তারিন ফাহিমা
প্রযুক্তিভিত্তিক সংবাদ সাইট গিজমোচায়না সম্প্রতি চলতি বছরের প্রথমার্ধের সেরা স্মার্টফোনের এক তালিকা প্রকাশ করেছে।এখানে তারা সাতটি স্মার্টফোন নির্বাচন করেছে।
তাহলে চলুন জেনে নেই, কোন কোন স্মার্টফোন এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
অপ্পো রেনো :
বছরের প্রথমার্ধে এই তালিকার প্রথমেই স্থান করে নিয়েছে অপ্পোর টেন এক্স জুম ক্যামেরার রেনো হ্যান্ডসেটটি। ডিভাইসটিতে ২৩৪০*১০৮০ পিক্সেলের ৬ দশমিক ৬ ইঞ্চি ফুলএইচডি প্লাস ডিসপ্লে আছে। আর এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে শার্ক-ফিন সদৃশ রাইজিং ক্যামেরা। এর স্ক্রিন-টু-বডি রেশিও ৯৩.১ শতাংশ।
এই ফোনে আছে ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ আর এর মূল ক্যামেরা হিসেবে রয়েছে এফ/১.৭ অ্যাপারচার যুক্ত ৪৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সেন্সর। এছাড়াও এফ/২.২ অ্যাপারচার যুক্ত আলট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা এবং এফ/৩.০ অ্যাপারচার যুক্ত ১৩ মেগাপিক্সেল সেন্সরের টেলিফটো ক্যামেরাও আছে চাহিদার শীর্ষে থাকা এই ডিভাইসটিতে।
হুয়াওয়ে পি৩০ প্রো
বর্তমান বাজারে পি৩০ সিরিজের পি৩০ প্রোকে সবচেয়ে শক্তিশালী ক্যামেরা সমৃদ্ধ ফোন বলা হচ্ছে।
পি৩০ প্রোয়ের পেছনে ৪০, ২০ এবং ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা আছে।এই ফোনের অ্যাপাচার যথাক্রমে এফ/১.৬, এফ/২.২ এবং এফ ৩.৪। আর ফ্ল্যাশের টিওএফ ক্যামেরা নিচে রয়েছে। এছাড়া ক্যামেরা সেন্সর হিসেবে নতুন প্রযুক্তি ‘আরওয়াইবি’ ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ছবি আরও সুন্দর হচ্ছে।
পি৩০ প্রো এ হাইসিলিকন কিরিন রয়েছে ৯৮০ প্রসেসর হিসেবে। আর ইন্টারনাল মেমোরি ১২৮ গিগাবাইট এবং মাইক্রোএসডি কার্ড ব্যবহার করারও সুবিধা রয়েছে। আর পানিরোধক সুবিধার ছাড়াও ইনডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর রয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড ৯ পাই আছে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে।
গ্যালাক্সি এস১০ ফাইভজি
গ্যালাক্সি এস১০ এ আছে ৬ দশমিক ৭ ইঞ্চি ডিসপ্লে। স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫ থাকবে প্রসেসরে। চারটি রেয়ার ক্যামেরা পেছনে আর সামনে আছে দুটি ক্যামেরা। ফোনটি ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ সংস্করণে পাওয়া যাবে।
আর ব্যাকআপের জন্য আছে ৪৫০০ এমএএইচ ব্যাটারি। ফোনটি গিজমো চায়নার বিবেচনায় বছরের তৃতীয় সেরা ডিভাইস হয়েছে।
ওয়ানপ্লাস ৭ প্রো
সেরা ডিভাইসের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে ওয়ানপ্লাস ৭ প্রো। এই ফোনে পপআপ ক্যামেরা ব্যবহার করে ডিসপ্লে থেকে নচ বাদ দেওয়া হয়েছে। ওয়ানপ্লাসের কোনো ফোনে প্রথমবারের মতো কোয়াড এইচডি ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। ফোনটিতে ৬ দশমিক ৬৭ ইঞ্চির ফ্লুয়েড অ্যামোলেড ডিসপ্লে দেখা গেছে। আর ফুলস্ক্রিন ডিসপ্লের ফোনটি রক্ষার জন্য দেওয়া হয়েছে গরিলা গ্লাস ৫ এবং প্রসেসর হিসেবে স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫ ব্যবহার করা হয়েছে।
ডিভাইসটির ৬ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ সংস্করণের দাম ৬৬৯ ডলার, ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ সংস্করণের দাম ধরা হয়েছে ৬৯৯ ডলার এবং ১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ সংস্করণের দাম ৭৪৯ ডলার। ওয়ানপ্লাস ৭ প্রোতে আছে ৪৮, ১৬ ও ৮ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সেটআপ।
আর সামনে রয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেলের পপআপ ক্যামেরা। ফোনটিতে ব্যাকআপ দিতে আছে ৪০০০ এমএএইচ ব্যাটারি। তবে ৩০ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সুবিধা থাকলেও এতে ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা অনুপস্থিত।
ওয়ানপ্লাস ৭ প্রো নেবুলা ব্লু, আলমন্ড ও মিরর গ্রে রঙে পাওয়া যাবে। বিশ্বের কয়েকটি দেশে চলতি সপ্তাহ থেকেই ফোনটি পাওয়া যাবে।
আসুস জেনফোন ৬
আসুসের নতুন এই ফোনের সবচেয়ে বড় চমক হচ্ছে এর ক্যামেরা সেটআপ। ফোনটিতে রিয়ার বা সেলফি ক্যামেরা ছাড়া আলাদা কিছু নেই। কেননা এই রিয়ার ক্যামেরা দিয়ে অনায়েসেই সেলফি তোলার কাজও করা যাবে। ফোনটিতে এজন্য রোটেটিং ক্যামেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই ক্যামেরা সেটআপের একটিতে ৪৮ ও আরেকটিতে ১৩ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা আছে।
ডিভাইসটিতে নচ বা পাঞ্চ হোল না রাখার ফলে এর স্ক্রিন টু বডি রেশিও ৯২ শতাংশ রাখা সম্ভব হয়েছে। ফোনটিতে ৬ দশমিক ৪ ইঞ্চির ডিসপ্লে আছে এবং ভাঙন প্রতিরোধের জন্য গরিলা গ্লাস ৬ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আছে শক্তিশালী কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫ প্রসেসর এবং ব্যাকআপের জন্য ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারি। তবে ডিভাইসটিতে ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা না থাকলেও এতে ১৮ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সুবিধা রাখা হয়েছে।
ফোনটি টোয়াইলাইট সিলভার ও মিডনাইট ব্ল্যাক রঙে পাওয়া যাবে। ফোনটি তিনটি সংস্করণে ৬ জিবি র্যাম ও ৬৪ জিবি স্টোরেজ, ৬ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ এবং ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজে পাওয়া যাবে।
রেডমি কে২০ প্রো
ফ্ল্যাগশিপ এই ফোনটিতে আছে ৬ দশমিক ৩৯ ইঞ্চি ডিসপ্লে, যার রেজুলেশন ১০৮০ বাই ২৩৪০ পিক্সেল। ফোনটিতে প্রসেসরে আছে স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫। আর পেছনে রাখা হয়েছে ট্রিপল ক্যামেরা। যার মেগাপিক্সেল ৪৮, ৮ ও ১৩। আর সামনে ২০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা রাখা হয়েছে। ইন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ফোনের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। আর ব্যাকআপ দিতে আছে ৪০০০ এমএএইচের ব্যাটারি, যা ২৭ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করবে। এতে ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট ও হেডফোন জ্যাক রয়েছে।
রেডমি কে২০ প্রোয়ের ৬ জিবি র্যাম ও ৬৪ জিবি স্টোরেজ সংস্করণের দাম ৩৬২ ডলার (৩০ হাজার ৪০৮ টাকা)। ৬ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ সংস্করণের দাম ধরা হয়েছে ৩৭৬ ডলার (সাড়ে ৩১ হাজার টাকা)। ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ সংস্করণের দাম ৪০৫ ডলার (৩৪ হাজার ৯১৬ টাকা)। ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ সংস্করণের দাম ৪৩৫ ডলার (সাড়ে ৩৬ হাজার টাকা)।
হুয়াওয়ের অনার ২০ প্রো
এই তালিকায় শেষ স্থানে জায়গা করে নিয়েছে অনার ২০ প্রো। ফোনটিতে রয়েছে ৩এক্স জুম। এছাড়া এতে আছে কিরিন ৯৬০ চিপসেট, আট জিবি র্যাম এবং চার হাজার মিলিঅ্যাম্পায়ার ব্যাটারি।
ডিভাইসটিতে আছে পাঞ্চহোল ডিসপ্লের। আর এটি তালিকার সর্বশেষ স্থান দখল করে নিয়েছে।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড