হবে মানুষের আর্থিক অবস্থা তত ভালো হবে। শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট ইকোনমি। তাহলে ব্যবসায়ীরা সব থেকে লাভবান হবেন।

১৪-১৫ বছর আগে অর্থাৎ সাড়ে ১৪ বছর আগে যে বাংলাদেশ ছিল এখন আর সে বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এ বদলে যাওয়া দেশকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশ গত দেড় দশকে এগিয়েছে ঈর্ষণীয়ভাবে। হাজার বছরে জাতি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যতটা এগিয়েছে মাত্র দেড় দশকের অর্জন তার চেয়েও বেশি। এ অর্জনের প্রধান কারণ জননেত্রী শেখ হাসিনার ব্যবসা-বাণিজ্যবান্ধব নীতি। এই নীতির বদৌলতে দেড় দশকে হাজার হাজার শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রতিদিনই নিজেকে অতিক্রম করছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলেই ইতোমধ্যে হতদরিদ্র অবস্থা থেকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাবান অর্থনৈতিক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান শ্যাক্স বলেছে, ২০৭৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের ১৬তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। আজ বাংলাদেশের মানুষ যে সব দেশে কাজ পাওয়াকে স্বপ্ন বলে ভাবছে সেসব দেশের অবস্থানও বাংলাদেশের পেছনে থাকবে। বাংলাদেশ গত দেড় দশকে যে ইন্দ্রজালিক অগ্রগতি লাভ করেছে তা সম্ভব হয়েছে দেশের শিল্প ক্ষেত্রে তথা ব্যবসা-বাণিজ্য দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য। যে দেশের রপ্তানি আয় ছিল স্বাধীনতার আগে মাত্র ২০০ কোটি টাকা সে দেশ আট লাখ কোটি টাকারও বেশি রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে চলতি অর্থবছরে। বাংলাদেশকে উন্নতির শিখরে উঠতে হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

লেখক: পরিচালক, বিজিএমইএ;

শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ;

চেয়ারম্যান, নিপা গ্রুপ ও কেসি ফাউন্ডেশন।

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড