• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুসলিম লীগের ব্যর্থতায় জন্ম আওয়ামী লীগের 

  আয়াজ উর রাহমান

২৩ জুন ২০১৯, ১২:৫৪
ভাসানী-মুজিব
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (ছবি : সংগৃহীত)

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের পাতায় এক অনন্য নাম আওয়ামী লীগ। কেননা উপমহাদেশে কংগ্রেস, মুসলিম লীগ এবং আওয়ামী লীগ ইতিহাস, ঐতিহ্যের ধারক বাহক রাজনৈতিক সংগঠন। কংগ্রেসের কারণে ভারত, মুসলিম লীগের অবদানে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে রয়েছে আওয়ামী লীগের অবদান।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন টিকাটুলির রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম। মওলানা ভাসানী, যুবনেতা শামসুল হক আর শেখ মুজিবুর রহমান, মূলত এ তিনজনই ছিলেন দলটির প্রতিষ্ঠালগ্নে মূল নেতা।

রোজ গার্ডেনের সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন আতাউর রহমান খান। ১৯৫২ সালে শামসুল হক জেলে থাকায় শেখ মুজিব দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। ১৯৫৩ সালের কাউন্সিলে শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সাল থেকেই ১৯৬৬ সালের ইডেন কাউন্সিল পর্যন্ত (যে কাউন্সিলে ৬ দফা প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল) তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

১৯৫৩ সালের কাউন্সিলে দলের ধর্মনিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য মুসলিম শব্দ রহিত করে দলের নাম শুধু আওয়ামী লীগ করার প্রস্তাব গৃহীত হয়। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। কারণ তিনি মনে করেছিলেন ১৯৫৪ সালের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে এ নিয়ে হয়তো দল বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে। কিন্তু মাওলানা ভাসানী এবং শেখ মুজিবের যৌথ বিরোধিতার কারণে শহীদ সাহেবের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।

৫৩ সালের কাউন্সিলের পরে সংগঠন আওয়ামী লীগ নামে পরিচিতি লাভ করে যা আজ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। ৫৩ সালের কাউন্সিলে মওলানা ভাসানী সভাপতি, আতাউর রহমান খান সহসভাপতি, শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ সম্পাদক, কোরবান আলী সাংগঠনিক সম্পাদক, ইয়ার মুহাম্মদ খান কোষাধ্যক্ষ ও মুহাম্মদ উল্ল্যাহকে দপ্তর সম্পাদক করে ২৩ সদস্যের একটা কার্যকরী সংসদ গঠনসহ শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামোর ওপর দলের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। কার্যকরী সংসদ সদস্যের মাঝে ছিলেন পাবনার ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, চট্টগ্রামের জহুর আহম্মদ চৌধুরী, খুলনার শেখ আব্দুল আজিজ এডভোকেট প্রমুখ।

১৯৪৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আস্থাভাজন একজন যুবনেতা। ১৯৪৬ সালে থেকে শহীদ সাহেবের কাছাকাছি থেকে শেখ সাহেব তার রাজনৈতিক জীবন গড়ে তুলে ছিলেন।

শহীদ সাহেবের আস্থাভাজন হওয়ার কারণে সমগ্র বাংলাদেশে বিশেষ করে পূর্ব-বাংলার যুবা বয়সের মুসলিম লীগের কর্মীদের সঙ্গে শেখ সাহেবের বিশেষ সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর যখন আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন শেখ সাহেব তখন পূর্ব-বাংলায় সোহরাওয়ার্দী হাসেম গ্রুপের সেইসব যুবা বয়সের নেতাদের জড়ো করে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গড়ে তুলেছিলেন।

মওলানা ভাসানী যদিও বা পূর্ব বাংলার সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু তিনি ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত আসামেই ছিলেন। ভাসানচরেই তিনি পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিনি একজন পীরও ছিলেন। আবার আসাম মুসলিম লীগের সভাপতিও ছিলেন। সুতরাং পূর্ব পাকিস্তানে জেলা পর্যায়ের নেতাদের মাঝে মওলানার সম্পর্ক খুব গভীর ছিল না। সবাই ছিলেন শহীদ সাহেবের গ্রুপের লোক। শেখ সাহেবের সঙ্গেই ছিল তাদের আন্তরিক সম্পর্ক। তখন পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টি ব্যান্ড ছিল আর কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রায় সব কর্মী আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করা আরম্ভ করেছিলেন। তারা নেতা হিসেবে মওলানার প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করতেন। শহীদ সাহেব এবং শেখ সাহেবের প্রতি তাদের ভক্তি, শ্রদ্ধা আনুগত্য কিছুই ছিল না।

পরবর্তী সময়ে ১৯৫৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টাঙ্গাইল জেলার কাগমারী নামক স্থানে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায় এবং কমিউনিস্টরা মওলানাকে সভাপতি করে নতুন দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেন। অথচ তখন ১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র মোতাবেক পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য শহীদ সাহেব এবং শেখ সাহেব প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

তখনকার সময়ের অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলেছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) ইসকান্দর মীর্জার উস্কানিতেই নাকি আওয়ামী লীগকে ভাঙা হয়েছিল। কারণ, ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ নির্বাচন করলে তখন নাকি আওয়ামী লীগই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতে আসতো।

তবে এ কমিউনিস্টরা কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাওলানার সঙ্গে থাকেননি। একে একে সবাই তাকে পরিত্যাগ করে চলে যায়। আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের মাঝে বিভক্তি এলে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিও বিভক্ত হয়ে যায়। ১৯৬৭ সালে মস্কোপন্থিরা অধ্যাপক মোজ্জাফর আহম্মদকে সভাপতি করে পৃথক ন্যাপ গঠন করেন। মাওলানা ভাসানী চীনপন্থিদের সঙ্গে চীনপন্থি ন্যাপের সভাপতি হিসেবে ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তোয়াহা, আলাউদ্দিন, মতিন, আব্দুল হক, দেবেন সিকদার, কাজী জাফর, রাশেদ খান মেনন, এরাও মাওলানাকে ত্যাগ করে চলে যান।

মওলানার মৃত্যুর পর মশিউর রহমান তার দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিকে জিয়াউর রহমানের কাছে বিক্রি করে সিনিয়র মন্ত্রী হয়েছিলেন। এখন মওলানার দলের অস্তিত্ব আর অবশিষ্ট নেই। বেতের টুপি মাথা দিয়ে কিছু লোককে তোপখানা রোডে ঘুরতে দেখা যায়। তারা দাবি করে তারা নাকি ভাসানীর অনুসারী। আসলে ভাসানী বেঁচে থাকবেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ অফিসে শ্রদ্ধার সঙ্গে মাওলানা এবং শামসুল হক সাহেবের ফটো সংরক্ষণ করেছেন।

১৯৬৫ সালের যুদ্ধের কথা বিবেচনা করে শেখ সাহেব ১৯৬৬ সালে শক্তিশালী পূর্ব পাকিস্তানের ভিত্তি রচনার জন্য ৬ দাবি উত্থাপন করেন। ১৯৬৫ সালে কাশ্মীর ইস্যুতে যুদ্ধ বাঁধে ভারত-পাকিস্তানের। ওই সময় গভীর রাজনৈতিক চক্রে পড়ে পূর্ব পাকিস্তান। সে সময় পশ্চিম পাকিস্তানে হামলা চালালেও পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি দুর্বলতাই প্রদর্শন করে ভারত। যদিও দুই দিক থেকেই কোণঠাসা ছিল দেশটি। তবে আঞ্চলিক রাজনীতিটা ভালই বুঝতে পেরেছিল ভারত। তবে ওই সময় ১৭ দিন স্থায়ী যুদ্ধে ভারত বাংলাদেশ দখল করেনি।

তবে এর পর শুরু হয়ে যায় ভাষা নিয়ে পূর্ব এবং পশ্চিম পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব। দুই রাষ্ট্রের মধ্যকার ভাষা এবং জাতিগত ভেদাভেদটা হয়ত আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিল ভারত। তাই ৬৫ এর যুদ্ধে অনেকটাই নমনীয়ই ছিল তারা।

এদিকে শেখ মুজিবের দেওয়া ৬ দফাও মেনে নেয়নি পাকিস্তানি নেতারা। আইয়ুব খান বলেছিলেন শেখ মুজিব ৬ দফা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ‘আমি অস্ত্রের ভাষায় কথা বলব’। কিন্তু শেখ সাহেব ও আওয়ামী লীগ ৬ দফার প্রশ্নে কোনো আপস করেননি। পশ্চিম পাকিস্তানিরাও অস্ত্রের ভাষায় কথা বলতে পিছপা হয়নি। শেষ পর্যন্ত ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর জেনারেল ইয়াহিয়া খান বিজয়ী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে যখন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে গণহত্যা আরম্ভ করেন, তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। অবশ্য এ ঘোষণার আগেও তিনি রেসকোর্সের জনসমুদ্রে ৭ মার্চ ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’– বলে ঘোষণা করেছিলেন।

তবে ৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের পর ৯ মার্চ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীও তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ওইদিন ভাষণে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘অনেক হয়েছে আর নয় , তিক্ততা বাড়িয়ে লাভ নেই। লা-কুম দ্বিনিকুম অলইয়া দ্বিন’ অর্থ্যাৎ তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার; পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে নাও। সাড়ে সাত কোটি বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না’। জনসভায় মওলানা ভাসানী তুমুল করতালির মধ্যে বলেন, ‘মুজিবের নির্দেশ মতো আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে কিছু না হলে আমি শেখ মুজিবের সাথে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলব’। পল্টনে সেই বিশাল জনসভায় মজলুম জননেতা দৃঢ় কণ্ঠে আরও বলেন, ‘অচিরেই পূর্ব বাংলা স্বাধীন হবে’। তিনি সবাইকে মুজিবের উপর আস্থা রাখতে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘বাঙ্গালিরা মুজিবের উপর আস্থা রাখেন, কারণ আমি তাকে ভালভাবে চিনি’। এইদিন তিনি তার ভাষণের সাথে ১৪ দফা দাবিও পেশ করেন। মওলানা ভাসানী এই বক্তব্যের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেন।

এছাড়া মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক সেই উক্তি এখনো অনেকে স্মরণ করেন। তিনি হয়তো দুই বাংলার ভবিষ্যৎ সঙ্কট বুঝতে পেরেছিলেন বলেই বেঁচে থাকাকালীন বলেছিলেন, “আসাম আমার, পশ্চিমবঙ্গ আমার ত্রিপুরাও আমার। এগুলো ভারতের কবল থেকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মানচিত্র পূর্ণতা পাবে না।”

বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেছিল। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে আসেন এবং নিজে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তিনি দেশে ফেরার পর ১৭ মার্চের মাঝে ভারতীয় সেনাবাহিনী ভারতে ফিরে যায়।

বঙ্গবন্ধু ফিরে না এলে ভারতীয় সেনারা সহজে ভারতে ফিরে যেত না বলে অনেকের ধারণা ছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ সাহেবকে প্রতি বিপ্লবের সম্মুখীন হয়ে সপরিবারে নিহত হতে হয়। ভাগ্যের ফেরে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে যান। ১৯৭৬ সালে মিজানুর রহমান চৌধুরী আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন করার উদ্যোগ নেন। জোহরা তাজউদ্দীনকে তখন আহ্বায়ক করা হয়েছিল। ১৯৮২ সালে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচিত করেন। তখন তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছিলেন। তিনি দেশে ফিরে দলের হাল ধরেন।

বঙ্গবন্ধু পরিবার ধ্বংসের রূপরেখা ও আওয়ামী লীগের কালো অধ্যায়

ভয়াল ২১শে আগস্ট। ২০০৪ সালের এই দিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। সম্পূর্ণ পরিকল্পিত এই সন্ত্রাসী হামলার পিছনের মূল টার্গেট ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১৯৭৫ সালের পর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিল আওয়ামী লীগ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু পরিবারের ওপর অন্যতম ভয়াবহ হামলার ঘটনা। তাই আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাদের মতে, ওইদিনের হামলাটি ছিল মূলত পরিকল্পিত একটি ষড়যন্ত্র। যে ষড়যন্ত্রের মূল টার্গেটই ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু পরিবারের নামকে মুছে দেওয়া।

২১ আগস্টের এই বোমা হামলা আওয়ামী লীগ সংগঠনটির জন্যও ছিল একটি বড় ধরনের ধাক্কা। এর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট স্বপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা এরপর একই সালের ৩ আগস্ট জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে জেলে হত্যার মত ঘটনাটি ছিল আওয়ামী লীগের জন্য বড় একটি ধাক্কা। ৭৫ এর এসব হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সংগঠনটির অভিজ্ঞ নেতৃত্বদের হত্যার মাধ্যমে দলটিকে দুর্বল একটি অবস্থায় পৌঁছে দেওয়ার মত একটি ষড়যন্ত্রও করা হয়েছিল বলেই মত রাজনৈতিক বিশিষ্ট জনদের।

এদিকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে অবস্থান করায় বেঁচে যান। নয়ত সেদিনই ষড়যন্ত্রকারীদের হত্যার শিকার হতেন তারাও। তবে ওইদিন বেঁচে গেলেও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধুর বড় কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য বার বার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতারা দাবি করেছেন।

তবে এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা ছিল ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা। সেদিন শেখ হাসিনা আবারও প্রাণে বেঁচে গেলেও জীবন দিতে হয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাদেরই।

এ পর্যন্ত শেখ হাসিনার ওপর যত হামলা

বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২১ আগস্ট বাদেও এ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে।

শেখ হাসিনা প্রথম হামলার শিকার হন ১৯৮৮ সালে ২৪ জানুয়ারি, চট্টগ্রামে। লালদীঘি ময়দানের আট দলীয় জোটের মিছিলে শেখ হাসিনাকে হত্যায় পুলিশ ও বিডিআর গুলি বর্ষণ করে। এতে সাত জন নিহত ও গুরুতর আহত হয়েছিল ৫৪ জন। ১৯৮৯ এর ১১ আগস্ট রাতে ফ্রিডম পার্টির একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডিস্থ ৩২ নম্বরের বাসভবনে গুলি বর্ষণ ও গ্রেনেড হামলা চালায়। ১৯৯১ এর ১১ সেপ্টেম্বর টুঙ্গিপাড়া হতে ঢাকায় ফিরে গ্রিনরোডের কাছে ধানমন্ডি স্কুলে উপনির্বাচনের ভোট প্রদানের পর গ্রিনরোডে পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ভোটের পরিস্থিতি দেখতে যান। গাড়ি হতে নামার সঙ্গে সঙ্গেই এক দল সন্ত্রাসী গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায়। ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরদী ও নাটোর রেল স্টেশনে প্রবেশের মুখে তাকে বহনকারী রেল গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়েছে। ১৯৯৫ এর ৭ ডিসেম্বর শেখ রাসেল স্কোয়ারের নিকট সমাবেশে ভাষণ দানরত অবস্থায় শেখ হাসিনার উপর গুলি বর্ষণ করা হয়।

১৯৯৬ এর ৭ মার্চ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে শেখ হাসিনার বক্তৃতার পর হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস হতে সভামঞ্চ লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে ২০ জন আহত হয়। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পুত্রকন্যাসহ ৩১ জনকে হত্যার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে ই-মেইল করে ইন্টার এশিয়া টিভির মালিক শোয়েব চৌধুরী। ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় জনসভাস্থলের কাছে ও হ্যালিপ্যাডের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রেখেছিল। ঘটনাস্থলের কাছে শেখ লুত্ফুর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠের এক সভায় প্রধানন্ত্রীর বক্তব্য রাখার কথা ছিলো। ২০০১ সালের ২৯ মে খুলনার রূপসা সেতুর কাজ উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা ছিল তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। জঙ্গিরা সেখানে বোমা পুঁতে রাখে যা গোয়েন্দা পুলিশ তা উদ্ধার করে।

২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেট গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেদিন রাত ৮ টার দিকে জনসভা স্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরিত হলে ঘটনাস্থলেই দুই জনের মৃত্যু হয়। ২০০২ সালের ৪ মার্চ নওগাঁয় বিএমসি সরকারি মহিলা কলেজের সামনে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়। ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর এক দল সন্ত্রাসী সাতক্ষীরার কলারোয়ার রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালায়। ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে তার গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়।

২০০৪ সালের ২ এপ্রিল গৌরনদীতে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে গুলিবর্ষণ করে এক দল সন্ত্রাসী। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সেনাবাহিনী সমর্থিত ১/১১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে গ্রেফতার করেছিল। তাকে রাখা হয়েছিল জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত বিশেষ সাব-জেলে। সেসময় শেখ হাসিনার খাবারে ক্রমাগত বিষ দিয়ে তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

২০১১ সালে শ্রীলংকার একটি সন্ত্রাসবাদী গ্রুপের সাথে বাংলাদেশের শত্রু রাষ্ট্র এবং আর্ন্তজাতিক সন্ত্রাসী চক্র সুইসাইড স্কোয়াড গঠন করে শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য চুক্তি করে এবং সেজন্য আগাম পেমেন্টও প্রদান করা হয়। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করার লক্ষ্যে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার পরিকল্পনা করা হয়েছিল যা পরে ব্যর্থ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র এবং অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার জঙ্গি শাহানুর আলম ওরফে ডাক্তার। সর্বশেষ ২০১৫ এর ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার সময়ে কাওরানবাজারে তার গাড়িবহরে বোমা হামলা চালানোর চেষ্টা চালায় জেএমবি।

সবচেয়ে ভয়াবহ ২১ আগস্ট

২১ আগস্ট, ২০০৪। দিনটি ছিল শনিবার। বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সন্ত্রাস ও বোমা হামলার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমাবেশে হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছিল। সমাবেশ শেষে সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল হওয়ার কথা। তাই মঞ্চ নির্মাণ না করে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি ট্রাককে মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সমাবেশে অন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যের পর শেখ হাসিনা বক্তব্য দিতে শুরু করেন।

সময় তখন বিকেল ৫টা ২২ মিনিট। ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলে বক্তৃতা শেষ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার হাতে থাকা একটি কাগজ ভাঁজ করতে করতে এগোচ্ছিলেন ট্রাক থেকে নামার সিঁড়ির কাছে। মুহূর্তেই শুরু হলো নারকীয় গ্রেনেড হামলা। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে লাগল একের পর এক গ্রেনেড। মুহূর্তেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত হলো জীবন্ত বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায় ঘাতকরা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ১৩টি গ্রেনেড বিস্ফোরণের বীভৎসতায় মুহূর্তেই রক্ত-মাংসের স্তূপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। রক্তগঙ্গা বয়ে যায় এলাকাজুড়ে।

ঘাতকদের প্রধান লক্ষ্য ছিল শেখ হাসিনা। বিষয়টি বুঝতে পেরে ট্রাকে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ নেতারা ও শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক মানবঢাল রচনা করে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন বঙ্গবন্ধু কন্যাকে। নেতা ও দেহরক্ষীদের আত্মত্যাগ ও সৃষ্টিকর্তার রহমতে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান শেখ হাসিনা।

আরেকটি রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট ঘটাতে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি ১৩টি গ্রেনেড মেরেই ক্ষান্ত হয়নি ঘাতকরা, গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ কেড়ে নিতে না পেরে ওদিন শেখ হাসিনার গাড়িতে বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়েছিল ঘাতকরা। পরিকল্পিত ও টার্গেট করা ঘাতকদের নিক্ষিপ্ত গুলি ভেদ করতে পারেনি শেখ হাসিনাকে বহনকারী বুলেটপ্রুফ গাড়ির কাচ। শেখ হাসিনাকে আড়াল করে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে জীবন বিলিয়ে দেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান। নারকীয় এই হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচ- শব্দের কারণে বাম কান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাম কানে শ্রবণশক্তি হারান শেখ হাসিনা। দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার এতদিন পরও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারনেনি তিনি।

পরিকল্পিত হামলায় মৃত্যুর দুয়ার থেকে শেখ হাসিনা ফিরে এলেও সেদিন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় পুরো এলাকা। এই ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলার পর সেদিন স্পিস্নন্টারের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন বহু মানুষ। আকস্মিক মৃত্যু আর রক্তস্রোতে শান্তিপ্রিয় অসংখ্য মানুষের হাত-পাসহ মানবদেহের বিভিন্ন অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে। কারও হাত নেই, কারও পা উড়ে গেছে। রক্তে ভিজে লাল হয়ে যায় পিচঢালা কালো পথ। অস্থায়ী সভামঞ্চ ট্রাকের চারপাশে রক্তের আল্পনা, শত শত মানুষের চিৎকার। বেঁচে থাকার জন্য, প্রাণ বাঁচানোর জন্য মুমূর্ষুদের আকুতি, কাতর আর্তনাদসহ অবর্ণনীয় মর্মান্তিক সেই দৃশ্য। সেদিন যদি ঘাতকদের নিক্ষিপ্ত গ্রেনেড জনসভার জন্য ব্যবহৃত ট্রাকে বিস্ফোরিত হতো তবে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কোন সিনিয়র নেতাই প্রাণে রক্ষা পেতেন না। আর এটাই ছিল ঘাতকচক্রের মূল পরিকল্পনা।

নিহত হন যারা

২১ আগস্টের সেই রক্তাক্ত ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। আর এ হামলায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও দলের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আইভি রহমান ৫৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৪ আগস্ট মারা যান। আহত হওয়ার পর প্রায় দেড় বছর মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হেরে যান আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা ও প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ। রক্তাক্ত-বীভৎস ওই ভয়াল গ্রেনেড হামলায় নিহত অন্যরা হলেন মোসতাক আহম্মদ সেন্টু, শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), হাসিনা মমতাজ রীনা, রিজিয়া বেগম, রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, লিটন মুন্সী, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসির উদ্দিন সর্দার, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম।

আহত হয়েছিলেন যারা

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি (তৎকালীন প্রেসিডিয়াম সদস্য) জিল্লুর রহমান, প্রয়াত আবদুর রাজ্জাক, ঢাকার সাবেক মেয়র (প্রয়াত) মো. হানিফ, আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, কাজী জাফর উল্লাহ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, সাঈদ খোকন, মাহবুবা আখতার, অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন, মামুন মলি্লকসহ ৫ শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ আহত হন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে অনেকে কিছুটা সুস্থ হলেও পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে বেঁচে আছেন অনেকে। সেদিনের সেই দুঃসহ স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাদের। দেহে অসংখ্য ঘাতক স্পিস্নন্টারের তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয় রয়েছেন আহতরা। আহতদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ঢাকার সাবেক মেয়র মো. হানিফ দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান।

ওডি/এআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড