মুনীরুল ইসলাম ইবনু যাকির
কুরবানি কতদিন করা যায়?
কুরবনি যিলহজের দশ থেকে শুরু করে তেরো তারিখের সূর্যাস্ত পর্যন্ত করা যায়। এটাই উলামায়ে কেরামের নিকট সর্বোত্তম মত হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে। কারণ—
ক. আল্লাহ তায়ালা বলেন,
﴿لِّيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَّعْلُومَاتٍ عَلَىٰ مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ﴾
‘যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদের চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিযিক হিসেবে দান করেছেন তার ওপর নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে।’[1]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনু আব্বাস (রা.) বলেছেন যে, ‘এ আয়াতে নির্দিষ্ট দিনগুলো বলতে বুঝায় কুরবানির দিন ও তার পরবর্তী তিনদিন।’[2] অতএব এ দিনগুলো মহান আল্লাহ কুরবানির পশু যবেহ করার জন্য নির্ধারণ করেছেন।
খ. জুবাইর ইবনু মুতইম (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
وَكُلُّ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ ذَبْحٌ
‘আইয়ামে তাশরিকের প্রতিদিন যবেহ করা যায়।’[3]
আইয়ামে তাশরিক বলতে কুরবানির পরবর্তী তিনদিনকে বুঝায়। সুতরাং এই তিনদিনও কুরবানি করা যাবে।
গ. কুরবানির পরবর্তী তিনদিন সাওম পালন জায়েয নয়। হাদিসে এসেছে, ‘আইয়ামে তাশরিক হলো খাওয়া, পান করা ও আল্লাহর যিকর করার দিন।’ এখান থেকেও বোঝা যায় যে, এ তিনদিন কুরবানি করা যাবে।
ঘ. সাহাবাদের আমল দ্বারা প্রমাণিত হয়, কুরবানির পরবর্তী তিনদিন কুরবানির পশু যবেহ করা যায়। ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, আলি ইবনু আবি তালিব (রা.) বলেছেন, ‘কুরবানির দিন হলো ঈদুল আযহার দিন ও তার পরবর্তী তিনদিন।’ অধিকাংশ ইমামদের মত এটাই।[4]
কুরবানির সময়
কুরবানি নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পর্কিত একটি ইবাদাত। এ সময়ের পূর্বে যেমন কুরবানি আদায় হবে না তেমনি পরে করলেও আদায় হবে না। অবশ্য কাযা হিসেবে আদায় করলে অন্য কথা। যারা ঈদের সালাত আদায় করবেন তাদের জন্য কুরবানির সময় শুরু হবে ঈদের সালাত আদায় করার পর থেকে। যদি ঈদের সালাত আদায়ের পূর্বে কুরবানির পশু যবেহ করা হয় তাহলে কুরবানি আদায় হবে না। হাদিসে এসেছে,
বারা ইবনু আযিব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সা.) খুতবাতে বলেছেন, ‘ কুরবানির দিনটি আমরা শুরু করব সালাত দিয়ে। এরপর সালাত থেকে ফিরে আমরা কুরবানি করব। যে এমন আমল করবে সে আমাদের আদর্শ সঠিকভাবে অনুসরণ করল। আর যে এর পূর্বে যবেহ করল সে তার পরিবারবর্গের জন্য গোশতের ব্যবস্থা করল। কুরবানির কিছু আদায় হলো না।[5]
সালাত শেষ হওয়ার পাশাপাশি খুতবা শেষ হওয়ার পর যবেহ করা ভালো। কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.) এ রকম করেছেন। সাহাবি জুনদুব ইবনু সুফিয়ান (রা.) বলেছেন, ‘নবি (সা.) কুরবানির দিন সালাত আদায় করলেন, এরপর খুতবা দিলেন, তারপর পশু যবেহ করলেন।’[6]
চলবে...।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড