পাল্টা-পাল্টি হামলার পর গাজায় যুদ্ধবিরতি

ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের মধ্যে হামলা পাল্টি হামলার পর এবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে দুপক্ষ। যদিও এর আগে সোমবার (২৫ মার্চ) গাজা স্ট্রিপ থেকে ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত তেল আবিভের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি বাড়িতে রকেট হামলা চালানো হয়েছিল। আর এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।

যদিও সেই হামলার বিষয়ে হামাস নেতাদের মতে, প্রথমে ইসরায়েল থেকে গাজা উপত্যকায় হামলা চালানো হয়েছিল। আর তার প্রেক্ষিতে হামাসও এই পালটা হামলাটি চালিয়েছে। হামাসের দাবি, দীর্ঘক্ষণ রকেট বিনিময়ের পর বর্তমানে দুপক্ষের মিশরীয়-ব্রোকড যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। খবর আল-জাজিরার।

এ বিষয়ে হামাসের মুখপাত্র ফাভিজি বারৌম বলছেন, ‘ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে মিশরীয় ব্রোকড দফাগুলির আওতায় আমরা যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছি।’ যদিও ইজরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

এর আগে সোমবার স্থানীয় সময় সকালে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের দিকে একাধিক রকেট নিক্ষেপ করা হয়। যার প্রেক্ষিতে একইদিন সন্ধ্যায় ইসরায়েলি সশস্ত্র সেনারা গাজায় বিমান হামলা চালানো শুরু করে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, ‘সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় ইসরায়েলে একাধিক স্থান থেকে এই বোমার বিকট শব্দটি শোনা গিয়েছে। যে কারণে আমাদের পক্ষ থেকেও গোটা গাজা জুড়ে হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। এতে হামাসের সামরিক গোয়েন্দা সদর দপ্তর ধ্বংস করা হয়েছে।’

ইসরায়েলি হামলার শুরুতে, গাজা স্ট্রিপের উত্তর অংশে বাসিন্দারা সোমবার সন্ধ্যায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনার খবর পেয়েছিল। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, গাজার দক্ষিণে খান ইউনুসের পূর্ব দিকে একটি কৃষি এলাকায় বায়ু হামলা চালানো হয়েছে।

যদিও গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, ইসরায়েলের চালানো এ হামলায় এখন পর্যন্ত মাত্র সাতজন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

এদিকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক হ্যারি ফাউসেট বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনারা হামাসের অবস্থান লক্ষ্য গাজার বিভিন্ন সাথে হামলা চালিয়েছে। যদিও তারা শুধু উপত্যকার বিভিন্ন খালি ভবন আঘাত হানে। তখন আমরা শুধু গাজার আকাশের বেশ কয়েক স্থানে ধোঁয়া দেখেছি।’

আল-জাজিরার এই প্রতিবেদক আরও বলেন, ‘গাজার অভ্যন্তরে আমাদের সহকর্মীদের কাছ থেকে আমরা এ পর্যন্ত শুনছি যে, শহরের ঘনবসতিপূর্ণ জনবসতিপূর্ণ এলাকার বেশ কয়েকটি একটি বিল্ডিং পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।’

হামাসের মুখপাত্র আবদুলতিফ আল-কানু আল-জাজিরাকে বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলি সেনারা গাজা উপত্যকার উপর একটি হামলা ঘটিয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সকল ধরনের আগ্রাসন অনুশীলন করছে। আমরা ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডে নিন্দা জানাচ্ছি।’

হামাসের এই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘হামাস কখনোই ফিলিস্তিনি জনগণের কোনো ক্ষতি হতে দিবে না। প্রয়োজন হলে এর শক্ত প্রতিরোধ করা হবে।’

অপরদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতের কারণে গভীর উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে সকল পক্ষকে তিনি সর্বোচ্চ সীমাবদ্ধতা প্রয়োগের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন :- সিরিয়া থেকে ৫০ টন সোনা লুট করেছে যুক্তরাষ্ট্র

এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলের ওপর গাজার রকেট হামলার পর আমি আমার ওয়াশিংটনের সফর সংক্ষিপ্ত করেছি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, নিরাপত্তার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমার সফর সংক্ষিপ্ত করব। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব এবং এর পরপরই আমি দেশে ফিরে আসব।'

ওডি/কেএইচআর