• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

হজ গমনের পূর্বপ্রস্তুতি : ইসলাম যা বলে

  অধিকার ডেস্ক    ১০ জুলাই ২০১৮, ১২:০০

হজের মৌসুম সমাগত। সারা দুনিয়ায় এ জন্য চলছে প্রস্ততি। প্রতি বছর হজ পালনে হাজীরা আল্লাহর মেহমান হিসেবে কাবা ঘরে হাজির হন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। হজ ও উমরায় গমনের পূর্বশর্ত, পবিত্র ও হালাল মাল বেছে নিতে হবে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, “আল্লাহ্ পূতঃপবিত্র। তিনি পবিত্র মাল ব্যতীত অন্য কিছুই গ্রহন করেন না।” এ সম্পর্কে ইমাম তাবারানী আবু হুরাইরা রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসে রিওয়াত করেছেন, যাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কোনো ব্যক্তি বিশুদ্ধ মাল নিয়ে হজের উদ্দেশ্যে বাহির হয়, অতঃপর যখন সে সাওয়ারীর রেকাবে পা রেখে ইহরামের এই দোয়াগুলো উচ্চারণ করে- “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক” তখন আসমান হতে জওয়াব আসে- ‘তোমার হজের জন্য হাযির হওয়া ও হজের উদ্দেশ্যে আগমন মঞ্জুর, তোমার সৌভাগ্যের দ্বার উদঘাটিত, তোমার পাথেয় হালাল, তোমার বাহন হালাল, তোমার হজ কবুল ত্রুটিমুক্ত করলাম।’

আর যখন বান্দা অপবিত্র হারাম মাল নিয়ে হজের জন্য বাহির হয় এবং সাওয়ারীর রেকাবে পা রেখে-“লাব্বাইক ওয়ালা সা‘আদাইক” বলে তখন আসমান থেকে জওয়াব আসে, তোমার হাযিরা মঞ্জুর নয় এবং তোমার সৌভাগ্য বলেও কিছুই নেই। তোমার পাথেয়, তোমার পথের খরচ সবই হারাম : সুতরাং তোমার হজও গ্রহণীয় নয়।

ধনবান ঈমানদারদের খুব লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে হালাল মাল পাথেয় হিসেবে নেওয়ার জন্য। আর সর্বউৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে আল্লাহর ভয়। মহামান্বিত আল্লাহ বলেন, আর তোমরা তোমাদের সাথে পাথেয় নিয়ে নাও, বস্তুত উৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া বা আল্লাহর ভয়। সুতরাং হে জ্ঞানীগণ! একমাত্র আমাকেই ভয় করতে থাক। (সূরা বাকারাহ আয়াত নং- ১৯৭)

হজ যাত্রার পূর্বে ওসীয়ত ও তাওবাহ করা-

হজ ইসলামের রুকনসমূহের পঞ্চম রুকন বা ভিত্তি, যেমনটি আব্দুল্লাহ্ বিন উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। আর তা হচ্ছে- (১) এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল। (২) সালাত প্রতিষ্ঠা করা। (৩) যাকাত প্রদান করা। (৪) রোমযানের সিয়াম পালন করা। (৫) বায়তুল্লাহয় হজ পালন করা। (সহীহ বুখারী)

কোনো মুসলিম যখন হজ বা উমরার জন্য সফরের সংকল্প গ্রহণ করে, তখন তার উচিত স্বীয় পরিবার-পরিজন এবং সঙ্গী-সাথীগণকে তাকওয়ার জন্য নসীহাত করা। এই নসীহাতে আল্লাহর নির্দেশ পালন এবং তাঁর নিষিদ্ধ কার্যাদি হতে বিরত থাকার তাগিদ প্রদান করবে। এমনকি তার কোন দেনা-পাওনা থাকলে ওয়ারিসগণকে ডেকে-লিখিতভাবে তা জানিয়ে দেবে এবং এর উপর সাক্ষী রাখবে।

এছাড়া নিজের সকল প্রকার গুনাহ্ হতে তাওবাতুন নাসুহার জন্য জলদি করা তার জন্য ওয়াজিব মনে করতে হবে। অর্থাৎ তার দ্বারা সংঘটিত যাবতীয় অন্যায় ও গুনাহগুলি স্বরণ করে এমন খাঁটিভাবে একাগ্রতার সাথে তাওবাহ করবে যাতে ঐ অন্যায়গুলি পুনরায় সংঘটিত না করার জন্য দৃঢ়চিত্ত হওয়া যায়।

এব্যাপারে মহান আল্লাহ্ তা’আলা এরশাদ করেন, “হে মু’মিনগণ! তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবাহ কর, সম্ভবত তোমরা কামিয়াব হবে।” (সূরা নূর আয়াত নং ৩১)

মহান আল্লাহ্ প্রতিটি সামর্থবান ঈমানদার মুসলিম নর-নারীরকেই যথাসময় হজব্রত পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন

(চলবে…………)

লেখক : শাইখ শফিকুল ইসলাম, ইসলামিক লেখক ও গবেষক, সাবেক প্রিন্সিপাল মারকাজ আবু বাকর সিদ্দীক(রাঃ) কিশোরগঞ্জ

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড