• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সংস্কারের অভাবে পর্যটক শূন্য হচ্ছে বাঁশখালী ইকোপার্ক

  শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী

২২ জুলাই ২০১৯, ২২:৪৩
ইকোপার্ক
বাঁশখালী ইকোপার্ক, চট্টগ্রাম (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বাঁশখালী একটি নান্দনিক উপজেলা। সবুজের চাদরে ঢাকা পূর্বে পাহাড়, পশ্চিমে জলকদর খালের বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে মিতালী। বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালীর অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট বাঁশখালী ইকোপার্ক। এক সময় পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত থাকলেও বর্তমানে সেই চেনা দৃশ্য আর চোখে পড়ে না। দিন দিন পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ছে পার্কটি।

বাঁশখালী ইকোপার্কে ২০০৩ সাল থেকে পর্যটকের আগমন শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঈদ, পূজা-পার্বনসহ নানা দিবসকে উপলক্ষ করে উপচে পড়া ভিড় জমে থাকতো। সিনেমার নায়ক নায়িকা, শিল্পীদের শুটিংয়ের জন্যও আকর্ষণীয় স্পট ছিল পার্কটি। সে সময় প্রকৃতির অপূর্ব সমন্বয় ও নানা কৃত্রিমতায় সৌন্দর্যে ভরা যৌবন ছিল পার্কে। দেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু ও নানা জাতের পশু-পাখিতে ভরপুর ছিল ইকোপার্কটি। দর্শনার্থীদের আজ আর সেই আকর্ষণীয় সে দৃশ্য আর চোখে পড়েনা। এছাড়া নান্দনিক ফুলের উদ্যান, পশু-পাখির খাঁচা বিলুপ্ত প্রায়।

দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত ব্রিজ (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বিগত ২০০৮ সালে প্রলয়ঙ্করী পাহাড়ি ঢলের পানির তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে বাঁশখালী ইকোপার্কের বামের ছড়ার বাঁধ ভেঙে ইকোপার্কের বেশ কিছু স্থাপনা ও হাইড্রো-ইলেক্ট্রনিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বিলীন হয় সৌন্দর্যের নানা স্পট। ফলে পর্যটকের সংখ্যাও হারাতে বসে ইকোপার্কটি। তবে ইকোপার্কের ভাঙা বাঁধ সংস্কারের জন্য বন বিভাগের বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার লক্ষ্যে সম্প্রতি এই বাঁধ সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে চার কোটির বরাদ্দ সাপেক্ষে ইকোপার্কের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে আসছে।

এদিকে স্লুইস গেইট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও কাজের ত্রুটির কারণে গেইট দিয়ে অতিরিক্ত পানি ছাড়া যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত মৌসুমে স্লুইস গেইট ভেঙ্গে লেক পানিশূন্য করা হয়। নড়বড়ে কাজের ফলে সে একই সমস্যা আবার দেখা দিলে কর্তৃপক্ষের কাজের মান নিয়ে না না প্রশ্ন তুলছে সচেতন মহল।

বাঁশখালী ইকো-পার্কের পিকনিক সেট, দ্বিতল রেস্ট কর্নার, দেশের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু, সাসপেনশন ব্রিজ, দোলনা, স্লিপার, দ্বিতল রেস্ট হাউস, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ব্যারাক, প্রধান ফটক, পাখি ও বন্যপ্রাণী অবলোকন টাওয়ার, ভাসমান প্লাটফরম, লেক, ফেনোরোমিক ভিউ টাওয়ারসহ নানা বিনোদনের ক্ষেত্র গুলোর অনেকটাই সংস্কারের অভাবে জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে। এদিকে ঝুলন্ত সেতুটি এখন এক মরণ ফাঁদ। যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে সেতুতেটিতে। শিঘ্রই পার্কের সংস্কার করা না হলে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়বে পার্কটি।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা লেক (ছবি : দৈনিক অধিকার)

লোহাগাড়া থেকে আসা পর্যটক শরিফুল ইসলাম বলেন, বাঁশখালী ইকোপার্কে আগের মতো চিরচেনা সৌন্দর্য চোখে পড়েনা। এখানে বন্য প্রাণীর খাঁচা, ফুলের উদ্যান, স্বচ্ছ লেকে জলযান থাকলে কিছুটা বিনোদন খুঁজে পেতো সাধারণ পর্যটক।

পার্কে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটির দুরবস্থার কারণে এক রকম পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে এই পর্যটন কেন্দ্রটি। তবে এই ইকোপার্কের উন্নয়নে নতুন করে বরাদ্দ প্রদানসহ সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে আবার পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়বে পার্কটি এমন মন্তব্য শিলকুপ ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মহসিনের।

বাঁশখালী ইকোপার্কের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা রেইঞ্জার আনিছুজ্জান শেখ জানান, ইকোপার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, নতুন করে কটেজ নির্মাণ, কনক্রিটের ছাতাসহ, স্পটগুলো সংস্কার, লেকে বিনোদনের জন্য জলযান বৃদ্ধিসহ নানা সংস্কারের জন্য আমরা একটি প্রজেক্ট সাবমিট করেছি। আশা করি খুব কম সময়ে পার্কের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবো।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, বাঁশখালী ইকোপার্কে রয়েছে প্রকৃতির অপূর্ব সমন্বয়। এ সময় সংস্কারের মাধ্যমে এটিকে আধুনিক একটি পর্যটন স্পটে রূপান্তরিত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ওডি/আইএইচএন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড