• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

হাসি নেই দুবলার চরের শুঁটকি পল্লীতে

  আকাশ ইসলাম, মোংলা, বাগেরহাট

২১ জানুয়ারি ২০২০, ১৯:০৭
শুঁটকি পল্লী
হাসি নেই দুবলার চরের শুঁটকি পল্লীতে (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলার চরে জেলে পল্লীসহ পাঁচটি চরে শুঁটকি মাছ আহরণ মৌসুমে জেলেদের মধ্যে নেই খুশির আমেজ। সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, বৃষ্টি আর দেশব্যাপী কুয়াশা এক অবাঞ্ছিত পরিবেশের সৃষ্টি করেছে জেলে পল্লীগুলোতে।

এরই মধ্যে ঘন কুয়াশার সঙ্গে প্রচণ্ড বাতাসের কারণে সাগরের গহীনেও মাছ পাচ্ছে না জেলেরা। তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার ফলে এবার কাঙ্ক্ষিত শুঁটকি আহরণ না হওয়ায় জেলে, মহাজন ও শুঁটকি ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা বিরাজ করছে। তবে আগামী দুই মাস আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে উঠতে পারবে বলে আশা করছে জেলে ও বন বিভাগ।

সুন্দরবন উপকূল দুবলার চরে অক্টোবর থেকে মার্চ এই পাঁচ মাসব্যাপী চলে শুঁটকি আহরণ মৌসুম। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে নির্ধারিত রাজস্ব পরিশোধ করে পাস-পারমিট নিতে ডিপো মালিক, মহাজনসহ কয়েক হাজার জেলে শুঁটকি তৈরির জন্য সাগর পাড়ে মাছ আহরণ করেন।

এ বছর সুন্দরবনের পাঁচটি চরে ৫৩টি ডিপো মালিক, এক হাজার ৪০টি জেলে ঘরে প্রায় ২০ হাজার জেলে শুঁটকির জন্য মাছ আহরণ করছে। কিন্তু এবার ১০ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে শুঁটকি পল্লীগুলো লন্ডভন্ড হয়ে যায়। নষ্ট হয়েছে কয়েক কোটি টাকার আহরিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এছাড়াও ডিসেম্বরের শেষ দিকে কয়েক দফা শৈত্যপ্রবাহের কারণে প্রচণ্ড ঠান্ডার সঙ্গে বৃষ্টি আর কুয়াশা হওয়ায় মরার ওপর খাড়ার ঘার মতো ঘটনা ঘটেছে শুঁটকি পল্লীগুলোতে। এ অবস্থায় মহাজন ও জেলের হতাশ সময় পার করছে।

দুবলার চরের মহাজন (বহরদর) পঙ্কজ রায় বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পর থেকে সাগরে তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া প্রচণ্ড শীতের সঙ্গে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে সাগরে যার কারণে উৎপাদন এতো কম যে আমাদের পুঁজিই টিকবে না।

জেলে নজরুল ইসলাম বলেন, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে মাছের উৎপাদন কম। যে মাছ পাচ্ছি তার আকার-আকৃতিও ছোট। তাই জেলেদের মনে কোনো উল্লাস নেই। কারণ আপনজন ছেড়ে প্রায় ৬ মাসের জন্য সাগরে আসতে হয়। এই ৬ মাস কাজ করে যদি শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হয় তাহলে এর থেকে আর কষ্টের কিছু নেই।

দুবলার ফিশার ম্যান গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিবছর শুঁটকি মৌসুমে জেলেদের একটি লক্ষ্যমাত্রা থাকে। এ বছর জেলেদের লক্ষ্যমাত্রা কোনোভাবেই পূরণ হবে না। তবে মৌসুমের বাকি দিনগুলোতে যদি আবহাওয়া ভালো থাকে এবং মাছ বেশি পাওয়া যায় তাহলে কিছু ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুন : শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না সেই শিশুকে

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, দুবলার চরে পাঁচটি শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণ স্থান রয়েছে। প্রথম থেকে সাগরে প্রচুর মাছ পাওয়ায় এ বছর জেলেদের টার্গেট বেশি বেশি শুঁটকি তৈরি করতে পারবে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও শীতের কারণে জেলেরা গেল বছরের থেকে মাছ কম পাচ্ছে।

গেল বছর ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত যেখানে রাজস্বের পরিমাণ ছিল এক কোটি ৪১ লাখ সেখানে এ বছর একই সময়ে সে রাজস্ব মাত্র এক কোটি ৩ লাখ। গেল বছর পুরো মৌসুমে আমাদের রাজস্ব আদায় হয়েছিল দুই কোটি ৬৬ লাখ ৬৭ হাজার ৮১৯ টাকা।

ওডি/এএসএল

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড