জবি প্রতিনিধি
মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি করায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. দোলন রায়ের শাস্তি দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের চেতনা ধারী শিক্ষক ও ছাত্রসমাজের ব্যানারে এক মানব বন্ধন থেকে তারা এ দাবি জানান। এ সময় তারা এ শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবাঞ্ছিত করারও দাবি রাখেন।
মানব বন্ধনে বক্তারা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাবেক পিএসসি সদস্য মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. এস এম আনোয়ারা বেগম আমাদের জাতির গর্ব। ১৯৭১ সালে অধ্যাপক ড. আনোয়ারা ও তার বোন মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ারা বেগম পটুয়াখালী জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন। ওই সময় তারা দুই বোন ও বড় ভাই আবদুর রশিদ মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়ায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তার মাকে ধরে নিয়ে যায়।
কিন্তু স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে বর্তমান সরকারের আমলে কিছু সুবিধাবাদী শ্রেণী নিজেদের আওয়ামী লীগের বড় নেতা হিসাবে জাহির করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ জানুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচন কেন্দ্র করে নীল দলের কোন্দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. দোলন রায় মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কটূক্তি করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র নিয়ে বিদ্রূপ করেন। মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড.আনোয়ারা বেগমকে হুমকি দেন।
জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের দুই গ্রুপ চরম বিবাদে জড়ায়। অধ্যাপক ড.আনোয়ারা জগন্নাথ কলেজ আমল থেকে শিক্ষকতা করছেন। এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন। সম্প্রতি নীল দলের দুই গ্রুপের কোন্দলের কারণে তিনি এর প্রতিবাদ করেন। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যালঘুদের দায়ী করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ড. দোলন রায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি করে পোস্ট দেন।
ড. দোলন রায়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবহু দেয়া হল, ‘মাইনরিটি নিয়ে যে সব তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধারা (!) নানা কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন তাদের বলছি সাবধান হয়ে যান। সময় আছে এখনো। মুক্তিযুদ্ধে হাতে কি ছিল বাঁশ না লাঠি ? কি নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন ?? ওই নাম বিক্রি করে অযোগ্য হয়েও সব সুবিধা নিয়েছেন !! আর কত !!
এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগম বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি করা স্বাধীন বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকে নিয়ে কটূক্তির সমান। আমি এর বিচার চাই। আমি ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
এ সময় মানব বন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এর সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারিক হোসেন খান, সহকারী অধ্যাপক নঈম আকতার সিদ্দিক, সহকারী অধ্যাপক শরীফ নূরজাহান, সহকারী অধ্যাপক লামিয়া ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক নূরানাসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড