সবুজ আলম ফিরোজ
ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে কেউ নিজের সর্বস্ব হারিয়েছে আবার কেউ ছিনতাইকারীর হাতে নিজের প্রাণ দিতে হয়েছে। এমন ঘটনা দেশজুড়ে ঘটছে অহরহ। তবে ছিনতাইকারীর কবল থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত এক সপ্তাহে নারীসহ ২০ ছিনতাইকারীকে আটক করেছে পুলিশ। আবার পুলিশের সহযোগিতায় ছিনতাই হওয়া মালামাল ফিরে পেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
টঙ্গী: গত ১৬ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের টঙ্গীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৯ ছিনতাইকরীকে আটক করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ধারালো ছোড়া ও কয়েকটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, টঙ্গীর এরশাদনগর, টেকপাড়া ভেড়ীবাধ, মাছিমপুর ও আরিচপুর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ছিনতাইকারী শ্রী প্রদীপ চন্দ্র (২২), ইসমাইল হোসেন (২০), মো. আরাফাত (১৯), পারভেজ (২০), ইকবাল হোসেন ফালান (৩৫), রাজু ফরমা (২৮), নুরু (২২), রয়হান (২৫) ও দুলালকে (২৮) আটক করা হয়।
কক্সবাজার: কক্সবাজারের সৈকতে দুই ছিনতাইকারীকে আটক করে টুরিস্ট পুলিশ। এদের মধ্যে একজন রোহিঙ্গা ছিনতাইকারীও রয়েছে।
ছিনতাইকারীরা হলো- জেলার উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১১০ নম্বর ব্লকের ওমর হাকিমের ছেলে জাহিদ (৩০) ও কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ফাসিয়াখালী এলাকার নুরুল আলমের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (২২)।
গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ৯ টার দিকে শৈবাল পয়েন্ট সংলগ্ন বীচ থেকে তাদের হাতেনাতে আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর শাকের আহমেদ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন ও ৩টি উন্নতমানের চাকু উদ্ধার করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ইন্সপেক্টর শাকের আহমেদ জানান, কুমিল্লার বুড়িচং থানার কুসুমপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেনসহ ৫ পর্যটক থেকে ছিনতাইকালে হাতেনাতে দুই ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়।
সিলেট: সিলেটের মোগলাবাজার ও কোতোয়ালী থানা এলাকায় পৃথক অভিযানে ৫ ছিনতাইকারীকে আটক করে পুলিশ। একই সঙ্গে লুণ্ঠিত লক্ষাধিক টাকা, ১টি মোবাইল ফোন ও ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। মোগলাবাজার থানা পুলিশের হাতে আটককৃতরা হলো- শাহপরান থানার কল্লগ্রামের আব্দুস সত্তারের ছেলে সোয়েব আহমদ নয়ন, সুরমা গেটের খায়রুল ইসলামের ছেলে ছায়েদুল ইসলাম আকাশ ও কুশিঘাটের লোকমান মিয়ার ছেলে আলাল হোসেন।
অন্যদিকে কোতোয়ালী থানার রায়নগর এলাকা থেকে দুইজন আটক করা হয়। তারা হলো- ছাতকের লাউতলার আব্দুন নুরের ছেলে শফিকুল ইসলাম ও হবিগঞ্জের লাখাউ উপজেলার মুরাপুরি গ্রামের সাবু মিয়ার ছেলে করম আলী।
মোগলাবাজার থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, গত ২১ জানুয়ারি গুলশানা মরিয়ম নামের এক নারী সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে বিয়ানীবাজার যাচ্ছিল। পথে গোটাটিকর সুন্দরবন কমিউনিটি সেন্টারের উত্তরে ছিনতাইর শিকার হন তিনি। মোটরসাইকেলে করে আসা ছিনতাইকারীরা গুলশানারা মরিয়মের কাছ থেকে ৫টি স্বর্ণের আংটি, ১টি গলার স্বর্ণের চেইন, ২টি হাতের স্বর্ণের বালা, ১ জোড়া কানের দুল ও স্যামসাং জে-৩ ও নোকিয়া ২৩০ মডেলের ২টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় তার ছেলে নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে এবং ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত লাল রংয়ের পালসার মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।
সিলেট: সিলেটে দুর্ধর্ষ এক ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার নাম আব্দুল হালিম (৫২)। কোতোয়ালী থানা পুলিশ নগরীর সুরমা পয়েন্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নগরীর ধোপাদিঘীরপাড় এলাকা থেকে এক লাখ ১৬ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছিনতাইয়ের শিকার মশিউর রহমান বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দুল হালিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জেদান আল মুসা জানান, আব্দুল হালিম চিহ্নিত দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম: নগরীতে ছিনতাইকারী চক্রের তিন নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে স্টেশন রোড এলাকায় ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- পিংকী আক্তার (২৩), আঁখি আক্তার মালু (২২) ও শারমিন আক্তার (২২)।
কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, সন্ধ্যার পর ব্লেড নিয়ে রেলস্টেশনের আশপাশে ঘোরাফেরা করেন এসব ছিনতাইকারীরা। সুযোগ বুঝে টার্গেট করা ব্যক্তির গলায় ব্লেড ধরে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা।
নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর হাইওয়ে থানার পুলিশকে ৯৯৯ কল সেন্টারে মাছ ভর্তি পিকআপ গাড়ি নিয়ে ছিনতাই চক্র পালিয়ে যাওয়ার খবর দেওয়া হয়। তাৎক্ষণিক রূপগঞ্জের তারাব এলাকার ডিউটিরত পুলিশের একটি টিম ছিনতাই চক্রকে ধাওয়া করে কাঞ্চন ব্রিজ এলাকা থেকে মাছ ভর্তি গাড়ি উদ্ধার করে। তবে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত পৌনে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে গাড়ি চালক নিলকান্ত দাস জানান, গুরুত্বপূর্ণ ৯৯৯ এতো সক্রিয় ভুমিকা পালন করে তা জানা ছিল না। সাধারণ খেটে খাওয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, আমাদের পিকআপ ভর্তি মাছের দাম ছিল ১৯ লাখ টাকা এবং পিকআপটির দাম ১৫ লাখ টাকা।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ ইনচার্জ জানান, আমাকে যখন ৯৯৯ থেকে ফোন দিয়ে ছিনতাইয়ের খবর জানানো হয়। তখন আমার নেতৃত্বে গলফ-১১ ডিউটিরত অফিসার সার্জেন্ট বাহারুলকে নির্দেশ প্রদান করি ছিনতাইকারী পিকআপটি উদ্ধারের জন্য। তখন পুলিশ সদস্যরা মাছ ভর্তি পিকআপটি উদ্ধার করে।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড