• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অভাবটা যেন আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী!

  এস আর অনি চৌধুরী, কুলাউড়া

২৪ জুন ২০২০, ১২:২৪
কুলাউড়া
চা শ্রমিক আরতি রানি দাস

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর চা বাগানের চা শ্রমিক আরতি রানি দাস। স্বামী স্ত্রী আর এক মেয়ে নিয়ে তাদের পরিবার। অভাব অনটনের সংসারে কোনোরকম দিনযাপন করছেন আরতি। সামান্য আয় দিয়ে সংসারের ভরণপোষণ বেশ কষ্টসাধ্য।

চা শ্রমিকের কষ্টের জীবনধারার সাথে মিশে আছে আরতি রানির পরিবার। সাংসারিক সব ভরণপোষণের সাথে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যেন বাড়তি বোঝা। নিজে ও স্বামীর মজুরি মিলিয়ে মেয়েসহ কোনোরকম দিনযাপন করছেন আরতি।

মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে বেশ কষ্ট হয় আরতির। পারিবারিক খরচের পাশাপাশি মেয়ের ভরণপোষণ সামান্য আয় দিয়ে চালানো বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে তার।

“দৈনিক মজুরি ১০৪ টাকা হিসাবে পাই। সেই মজুরি দিয়ে পারিবারিক খরচ চালানো সম্ভব হয় না। অভাবটা যেন পরিবারের নিত্য দিনের সঙ্গী। আমাদের চা শ্রমিকের দিনযাপন এভাবেই। কষ্টটাকেই আমাদের মেনে নিতে হয়।

জীবনটা কষ্টের হলেও চালিয়ে নিতে হচ্ছে। ‘দৈনিক অধিকার’কে এমনটাই বলছিলেন আরতি রানি দাস।

মেয়ের ভরণপোষণের পাশাপাশি লেখাপড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন আছেন আরতি রানি দাস। সামান্য আয়ের সংসারে সন্তানের লেখাপড়া করানো অর্থনৈতিকভাবে বেশ কষ্টসাধ্য।‘‘মেয়ের বই,খাতা,কলমসহ শিক্ষা-সামগ্রী দেওয়াটা এই আয় দিয়ে স্বাভাবিকভাবে সম্ভবপর নয়।

এরপরেও যথাসাধ্য নিজে না খেয়েও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে মেয়ের লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্নের কথা বলছিলেন আরতি রানি।

অসুস্থ হলে কোনোসময় উপজেলায় এসে চিকিৎসা নিতে হয়। জটিল রোগের জন্য সিলেটে যেতে হয়। সেখানে যাতায়াত খরচ হয় ৬০০-৭০০ টাকা। অর্থনৈতিক সংকট যেন চিকিৎসাকে আরও কঠিন করে দিয়েছে।

চা শ্রমিক আরতি রানি দাসের সাথে কথা বলছেন দৈনিক অধিকারের কুলাউড়া প্রতিনিধি এস আর অনি চৌধুরী

আরতির পরিবারে এভাবে জটিল রোগ হলে ভোগান্তির শেষ থাকে না। চা শ্রমিক জীবনে চিকিৎসা সংকট যেন আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের ।

এ প্রসঙ্গে চা শ্রমিক নেতা সন্ন্যাসী নাইডু দৈনিক অধিকারের এ প্রতিবেদককে জানান, এভাবে প্রায় সকল চা শ্রমিক পরিবার দিনযাপন করছে। চা শ্রমিকদের জীবনধারা নিতান্তই কষ্টের। পারিবারিক ভরণপোষণ খুব কষ্ট করে পোহাতে হচ্ছে।

শ্রমিকদের সামান্য মজুরি দিয়ে পরিবার চালানো সম্ভব হয় না। এছাড়াও শ্রমিক পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা,পরিবারের চিকিৎসা ও বাসস্থানের কষ্ট পোহাতে হয় ।

চা শ্রমিকদের বিষয়ে জানতে চাইলে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী দৈনিক অধিকারের এ প্রতিবেদককে জানান, চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক। আমরা চেষ্টা করছি যাতে চা শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন হয়। চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন এবং চা-শ্রমিক শিশুদের লেখাপড়ার বিষয়ে সার্বিক ভাবে আমরা সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।

তিনি আরও জানান, সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে প্রতি বছর চা শ্রমিকদের সহযোগিতা করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড