• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বর্জ্য দেহ থেকে বের হবার পর দুর্গন্ধ ছড়ায়

  রহমান মৃধা

০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:০৮
রহমান মৃধা
সুইডেন প্রবাসী রহমান মৃধা

পার্লামেন্ট বা আইনসভা বা জাতীয় সংসদে দেশের জন্য প্রয়োজনীয় আইন তৈরি হবার কথা। সেসব আইনের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। সেসব আইনে জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে।

প্রতি বছর রাষ্ট্রের আয়-ব্যয়ের হিসাবও জাতীয় সংসদে পাস হয়। একে বলে বাজেট। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এসব কাজ সম্পাদন করেন। আর আইন প্রণয়নের কাজ করতে গিয়ে সরকারি দল ও বিরোধী দলের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়।

উভয় পক্ষই তর্ক-বিতর্ক করে জনগণের স্বার্থ সমুন্নত রাখে। একে অন্যকে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করে না। গালিগালাজ করলে বুঝতে হবে সেখানে জনগণের স্বার্থ নয়, প্রতিহিংসাই মুখ্য হয়ে উঠেছে।

জনগণের স্বার্থ যতক্ষণ সমুন্নত থাকে ততক্ষণ সেটাকে বলে গণতন্ত্র। আর যখন জনগণের স্বার্থ উপেক্ষিত হয় এবং অন্য কারও স্বার্থ রক্ষিত হয় তখন আর তাকে গণতন্ত্র বলা যায় না। গণতন্ত্র মানে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দেশের জন্য কাজ করা নিচের এই বিল্ডিংয়ে বসে।

আইনসভায় প্রণীত আইনের ভিত্তিতে শাসন বিভাগ শাসন করে। সচিবালয়ের কাজ সংসদে পাশ করা প্রস্তাব গুলোর বাস্তবায়ন করা। যেমন জাতীয় সংসদে দেশের বাজেটের ওপর যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়ভার নিচের বিল্ডিংয়ের কর্মরত কর্মচারীদের।

আইনসভায় প্রণীত আইনের ভিত্তিতে বিচার বিভাগের কাজ সুষ্ঠু বিচার করা। বিচার বিভাগের কাজ দেশের আইন কানুন সঠিকভাবে মেনে দেশ তার গতিতে চলছে কিনা সে বিষয়ের ওপর লক্ষ্য রাখা। জনগণকে শান্তিপূর্ণ এবং ন্যায়বিচার প্রদান করা। যার কারণে জনগণের অর্থে নিচের বিল্ডিংয়ে কর্মরত কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়।

সারা পৃথিবীর সংসদীয় ব্যবস্থায় মোটামুটি একই নিয়ম, ছোটখাটো কিছু পার্থক্য ছাড়া। সুইডেনও এর ব্যতিক্রম নয় এবং খাতা কলমে বাংলাদেশেও একই ব্যবস্থা। এই সহজ কাজগুলো পালন করতে যদি সত্যি সত্যিই সমস্যা হয় তাহলে দরকার আছে কি দায়িত্ব নেওয়ার? দরকার আছে কি দেশটাকে ধ্বংস করার?

জনগণ রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতারও মালিক। মালিকের কাজ সকল স্তরে যার যে কাজ করার কথা পাঁচ বছর মেয়াদে তা সঠিক ভাবে পালন করেছে কিনা তা বুঝে নেওয়া।

সব ঠিক মত করলে পুনরায় নতুন দায়িত্ব দেওয়া, তা না হলে কাজের লোকদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়াই হচ্ছে জনগণের গুরু দায়িত্ব। এই গুরু দায়িত্ব ভোট প্রদানের মাধ্যমে প্রকাশ করে দেশের মালিক যা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।

আমি সুইডেনে বসবাস করি। জাতীয় নির্বাচনে সাত বার ভোট দিয়েছি। আমার ভোট আমি নিজে দেই। আমার ভালো মন্দের দায়ভার আমি নিজে নেই। আমি দুইবার মতামত পরিবর্তন করেছি কারণ যে ভাবে কথা দিয়েছিল আমাদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা তারা তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে বিধায়।

গণতন্ত্রের দেশে এমনটিই স্বাভাবিক। দেশের মালিক জনগণ অথচ জনগণ তার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না তা কি করে সম্ভব? যত দিন উপরের সিস্টেম সঠিক ভাবে পরিচালিত না হবে, ততদিন দেশ শান্তি, স্বস্থি, স্থিতিশীলতা, সুশিক্ষা দুর্নীতি মুক্ত হবে না।

সহজ করে বিষয়টি তুলে ধরলাম সবার অবগতির জন্য। জানি সবাই বলবে কি এমন নতুনত্ব রয়েছে এখানে আমরা তো সবই জানি। নতুনত্ব এটাই যে জেনে শুনেও আমরা কিছু করছি না। এটাই জাতি হিসাবে আমাদের পরাজয়।

আমরা প্রতিদিন ভালো মন্দ খাই, খাবারের সব অংশই শরীরে কাজে লাগে না। তাই অবশিষ্ট অংশ বর্জ্য হয়ে পেটে জমা থাকে। অবশেষে সেই বর্জ্য যখন পেট থেকে বের হয় সবাই তখন তার থেকে দূরে থাকি, যদিও বর্জ্য ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তা আমাদের নিজ নিজ পেটের ভেতরেই ছিল। হঠাৎ তা কেন এত দুর্গন্ধ যুক্ত হলো?

দেশের সুন্দর পরিকাঠামোগুলো যখন সঠিকভাবে পরিচালিত না হয় তখন অশান্তি, অস্বস্থি, অস্থিতিশীলতা, কু-শিক্ষা দুর্নীতি বর্জ্যের মত সমাজে শুধু দুর্গন্ধ ছড়ায় যা আমাদের কর্মের ফলাফল।

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড