অধিকার ডেস্ক ০২ এপ্রিল ২০১৯, ১০:০০
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় মোট ২১ জেলার গ্রাহকদের জন্য স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে (ওজোপাডিকো) ইতোমধ্যে এই মিটার তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ওজোপাডিকো এরইমধ্যে চীনের হেক্সিং কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যেখানে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রকল্পটির ৫১ শতাংশ মালিকানা থাকবে ওজোপাডিকোর আর বাকি ৪৯ শতাংশের মালিকানায় থাকবে চীনা প্রতিষ্ঠানটি।
ওজোপাডিকোর সূত্র থেকে জানা যায়, আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশের ২১ জেলার গ্রাহকদের কাছে এই স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সরবরাহ করা শুরু হবে। তাছাড়া চলতি বছরের মধ্যেই ওজোপাডিকোর সব গ্রাহককে এই স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারিংয়ের আওতায় আনতে সক্ষম হবে।
দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর খুলনা মহানগরীর জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন একটি ভাড়া-বাড়িতে প্রকল্পের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই নিজস্ব জমিতে ওজোপাডিকো তাদের পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবে।
সূত্রের বরাতে আরও জানা যায়, মূলত ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অংশ হিসেবে গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধি এবং দেশের সব গ্রাহককে এই স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারের আওতায় আনার লক্ষ্যে কাজটির শুরু হয়। সম্প্রতি সরকারী উদ্যোগের অংশ হিসেবে পদ্মার এপারের ২১ জেলা নিয়ে গঠিত অঞ্চলগুলোতে কার্যক্রমটি শুরু করা হয়।
প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রজেক্ট ফর খুলনার (সিটি ফেজ-১) আওতায় ওজোপাডিকো এর আগেও মোট ৭৩ হাজার গ্রাহককে বিদেশ থেকে আমদানি করা স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সরবরাহ করেছিল। যা সম্পূর্ণ সফলতার সঙ্গেই শেষ হয়।
যে কারণে এবার প্রতিষ্ঠানটি যৌথ মালিকানায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরি করতে যাচ্ছে। যা পরবর্তীতে এ বছরের মধ্যেই কোম্পানির আওতাধীন মোট ২১ জেলার বাকি গ্রাহকদের কাছে মিটারটি পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে শেষ করা হবে।
স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো: তোফাজ্জেল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মোট চারটি প্যাকেজে প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহককে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সরবরাহ করার লক্ষ্য নিয়ে আমাদের মিটার তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।’
এদিকে ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী শফিক উদ্দিন বলেন, ‘বিদেশ থেকে আমদানিকৃত প্রি-পেমেন্ট মিটারে খরচ বেশী হতো, তাই স্থানীয়ভাবে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরি হলে একদিকে সরকারের খরচ কমবে। একইসঙ্গে গ্রাহকরা খুব উপকৃত হবেন। তাছাড়া আমদানি নির্ভর স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার এর কোন সমস্যা দেখা দিলে স্থানীয়ভাবে মেরামত করার কোন সুযোগ নেই।’
ওজোপাডিকোর এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক এও বলেছেন, ‘মিটারটি স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হলে মেরামতের পাশাপাশি আধুনিক টেকনোলজির সাথে তাল মিলিয়ে চলা যাবে। চীনের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিতেও বিষয়টির বিশদ উল্লেখ রয়েছে। জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানির সুবিধা এটি। প্রয়োজনবোধে মিটার রিপ্লেসমেন্ট-এর সুযোগ থাকবে। এর আগে বসানো আমদানি নির্ভর মিটারে এই সুযোগ ছিল না।’
অপরদিকে ওজোপাডিকোর সচিব ও স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার প্রকল্পের পরিচালক (অর্থ) মো: আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্য নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে ওজোপাডিকো। প্রথম দিকে গ্রাহকদের মধ্যে প্রি-পেমেন্ট মিটারে ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া থাকলেও এখন সকলেই এই ডিজিটাল উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।’
তিনি আরও বলছিলেন, ‘যেহেতু প্রি-পেমেন্ট মিটারের চাহিদা বাড়ছে সেহেতু স্থানীয়ভাবে মিটার উৎপাদনের মাধ্যমে একদিকে ওজোপাডিকোকে আরও লাভজনক পর্যায়ে নেওয়া সম্ভব হবে অপরদিকে গ্রাহক সেবাও উন্নত হবে। সেই সঙ্গে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার আগামীতে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে।’
স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারের যাবতীয় সুবিধা তুলে ধরে প্রকল্পের এ পরিচালক বলেন, ‘বিদ্যুৎ শর্ট সার্কিট থেকে দুর্ঘটনা রোধ, মাসিক বিল সহজী করণ, মিটার টেম্পারিং বা বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ, যেকোনো স্থানে বসেই মোবাইল এসএমএস-এর মাধ্যমে মিটার রিচার্জ করার সুযোগ ছাড়াও ১০০ টাকা পর্যন্ত জরুরী ব্যাল্যান্স নেওয়া এবং ছুটির দিনে ব্যাল্যান্স শেষ হলেও এই মিটার বন্ধ হবে না।’
তাছাড়া প্রতিটি মিটারের সঙ্গে বাংলা ভাষায় অপারেটিং ম্যানুয়াল প্রদান করা হবে। যার সাহায্যে গ্রাহকরা সহজেই বিদ্যুৎ ব্যবহারের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন বলে জানান স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার প্রকল্পের পরিচালক মো: আব্দুল মোতালেব।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড