• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্যানেলই দূর করতে পারে করোনায় প্রাথমিক শিক্ষার সংকট

  মো. বখতিয়ার উদ্দিন

২৯ জুন ২০২০, ১৭:৫৬
বখতিয়ার
মো. বখতিয়ার হোসেন (ফাইল ছবি)

প্রাথমিক শিক্ষা একটি দেশের সামগ্রিক অবকাঠামো গঠনের প্রধান হাতিয়ার। সুশিক্ষা একটি জাতিকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। সমাজে আলোকিত মানুষ গঠনের প্রাথমিক স্তম্ভ হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। আর এই শিক্ষার মাধ্যমে সমাজের একজন আলোকিত মানুষ তৈরি করতে একজন শিক্ষকের অবদান অনস্বীকার্য।

আলোকিত মানুষ তৈরি করার মাধ্যমেই কেবল গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন সম্ভব। শিক্ষকরাই ভবিষ্যৎ সুনাগরিক তৈরি করেন। একজন শিক্ষক তৈরি করতে পারেন একজন ভাল বিচারক, প্রশাসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কবি, ডাক্তার, প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ।

এ কারণে প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকা আবশ্যক। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় প্রচুর শিক্ষক সংকট রয়েছে, এর ফলশ্রুতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা খুব নিম্ন মানের হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট একটি ব্যাধির মত বিদ্যমান রয়েছে।

প্রাথমিকে শিক্ষক সংকটের প্রভাবে প্রথম ধাপের শিক্ষা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে এবং অকালেই ঝরে পড়ছে হাজারও শিক্ষার্থী। অন্যদিকে কুষ্টিয়া জেলার অনেক স্কুলেই ২/১ জন শিক্ষক সংকট পরিলক্ষিত হওয়া স্বত্ত্বেও স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম কোনোরকম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অধিক ছাত্রছাত্রীকে স্বল্প শিক্ষক দ্বারা পরিপূর্ণ শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ করতে শিক্ষক সংকট দূর করা অত্যন্ত জরুরি।

এ ছাড়াও এ জেলায় অনেক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করায় এখানে কিছুটা শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।

আর সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের মতে, ২০১৮ সালে ২৪ লাখ প্রার্থীর মাঝে থেকে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি ৫৫২৯৫ জন। যা মোট প্রার্থীর ২.৩ শতাংশ। ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। অবশিষ্ট ৩৭ হাজার প্রার্থী চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি। ভাইভাতে হয়তো ১/২ নাম্বারের ব্যবধানে কারও চাকরি হয়েছে, কারও হয়নি।

আবার দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিততে একটি নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করে শিক্ষক নিয়োগ করতে দুই/তিন বছর লেগে যায়, যার ফলে শিক্ষক সংকট দূর হয় না। কারণ প্রতিদিনই শিক্ষক অবসরে যায় কিন্তু প্রতিদিন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় না। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে নিয়োগ কার্যক্রম বেশ সময় সাপেক্ষ।

আমাদের এই ৩৭ হাজার ভাই-বোনের মধ্যে অধিকাংশেরই বয়স শেষ, আমরা বেকার। ৩৭ হাজার প্যানেলের মাধ্যমে নিয়োগ দিলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হবে, দেশের শিক্ষক সংকট দূর হবে, বেকারত্ব হ্রাস পাবে। পাশাপাশি করোনা পরবর্তী প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষকরা সে মেরুদণ্ডের স্রষ্টা। পিতা-মাতা কেবল সন্তানের জন্ম দিতে পারে কিন্তু সে সন্তানকে প্রকৃত মানুষ করা, সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে দায়িত্ববোধ ও সচেতন করে সামাজিক জীব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিহার্য।

আর সেই শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষক সংকট থাকলে সঠিক শিক্ষা কখনোই সম্ভব না।

লেখক : সভাপতি, প্যানেল বাস্তবায়ন কমিটি-২০১৮, কুষ্টিয়া জেলা শাখা।
চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড