প্রযুক্তি ডেস্ক
হুয়াওয়ের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে সাময়িকভাবে পিছু হটার পরিকল্পনা করছে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ মুহূর্তে যেসব গ্রাহক ও কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়ের পণ্য ব্যবহার করছে, তাদের নিরাপদ বিকল্প খুঁজে নেয়ার সময় দিতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। হুয়াওয়েকে এজন্য ৯০ দিনের একটি লাইসেন্স দেওয়া হতে পারে। আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান গ্রাহকদের সেবা দেওয়া হুয়াওয়ের জন্য অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার দেশের বাইরের ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির তৈরি টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম ক্রয়, সংযোজন অথবা ব্যবহার নিষিদ্ধ করে এক নির্বাহী আদেশে সই করেন। সেখানে হুয়াওয়ের নাম সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকলেও নির্বাহী আদেশের লক্ষ্য যে চীনা কোম্পানিটি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ আদেশবলে দেশটিতে হুয়াওয়েকে কালোতালিকাভুক্ত করা হয়। ফলে মার্কিন কোম্পানিগুলোর যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য উপকরণ ক্রয় করাও হুয়াওয়ের জন্য অসম্ভব হয়ে উঠেছে।কেননা লাইসেন্স ছাড়া কালোতালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না। এমন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়ের যেসব গ্রাহক রয়েছে, তাদের সেবা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাই ‘বিদ্যমান নেটওয়ার্ক কার্যক্রম ও যন্ত্রাংশ পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায়’ হুয়াওয়েকে একটি সাময়িক সাধারণ লাইসেন্স দেওয়ার চিন্তা করছে।মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গ্রাহকদের নেটওয়ার্ক নির্ভরযোগ্যতা ও ক্রয়কৃত যন্ত্রাংশ পরিচালনার জন্য হুয়াওয়ে এই লাইসেন্স পাওয়ার পর এখান থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবে।তবে তারা নতুন পণ্য তৈরির ক্ষেত্রে মার্কিন কোম্পানির তৈরি কোনো যন্ত্রাংশ ও উপকরণ ক্রয় করতে পারবে না।
অস্থায়ী লাইসেন্সের মেয়াদ ৯০ দিন থাকবে এবং এটি নতুন কোনো লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না বলে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান। তবে এ বিষয়ে তারা এখন কোনো মন্তব্য করবে না।
মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা ও আইনজীবী কেভিন ওলফ বলেন, ‘হুয়াওয়ের পণ্য ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
ইয়োমিং ও পূর্বাঞ্চলীয় ওরেগনের মতো স্বল্প জনগোষ্ঠীর অঞ্চলে ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন সেবাদাতা কোম্পানিগুলো সাময়িক এ লাইসেন্সের সম্ভাব্য সুবিধাভোগী হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় হুয়াওয়ে থেকে এসব অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ সেবা সরবরাহের জন্য নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হওয়ার পর হুয়াওয়ের সরবরাহ শৃঙ্খলে তাৎক্ষণিক ও সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন ঘটতে পারে।
হুয়াওয়ের তৈরি স্মার্টফোন ও নেটওয়ার্ক সরঞ্জামের মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে আসছে। তবে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ বারবার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন না করলে বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির দেশের মধ্যে পুনরায় আলোচনা শুরুর কোনো অর্থই থাকবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো থেকে গত বছর হুয়াওয়ে ৭ হাজার কোটি ডলারের টেলিযোগাযোগ উপকরণ কিনেছে। এর মধ্যে কোয়ালকম, ইন্টেল করপোরেশন ও মাইক্রন টেকনোলজি ইনকরপোরেশনের মতো মার্কিন কোম্পানির পণ্য ক্রয়ে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার ব্যয় করে হুয়াওয়ে। এখন হুয়াওয়ের জন্য মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লাইসেন্স ইস্যু করলে মার্কিন সরবরাহকারীদেরও কোম্পানিটির সঙ্গে নতুন ব্যবসা করতে পৃথকভাবে লাইসেন্স নিতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের লাইসেন্স পাওয়ার কাজটি খুব সহজ হবে না।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড