• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শাবি শিক্ষার্থীর হতাশায় আত্মহত্যা

অনার্সে ১ম হওয়া সত্ত্বেও মাস্টার্সের থিসিসে পায়নি সুপারভাইজার

  শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:০৭
শাবিপ্রবি
শাবিপ্রবি ও মৃত শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান প্রতীক (ছবি : সম্পাদিত)

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের মেধাবী শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান প্রতীক অনার্সে প্রথম হওয়া সত্ত্বেও থিসিসের জন্য সুপারভাইজার পাননি। এ বিষয়টি নিয়ে হতাশায় আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ প্রতীকের পরিবারের। বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, অনার্সে তার রেজাল্ট ছিল সিজিপিএ ৪.০০ স্কোরের মধ্যে ৩.৮২ পেয়ে সম্মিলিতভাবে বিভাগে ১ম স্থান অধিকার করে। এছাড়া, মাস্টাসের্র ১ম সেমিস্টারে তার রেজাল্ট ৩.৫৮ ও ২য় সেমিস্টারে ছিল ৩.০৮ এবং সম্মিলিতভাবে ৩.৩৩। যা বিভাগের মধ্যে ৭ম স্থান।

এ দিকে, সুপারভাইজার না দেওয়া বিষয়ে জিইবি বিভাগের বর্তমান প্রধান অধ্যাপক ড. শামসুল হক প্রধান বলেন, সুপারভাইজার না দেওয়া বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। আমি কিছুদিন হলো বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে এসেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।

সুপারভাইজার না দেওয়ার বিষয়ে তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিক্ষার্থীদের থিসিস দেওয়ার জন্য আমরা কিছু ক্রাইটেরিয়া ফলো করে থাকি। ঐ সেশনে একজন শিক্ষক একজন শিক্ষার্থী থিসিসের জন্য নিতে পারেন। যারা নিয়েছেন তাদের পর সে আর সুপারভাইজার খুঁজে পাননি বা কোনো টিচার রাজি হয়নি। অনার্সে ১ম শ্রেণিতে ১ম হওয়া সত্ত্বেও সে কেন সুপারভাইজার পাননি- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি।

এ দিকে, পরিবারের দাবি মাস্টার্সে বিভাগের শিক্ষকরা কম নম্বর দিয়েছেন, অনেক ধর্ণা দিয়েও পাননি সুপারভাইজার। বিভিন্ন সমস্যা থাকার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রশাসনকে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ সবই কারণই তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে। তবে পরিবারের এমন দাবিতে অযৌক্তিক বলছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১৪ জনুয়ারি) নগরীর কাজলশাহ এলাকার মেস থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে তার লাশ নরসিংদীর নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতীককে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে বিচার চেয়েছেন তার বোন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিসর্ডার বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহিদ। এ দিকে, প্রতীকের আত্মহত্যা নিয়ে তার বড় বোন শান্তা তৌহিদা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস দিয়ে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষককে শিক্ষকদের দায়ী করেছেন।

এছাড়া, প্রতীকের বাবা তাওহিদুজ্জামান নগরীর কোতোয়ালি থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন নগরীর কোতোয়ালী থানার এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া।

এ বিষয়ে তার বন্ধু ফাহমিদ হোসেন ভুঁইয়া জানান, প্রতীক দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হতাশায় ভুগছিল। আর সে তার বন্ধুদের সঙ্গেও যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছিল।

এ দিকে, জিইবি বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক ড. আসিফ ইকবাল বলেন, প্রতীক তার পরীক্ষার ফলের জন্য বা তার কোনো বিষয় নিয়ে আমাদের কাছে সে আসেনি। এ বিষয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরপরই তার ফ্যামিলি থেকে প্রতীকের সুপারভাইজার না পাওয়ার বিষয়টি আমাকে জানানো হয়। আমি তখন তার ডিপার্টমেন্টকে বিষয়টি অবগত করি। এরপর আমার সঙ্গে প্রতীক বা প্রতীকের পরিবারের কেউ যোগাযোগ করেননি এবং পরবর্তী সময় ফল কী হয়েছিল এই ব্যাপারেও আমাকে অবগত করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি তদন্তে অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড মিনারেল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বেলাল উদ্দীনকে প্রধান করে আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া, অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর মো. সামিউল ইসলামকে কমিটিতে সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সিলেট নগরীর বাগবাড়ীর পশ্চিম কাজলশাহ এলাকা হতে ১৪ জানুয়ারি (সোমবার) প্রতীককে ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড