• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাবিতে ভর্তিচ্ছুকে জিম্মি করে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজির অভিযোগ

  রাবি প্রতিনিধি

০৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ২২:৫২
প্রশাসনিক ভবন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবন (ছবি : সংগৃহীত)

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক ভর্তিচ্ছুকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। ভর্তিচ্ছু ঐ শিক্ষার্থী চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তার একাডেমিক সনদপত্র জোরপূর্বক জিম্মি করে রাখারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে পুলিশ তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে উদ্ধার করে।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর নাম আল আরমান হৃদয়। তিনি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সম্মান ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ ইউনিট’- এর অধীনে নাট্যকলা বিভাগে অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ভর্তি পরীক্ষায় তার রোল নম্বর এ-১৩৬৭৯।

অপরদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউর রহমান রাথিক ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জসীমউদ্দীন রাহুল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হল সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ ইউনিটের’ অধীনে ভর্তি পরীক্ষায় নাট্যকলা বিভাগে হৃদয় অপেক্ষমান তালিকায় ছিলেন। অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তির অনিশ্চয়তা থাকায় তিনি অভিযুক্ত রাথিক ও রাহুলের সাথে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী হৃদয় ৫ হাজার টাকা তাদের অগ্রীম প্রদান করেন। পরে গত ৫ ডিসেম্বর নাট্যকলা বিভাগে হৃদয়কে অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তির জন্য ডাকা হয়। ভর্তির সুযোগ পেয়ে হৃদয় চুক্তি অনুযায়ী বাকি ১৫ হাজার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

ভর্তির জন্য শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে হৃদয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলে অবস্থান করছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাথিক ও রাহুল এসে জোরপূর্বক তার একাডেমিক সনদপত্র জিম্মি করে চুক্তির বাকি টাকা দাবি করেন।

পরে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত ও সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু বিষয়টি মীমাংসা করতে হলে আসেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু হলের ২৩২ নম্বর কক্ষে বৃত্ত ও মিশু হৃদয়কে সনদপত্র ফেরত দিতে ডেকে নেন। দুপুর ১টার দিকে মতিহার থানা পুলিশ এসে ওই কক্ষ থেকে তাকে উদ্ধার করেন।

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা হৃদয়ের সাথে কথা বলতে চাইলে মতিহার থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুব আলম ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বাধা দেন। একপর্যায়ে পুলিশ সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে জোরপূর্বক ওই কক্ষ থেকে বের করে দেয়। এ সময় হৃদয় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাইলেও পরে ভয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

অভিযুক্ত শফিউর রহমান রাথিক চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কারো কাছে চাঁদা দাবি করিনি। এ ধরণের কোন ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই।’ আরেক অভিযুক্ত জসীমউদ্দীন রাহুলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে, চাঁদার বিষয়টি অস্বীকার করেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু। তিনি বলেন, ‘কোন ভর্তিচ্ছুর কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের ঘটনা ঘটেনি।’

মতিহার থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুব আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা বঙ্গবন্ধু হলের ২৩২ নম্বর কক্ষে যাই। জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় এলাকার পরিচিত বড় ভাইয়ের কাছে বেড়াতে এসেছে বলে জানায়। পরে আমরা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘ভুক্তভোগী হৃদয় এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিতে ইচ্ছুক নয়। ভুক্তভোগী না চাইলে আমার কিছু করার নেই।’

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড