• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

স্মার্টফোন ব্যবহারে বদলে যাচ্ছে মানুষের আকৃতি!

  প্রযুক্তি ডেস্ক

২৩ জুন ২০১৯, ১১:০১
স্মার্টফোন
মানুষের আকৃতি বদলে যেতে পারে স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে, বলছে গবেষণা

দিনের সবচেয়ে বেশির ভাগ সময়টায় আপনি কী করেন? হয়তো বলতে পারেন নিজের পেশাগত কাজেই বেশি ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু নিজের স্মার্টফোনের ফিচার থেকে যদি আপনার ফোনের পিছনে ব্যয় করা সময়ের হিসাব করে দেখতে চেষ্টা করে থাকেন তবে বুঝতে পারবেন আপনার দিনের সবচেয়ে বেশি অংশ চলে যাচ্ছে স্মার্টফোনের পিছনে। তবে এই তালিকায় আপনিই একমাত্র নন। সারা বিশ্বেই মানুষ বর্তমানে তাদের হাতে থাকা ২৪ ঘণ্টার মাঝে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ব্যয় করছে কেবলমাত্র স্মার্টফোন ব্যবহারের পিছনে। বিশেষত তরুণ সমাজের মাঝে এর প্রভাব খুবই বেশি। আর এরই ফলে দেখা যাচ্ছে নানাবিধ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা। কিন্তু নতুন আতঙ্কের ব্যাপার হল, স্মার্টফোনের এই ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে মানুষের আকৃতিটাই! যার ফলে যেকোনো সময় হয়ে যেতে পারে বড় কোনো সমস্যা। এর প্রভাব পড়তে পারে পুরো মানবসমাজেই।

অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারজনিত কারণে এরই মাঝে অনেকের ঘাড়ের কাছ থেকে আলাদাভাবে হাড়ের জন্ম এবং বৃদ্ধির সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফোন ব্যবহারের সময় মাথা ঝুঁকিয়ে কাজ করার প্রবণতা থেকেই এর জন্ম বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। মানুষের ঘাড় থেকে মস্তিষ্কের দিকে বাড়ন্ত এই হাড় যা ‘এক্সাটারনাল অক্সিপিটাল প্রটিউবারেন্স’ নামে পরিচিত কিছু ক্ষেত্রে এতই বড় হতে পারে যে আপনি একে আপনার মাথার ওপর হাত রেখেই অনুভব করতে পারেন।

অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ সানশাইন কোস্টের চিকিৎসক ডেভিড সাহার সম্প্রতি মানবদেহের দেহ কাঠামো নিয়ে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাতে জানান, ‘আমি বিগত ২০ বছর ধরে চিকিৎসাসেবার কাজ করে চলেছি। কেবল গত ১০ বছরেই আমি আমার কাছে আসা রোগীদের মাথায় এমন হাড়ের বৃদ্ধিজনিত সমস্যা দেখতে পাচ্ছি। এই সমস্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে’।

এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট করা না হলেও রোগের ব্যাপ্তি এবং ধরন অনুযায়ী চিকিৎসকদের আশঙ্কা স্মার্টফোনের অতি ব্যবহারের ফলেই এমন পরিস্থিতির জন্ম হয়েছে। সাধারণভাবে প্রতিটি মানুষের মাথা ভরের দিক থেকে মোটামুটি ভারীই বলে চলে। পরিমাণগতভাবে যা প্রায় সাড়ে ৪ কেজি বা ১০ পাউন্ড। স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় এই পুরো ভরটিই চলে যায় ঘাড়ের ওপর। এর ফলেই ঘাড়ের কাছে অস্বস্তিকর একটি অবস্থান তৈরি হয়। যা থেকে মানুষের ঘাড়ের কাছে নতুনভাবে এই হাড়ের বিকাশ হয়েছে বলে ধারণা ডেভিড সাহারের। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ঘাড়ের এমন সমস্যাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে ‘টেক্সট নেক’ হিসেবে।

সাহার বলেন, ‘টেক্সট নেক আমাদের ঘাড়ের ওপর বেশ বড় একটি চাপের সৃষ্টি করে থাকে। এর ফলে আমাদের মাথা এবং ঘাড়ের সংযোগস্থলে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমাদের ঘাড়ের উপর মাংসপেশীই পরবর্তীতে এমন একটি হাড়ের বিকাশে ব্যাপক কার্যকরী ভূমিকা রাখে’।

ডেভিড সাহার এবং তার সহযোগীদের চালানো এক গবেষণা থেকে দেখা যায়, ২০১৬ সাল থেকে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণদের প্রায় ৪১ শতাংশের মাঝে এই বাড়তি হাড়ের উপস্থিতি রয়েছে। সাধারণভাবে এই ধরনের হাড়ের দৈর্ঘ্য দশমিক ২ ইঞ্চি বা ৫ মিলিমিটার থেকে দশমিক ৪ ইঞ্চি বা ১০ মিলিমিটারের সমান হয়ে থাকলেও এসব তরুণের ক্ষেত্রে তা ছিল ঢের বেশি। টেক্সট নেক থেকে উদ্ভুত এসব হাড়ের দৈর্ঘ্য দশমিক ৭ ইঞ্চি বা ২০ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

ডেভিড সাহার জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত সবচেয়ে বড় হাড়ের দৈর্ঘ্য প্রায় ১ দশমিক ৪ ইঞ্চি বা ৩৫ দশমিক ৭ মিলিমিটার।

বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতে ডেভিড সাহার জানিয়েছেন এই ধরনের রোগ একেবারেই দূর্লভ বলে এখনই তা নিয়ে খুব বেশি ভাবনা চিন্তা করতে হচ্ছে না। কিন্তু পরিস্থিতি না বদলালে এটিই হয়ে যেতে পারে মানব সমাজের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের অন্যতম বাধা। আর সেজন্য হয়তো বদলে যেতে পারে ভবিষ্যতের মানুষের গড়নও।

তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

ওডি/এএন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড