আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘের দুই অঙ্গ সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ সালে ১৯ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য কর্ম-সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগ ও তার অভিঘাত দায়ী। প্রথমবার সংস্থা দুটির এ ধরনের প্রতিবেদনে বিশ্বজুড়ে কর্মজীবী লোকেদের মৃত্যু ঝুঁকির আশঙ্কাজনক চিত্র ফুটে উঠেছে।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘ডব্লিউএইচও/আইএলও জয়েন্ট-এস্টিমেটস অব ওয়ার্ক-রিলেটেড বার্ডেন অব ডিজিজ অ্যান্ড ইনজুরি, ২০০০-২০১৬’ শীর্ষক বৈশ্বিক পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্বাসকষ্ট এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কর্ম-সম্পর্কিত অধিকাংশ মৃত্যু হয়েছে।
সংস্থা দুটির গবেষণা অনুযায়ী, কাজের কারণে এসব মৃত্যুর ৮১ শতাংশ ক্ষেত্রে অসংক্রামক নানান রোগ দায়ী ছিল। মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণগুলোর মধ্যে ছিল ফুসফুসের স্ট্রোক (৪ লাখ মৃত্যু), দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ (৪ লাখ ৫০ হাজার) এবং হৃদরোগ (৩ লাখ ৫০ হাজার)। কাজের সময় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ১৯ শতাংশ (৩ লাখ ৬০ হাজার) লোকের মৃত্যু হয়েছে।
গবেষণায় ১৯টি পেশাগত ঝুঁকিকে কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার মধ্যে দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, কর্মস্থলে বায়ু দূষণ, হাঁপানি, ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদানের উপস্থিতি, শোরগোল উল্লেখ যোগ্য। সবচেয়ে বড় ঝুঁকি দীর্ঘ কর্মঘণ্টার কারণে স্ট্রোক ও হৃদরোগে সংক্রমিত হয়ে বছরে আনুমানিক ৭ লাখ ৫০ হাজার পেশাজীবীর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন : ভারত থেকে বাংলাদেশে ছুটছে ইলিশের ঝাঁক
নতুন এ গবেষণায় পেশাজীবীদের প্রাণহানির অন্যতম বড় কারণ হিসেবে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশকে দায়ী করা হয়। এমনকি কর্মস্থলে বায়ু দূষণ ৪ লাখ ৫০ হাজার মৃত্যুর জন্য দায়ী। এছাড়া নানা ধরনের ধোঁয়া, গ্যাস, শিল্পকারখানা থেকে নিঃসৃত ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতিজনিত কারণে সৃষ্ট বায়ুদূষণ কর্মক্ষেত্রে কর্মজীবীদের জন্য প্রাণঘাতী পরিবেশ সৃষ্টি করে।
প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়, পেশা-সম্পর্কিত রোগ ও অভিঘাত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে চাপের মুখে ফেলে দেয়, উৎপাদনশীলতা হ্রাস করে এবং পরিবারের আয়ের ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। যদিও আশার কথা হচ্ছে, কর্মক্ষেত্রে অভিঘাত ও রোগে মৃত্যুর এই হার ২০০০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ১৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
এ দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডা. তেদ্রোস আধানোম গেব্রেয়াসুস দাবি করেন, চাকরি করে আক্ষরিক অর্থে এত মানুষের প্রাণহানি ঘটতে দেখাটা ভীষণই পীড়াদায়ক। আমাদের এই রিপোর্ট বিশ্বের জন্য একটি সতর্কবার্তা।
সর্বজনীন পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি পূরণে দেশ এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : জ্বরে কোনো শিশুর মৃত্যু হয়নি : মমতা
অপর দিকে আইএলওর মহাপরিচালক গাই রাইডার মনে করেন, এই অনুমানগুলো পেশা-সম্পর্কিত রোগগুলোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। এমনকি এই তথ্যগুলো নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর কর্মক্ষেত্র তৈরির জন্য নীতি নির্ধারণের ব্যাপারে সাহায্য করবে। এর মাধ্যমে মালিক, শ্রমিক এবং সরকার সবাই কর্মস্থলে ঝুঁকি কমাতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড