• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীর উপস্থিতি কেমন?

  রেহেনা আক্তার রেখা

১৪ অক্টোবর ২০১৮, ১১:২৩
নারী
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী (ছবি : সংগৃহীত)

নারী স্বপ্ন দেখেন আকাশ ছোঁয়ার, স্বপ্ন দেখেন নিজেকে ছাড়িয়ে মহাকাশ জয়ের। কিন্তু সেই স্বপ্ন কত জনেরই বা পূরণ হয়। নারীর কাজে সব ক্ষেত্রে বাধা। ঘর থেকে বের হতে বাধা, এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না। বিশেষ করে, নারীদের উচ্চ শিক্ষা নিয়ে। একই কলেজে দু’জন ছেলে-মেয়ে একই রেজাল্ট করেছেন। ছেলেটা সারাদেশে ছুটছেন ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। আর মেয়েটি পড়ে আছেন সেই নিজ কলেজে।

অনেকের আবার ইন্টার পাশের পর আর পড়াশোনা করারও সুযোগও হয় না। অনেকের ধারণা মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলো আর পড়ার দরকার নেই। এবার বিয়ে দিলেই সব ঝামেলা থেকে মুক্ত। কিন্তু একটি মেয়েও যে স্বপ্ন দেখে তার সহপাঠী করিম-রহিমের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর বেশিরভাগ মেয়েদের এই স্বপ্নটা ভেঙে যায়। তবে কেউ কেউ ছুটে চলেন, কেউ কেউ জীবনের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে চালিয়ে যান স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। অনেকের সে স্বপ্ন পূরণ হয়, কিন্তু তা হাতে গোনা কয়েকজনের।

গ্রাম থেকে ওঠে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়ের সংখ্যা খুবই কম। আর এই ওঠে আসাটা কতটা কঠিন আর দুর্গম একমাত্র সেই মেয়েটিই বুঝে, যে এই লড়ায়ে অংশ নিয়েছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পরও একটা মেয়ে তার সেই স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে কিনা তা নিয়ে দেখা যায় সংশয়। পরিবারের অনেকে বিষয়টি মেনে নিতে পারেন না, মেনে নিলেও অনেকের থাকার সমস্যার কারণে আর পড়ার সুযোগ হয় না। এছাড়া সামাজিক প্রতিবন্ধকতা তো সঙ্গে আছেই।

অনেকের আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর বিয়ে হয়ে যায়। যার কারণে অনেকের পক্ষে ভর্সিটির হলে থেকে পড়াশোনা করার সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন না।

আমাদের চার পাশে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন যারা এমনিতে অনেক মেধাবী, আর ছোটবেলা থেকে স্কুল-কলেজে ভালো রেজাল্ট করে নিজেকে মেধাবী হিসেবে প্রমাণ করেছেন। তেমনই হাজার হাজার নারী শিক্ষার্থী কখনো স্বপ্নও দেখেননি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। তাদেরকে ছোটবেলা থেকেই পরিবারের সদস্যরা এমনভাবে বড় করে তুলেছে এই স্বপ্ন দেখার সাহসও হয় নি কখনো।

অনেক পরিবার মেয়েদেরকে গৃহেবন্দি করে রাখেন। পড়াশোনা করে তাদের মেয়ে ঘরের বাইরে গিয়ে চাকরি করবেন এটা অসম্ভব। তাই অনেক সম্ভাবনাময়ী নারী উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া মেয়ে যদি ঘরের বাইরে দূরে কোথাও গিয়ে পড়াশোনা করলে তা সমাজের অনেকে ভালো চোখে দেখে না। মেয়েকে নিয়ে নানান কথা বলে। তাই মেয়েদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য অনেক পরিবার সবসময় নিরুৎসাহিত হয়। তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়িয়ে বাড়ির পাশের কলেজে মেয়েকে অনার্সে ভর্তি করিয়ে দেয়।

দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যায়ের সংখ্যা খুবই কম। প্রতি জেলায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় গ্রাম থেকে অনেক দূর পাড়ি দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। বিশেষ করে অনেকে আবার ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে থাকার জায়গা পায় না যার কারণে ইচ্ছে থাকার সত্ত্বেও পরীক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত হয় বেশিরভাগ নারী শিক্ষার্থী।

২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায় পাশের হারে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে। এ বছর এসএসিতে ছেলেদের পাসের হার ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর মেয়েদের পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। কিন্তু বছর শেষে দেখা যাবে মেয়েদের চেয়ে ছেলেরাই দেশের ভালো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে।

এর কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে মেয়েরা নিরাপত্তার অভাব, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা, পরিবারের সদস্যদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে অনিচ্ছা ইত্যাদির কারণে মেয়েরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে আগের চেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের উপস্থির হার অনেক গুণ বেড়েছে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উদাহরণ দেয়- ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৭৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ছিল মাত্র একজন। বাংলাদেশ শিক্ষা গবেষণা ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীর অংশগ্রহণ ৩৭ শতাংশ।

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড