• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জাবির এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে 'মদ্যপ' অবস্থায় গালাগালির অভিযোগ আরেক অধ্যাপকের

  জাবি প্রতিনিধি

২৫ অক্টোবর ২০২৩, ২১:২৬
জাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আলমের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় অসংলগ্ন আচরণ করা ও গালাগালির অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার।

শনিবার (২১ অক্টোবর) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের (অরুণাপল্লী) সাধারণ সম্পাদক বরাবর একটি অভিযোগপত্র জমা দেন কবিরুল বাশার।

ড. কবিরুল বাশার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘গত ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টায় আমাদের বাসার ফ্ল্যাট-মালিক প্রফেসর ড. সাব্বির আলম মাতাল অবস্থায় বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে অকথ্য ভাষায় আমাকে এবং আমার মৃত বাবাকে বকাবকি করেন। গার্ডরা এ সময় আতঙ্কিত হয়ে সবাই একসঙ্গে বাঁশি বাজানো শুরু করেন। বাড়ির ফ্ল্যাট-মালিক ও ভাড়াটিয়াদেরকে ইতিমধ্যে প্রধান ফটক এবং পকেট গেটের চাবি সরবরাহ করা হয়েছে। বলা হয়েছে রাত ১১টার পরে কেউ বাসায় ফিরলে নিজ দায়িত্বে গেট খুলে প্রবেশ করতে হবে। এরপরও বাড়ির প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় তিনি অসদাচরণ করেন।'

এ ঘটনায় ড. সাব্বিরের বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ দিয়েছেন ১২ নম্বর রোডের ২৪৯ নাম্বার রোডের বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাশার। শনিবার সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ‘১৯ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা ৪৮ মিনিটে প্রফেসর ড. সাব্বির আলম আমাকে ফোন করে ঘুম ভাঙিয়ে অকথ্য ভাষায় বকাবকি করেছেন এবং তার বাড়ির গেট খুলে দিতে বলেন। আমি একজন বয়স্ক, অসুস্থ মানুষ। গভীর ঘুমের মধ্যে তার এহেন আচরণ আমাকে মর্মাহত এবং বিষণ্ন করেছে। কোনোভাবেই আমি এই আচরণ ভুলতে পারছি না।’

এ বিষয়ে প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘ড. সাব্বির এবং আমি ১০ নম্বর রোডের ২৩৭ নম্বর বাড়িতে থাকি। ড. সাব্বির চারতলায় থাকেন, আমি তিনতলায় থাকি। সব ফ্লাট মালিককে গেইটের চাবি প্রদান করা হয়েছে কিন্তু অধ্যাপক সাব্বির কোথাও যাবার সময় চাবি সাথে নিয়ে যান না। এছাড়াও তিনি আমার মৃত বাবাকে নিয়ে অকথ্য গালিগালাজ করেছেন। আমার বড় ভাই ৬৭ বছর বয়সী। এই অসুস্থ মানুষটাকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে তার অসংলগ্ন আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে শেষ পযার্য়ে নিরুপায় হয়ে অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।’

অধ্যাপক কবিরুল বাশার আরো দাবি করে বলেন, "ড. সাব্বিরকে মদের সাপ্লাই দিয়ে যায় সেই প্রমাণ আমার কাছে আছে। এছাড়াও ক্যাম্পাসের অনেকেই আছে যারা জানে যে সাব্বির মদ পান করেন।"

এদিকে রোববার (২২ অক্টোবর) ড. কবিরুল বাশারের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন ড. সাব্বির। লিখিত অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ফ্ল্যাট ক্রয়ের পর থেকেই মালিক হিসেবে আমার অধিকার ক্ষুণ্ন করে আসছেন তারা। বিল্ডিংয়ের কমন বিষয়গুলোতে কখনই আমার মতামত নেওয়া হয় না। বিভিন্ন সময় আমার নামে মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং মনগড়া অভিযোগ দেয়, যা সম্পূর্ণ ব্যক্তি আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ।

গত ১৮ তারিখের ঘটনা উল্লেখ করে অভিযোগপত্রে আরো বলেন, '১৮ তারিখ কাউকে কিছু না জানিয়ে বিল্ডিংয়ের সব দরজা ভেতর থেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন, যা আমাকে ভবনে বসবাস করতে না দেওয়ার জন্য তাদের পূর্বপরিকল্পনার অংশ। ভবনের একটি পরিচালনা কমিটি থাকা সত্ত্বেও কবিরুল বাশার ও তার স্ত্রী ভবনের সব ক্ষমতা নিজেদের কাছে কুক্ষিগত করে রাখেন। বিভিন্ন সময় লিফট্, পানির মোটর, জেনারেটর ও কমনরুমের চাবি নিজেদের কাছে রেখে আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন। উপরন্তু আমাকে মাতাল ও সন্ত্রাসী বলে সামাজিক ও মানসিকভাবে নিপীড়ন করে আসছেন।’

অধ্যাপক কবিরুল বাশারের অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, ‘ড. কবিরুল বাশার একজন মিথ্যাবাদী, প্রতারক। ফ্লাট কেনার পর থেকেই সে এবং তার ভাই আমার সাথে প্রতারণা করে আসছে। শুধু তাই নয় তারা মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। প্রথম দিন ১৮ অক্টোবর রাত বারোটার দিকে এসে দেখি দরজা ভেতর থেকে তালাবদ্ধ, তাই দরজা খুলে দেয়ার জন্য পরের দিন আমি এবং অধ্যাপক ড. শাহেদ রানা সহ একই অবস্থায় পড়লে ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাশারকে ফোন দিই যেন তার কেয়ারটেকারকে দরজা খুলতে পাঠায়। এখানে তাকে তাকে কোন ধরনের গালিগালাজ করিনি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, এমনকি রাত ১১ টার পর সকল দরজা বন্ধ করে দেওয়ার যে নিয়ম করা হয়েছে সেটাও আমাকে জানানো হয়নি।

বাসার সার্বিক বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, "আমি ওই বাসায় বছরখানেক হলো থাকিনা, আমার ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছি। আমি বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অবগত না। তবে সাব্বির স্যার বিগত কয়েকমাস যাবত কমন চার্জ প্রদান করছেন না বলে জেনেছি।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের (অরুণনপল্লী) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সোহেল রানা বলেন, ‘ তারা দু'পক্ষই আমার কাছে অভিযোগ করেছে, আমি মনে করি এসব ঠুনকো বিষয়গুলো তারা নিজেরাই বসে মিমাংসা করে নিতে পারলে ভালো, এ ব্যাপারে আমি তাদের সাথে কথা বলবো। তাছাড়া সামনে আমাদের সোসাইটির মিটিং আছে সেখানে আমরা কিভাবে তাদেরকে সমঝোতায় আনতে পারি এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।’

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড