• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধনবাড়ীর নওয়াব বাড়ি এখন রয়েল রিসোর্ট

  মো. ইউনুস আলী, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল

০২ জুন ২০১৯, ১৫:৪৮
নওয়াব মঞ্জিল
নওয়াব মঞ্জিল (ছবি- দৈনিক অধিকার)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রাভাষা বাংলার প্রথম প্রস্তাবক ও ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রী নওয়াব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীর সেই ঐতিহ্যবাহী নওয়াব বাড়ি। আজ সেটি “রয়েল রিসোর্ট”। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার নওয়াব বাড়িটি ঢাকা থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-জামালপুর মহাসড়কের পাশে অবস্থিত।

এখানকার দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- নওয়াব মঞ্জিল, নওয়াব প্যালেস, নওয়াব শাহী জামে মসজিদ, দীঘি ও ভিলা। এসব পুরোনো নকশা খচিত অট্টালিকার সব রুমের ফার্নিচারগুলো সেই নবাবী আমলের।

আবাসিক এখানকার নিরাপদ ও আরামদায়ক রুমগুলো চার ধরনের, যা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের চাহিদা পূরণ করে। রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা। পর্যটকদের সব আবাসিক চাহিদা মেটাবে এই রয়েল রিসোর্ট।

রয়েল রিসোর্ট (ছবি- দৈনিক অধিকার)

নওয়াব মঞ্জিল এই ভবনটি ছিল নওয়াব বাহাদুরের প্রধান আবাসকক্ষ। এককালে সব নামিদামি অতিথি এখানেই থাকতেন। এই ভবনটি এখন সব ভিআইপি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। নিপুণ কারুকার্য খচিত ভবনটির ভেতরে সব নবাবী ফার্নিচার পর্যটকদের ব্যবহারের জন্য রাখা হয়েছে। মঞ্জিলের সামনে বাগান, উন্মুক্ত স্টেজ, খেলার মাঠ নয়নাভিরাম।

প্যালেস এ বিশাল আকৃতির ভবনটি ছিল এককালে দরবার হল। বর্তমানে নওযাব প্যালেস কর্পোরেট অতিথিদের জন্য ৫০ আসনবিশিষ্ট একটি গোলটেবিল, কনফারেন্স রুম। সম্পূর্ণ আধুনিকভাবে সজ্জিত করফারেন্স রুমে রয়েছে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্ট সাউন্ড সিস্টেম কম্পিউটার। পাশেই ৩০০ আসন বিশিষ্ট কনভেনশন হল। এ কনভেনশন হলে বিভিন্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও সেমিনার হয়ে থাকে। প্যালেস ও মঞ্জিলের প্রতিটি কক্ষে আছে অতীত ঐতিহ্য বহনকারী আসবাপত্র। এ ছাড়াও রয়েছে বিশাল ডাইনিং হল, নওয়াব মিউজিয়াম, লাইব্রেরি এবং বেশ কিছু বেড রুম। প্রায় শতাধিক বছরের পুরোনো ভবনের সব আধুনিক সুবিধা পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ার মতো।

নওয়াব বাড়ির ভেতরের অংশ (দৈনিক অধিকার)

ভিলা দুই শতাধিক বছরের পুরোনো এ ভবনটি ছিল নওয়াব অন্দর মহল। এখানেও রয়েছে সকল ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। রয়েছে বিশাল আকৃতির ফুলের বাগান। আরও রয়েছে সিঙ্গেল বেডরুম। একটি পরিবারের সুন্দরভাবে থাকার জন্য এ ভবনটি খুবই চমৎকার।

কটেজ একটি সম্পূর্ন আধুনিকভাবে নির্মিত একটি ভবন। ভিলার বারান্দা থেকে কটেজে প্রবেশের প্যাসেজটি এর সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। এ কটেজে রয়েছে এসি রুম। পাশে ফুলের বাগানের মাঝখানে বড় আকৃতির গার্ডেন আমব্রেলা। নওয়াব শাহী জমে মসজিদ। রিসোর্টের ঠিক পাশেই রয়েছে ৭ শতাধিক বছরের পুরনো মসজিদ। চীনা-মিসরীয়দের তৈরী মোগলীয় স্থাপত্যের নিদর্শন। এ মসজিদটির মোজাইকসমূহ এবং মেঝেতে মার্বেল পাথরের নিপুণ কারুকাজ বাংলাদেশে বিরল। মসজিদটির পাশে একটি কক্ষে রয়েছে নওয়াব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীর কবর। এখানে ২৪ ঘন্টাই কোরআন তেলাওয়াত করে আসছে প্রায় ৮৮ বছর থেকে। এটা অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। শাহী মসজিদের পাশে সাকিনা মেমোরিয়াল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, নওয়াব ইনস্টিটিউশন, আসিয়া হাসান আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ।

দিঘী রয়েল রিসোর্টে রয়েছে প্রায় ৩০ বিঘা জমির ওপর বিশাল একটি দিঘী। এখানে নৌকা ভ্রমণ ও মাছ ধরার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে সুন্দর মনোরম শান বাঁধানো ঘাট।

রয়েল রিসোর্টের পাশে বাগান (ছবি- দৈনিক অধিকার)

দর্শনীয় স্থান নওয়াব আলী হাসান আলী রয়েল রিসোর্ট থেকে মাত্র ৩০ মিনিটের দূরত্বে ঐতিহ্যবাহী মধুপুর বন। বঙ্গবন্ধু সেতু মাত্র ৫০ মিনিট দূরত্বে অবস্থিত। রয়েল রিসোর্ট নিজস্ব ট্রান্সপোর্ট ও গাইড দিয়ে রিসোর্টের গেস্টদের ঘুরিয়ে দেখায় আশপাশের সব দর্শনীয় স্থান। এ ছাড়াও রয়েছে মনোমুগ্ধকর রাবার বাগান, আনারস বাগান, বাঁশ বাগান যা অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। মধুপুর থেকে ৩০ মিনিটের পথ পেরুলেই রয়েছে আদিবাসী গারো পল্লী। সেখানে উপলব্ধি করা যায় গারোদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও স্বতন্ত্র জীবনধারা, যা পর্যটকদের মনের খোরাক। গারো পল্লী পেরিয়ে আসতেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ন্যাশনাল পার্ক। সেখানে রয়েছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ।

রিসোর্টের ম্যানেজার মুকবুল হোসেন দৈনিক অধিকারকে বলেন, এ রিসোর্টে দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটকরাই আসেন। এখানকার ব্যবস্থাপনা খুবই ভালো।

ধনবাড়ী পৌরসভার মেয়র খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন দৈনিক অধিকারকে বলেন, এ রিসোর্ট আমাদের ঐতিহ্য, দর্শনীয় ও দৃশ্যমান কীর্তি।

ওডি/এসএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড