মাহবুব নাহিদ
তীরে এসে তরী ডোবানো যেন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সবার মনে অজানা আশঙ্কা। শেষ হওয়ার আগে কোনো উল্লাস নেই। শেষ হয়েও যেন বিশ্বাস হচ্ছে না কারও। পুরো দেশই এখন একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে। এই ঘোর কাটতে নিশ্চয়ই অনেক দিন লাগবে।
আমাদের ছেলেরা বিশ্বজয় করেছে। বুক চিতিয়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে লাল সবুজের ওই পতাকায় কতটা আবেগ জড়িয়ে আছে। কতটা শক্তি ওই পতাকায় তা টের পেয়েছে ফাইনালের প্রতিপক্ষ ভারত।
টুর্নামেন্টের শুরুতে হয়তো কোনোভাবেই কারও ফেভারিটের তালিকায় আমাদের নাম ছিল না। হয়তো অনেকেই জানতেন না এই টুর্নামেন্টের কথা। টিভি খুলে খেলাও হয়তো দেখতে বসেননি দেশের অনেক মানুষ। দল যখন সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় তখন নড়েচড়ে বসে পুরো দেশ। আর দল যখন ফাইনালে চলে যায় তখন চিন্তার অপর প্রান্তে প্রতিপক্ষ ভারত। অনেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। টিম ইন্ডিয়ার সঙ্গে বহুবার হৃদয় ভাঙার ইতিহাস রয়েছে। একদিকে তারা যুব বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দল। তবে সব পরিসংখ্যান পেছনে ফেলে শিরোপা জয় করেছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ।
টাইগার যুবাদের অধিনায়ক আকবর আলীর দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার দুরন্ত চেষ্টা আমাদের রোমাঞ্চিত করেছে। শিরোপা জয়ে বাংলাদেশের উল্লাস দেখেছে সারা বিশ্ব। দেশের প্রতিটি প্রান্তে উল্লাসে ফেটে পড়ে দেশের মানুষ। মাঠের বাইরে দেশের কোচ ও ফিটনেস কোচের অনুপ্রেরণা নজর কেড়েছে সবার। নজর কেড়েছে খালেদ মাহমুদ সুজনের কান্নার দৃশ্যও। আসলে সবাই তো পর্দার আড়ালের দৃশ্যটা দেখে না। এই দলটি গড়ে তুলতে, এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে সকলের যে পরিশ্রম করতে হয়েছে তা অনবদ্য। সকলের পরিশ্রম ও অবদানকে ধন্যবাদ জানায় পুরো জাতি। আমাদের ক্রিকেট খেলার তো বয়স অনেক হলো। কিন্তু যুবাদের হাত ধরে যে বিশ্বজয় আমরা করলাম তা আমাদের পুরো ক্রিকেটের আবহই পরিবর্তন করে দিতে পারে। যুবাদের এই অর্জনের প্রসংশা করেছে দেশ বিদেশের সবাই। তবে খেলা শেষ হবার পর ভারতীয় খেলোয়াড়দের আচরণটা কারও কাম্য ছিল না। শুধু খেলোয়াড় নয় দর্শকরাও করেছে বিরূপ আচরণ। দর্শকদের ছোড়া বোতল পরিষ্কার করে দারুণ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে আমাদের বীরেরা। আসলে বিজয়ীদের এমনই হওয়া উচিত। তবে অপ্রীতিকর ঘটনা আসলে কাম্য নয়। এখন বড় বিষয় হলো আগামী দিনে ওরাই হাল ধরবে এ দেশের ক্রিকেটের। এই বিশ্বকাপ জয়ে ঘুরে যাবে আমাদের ক্রিকেটের প্রেক্ষাপট। তবে এখন প্রয়োজন ওদের সঠিকভাবে পরিচালনা করা। এই শক্তিটাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে বহুদূর।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড