ধর্ম ডেস্ক
আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সালাতের গঠন তাথা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে জানা ও চিন্তা গবেষণা করতে অনেক সচেষ্ট থাকি। প্রাত্যহিক জীবনে সালাতের বিভিন্ন মাসলা-মাসায়ীল তথা রফি ঈদাইন, আঙ্গুল নাড়ানো, নিয়াত মুখে না মনে ইত্যাদি গঠন বিষয় বিষয়ের ব্যাপারে আমরা গভীর মনোযোগ প্রদান করে থাকি।
কিন্তু সালাতের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে অনেকে একেবারেই উদাসীন। এসব নিয়ে কোনো চর্চা নেই বললেই চলে। অথচ এ বিষয় অনুধাবন করা অত্যন্ত অত্যাবশ্যকীয় যা না থাকলে সালাত সালাত বলেই গন্য হয় না। আসুন আমরা সালাতের প্রাণ স্বত্তা সম্পর্কে জানার ও অনুধাবন করার জন্য আল কুরআন থেকে জানার চেষ্টা করি-
১। মুমিন মুত্তাক্বীগণ সালাতে বিনম্র ও বিনীত হবে।
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ - الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ
মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে, যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র; (সূরা মুমিনুন ২৩:১-২)
২। মুমিনগণ নির্দিষ্ট সময়ে সালাত আদায়কারী হবে।
فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلَاةَ فَاذْكُرُوا اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمْ فَإِذَا اطْمَأْنَنتُمْ فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا
অতঃপর যখন তোমরা নামাজ সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন নামাজ ঠিক করে পড়। নিশ্চয় নামাজ মুসলমানদের ওপর ফরজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। (সূরা নিসা ৪:১০৩)
৩। মুমিনগণ সালাতের পূর্ণ সংরক্ষণকারী হবে।
وَالَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ
এবং যারা তাদের নামাজসমূহের খবর রাখে। (সূরা মুমিনুন ২৩:৯)
وَالَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ
এবং যারা তাদের নামাজে যত্নবান, (সূরা আল মা’আরিজ ৭০:৩৪)
حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَىٰ وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ
সমস্ত নামাজের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও। (সূরা বাক্বারা ২:২৩৮)
৪। মুমিনগণ আমৃত্যু সালাতের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে।
الَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ دَائِمُونَ
যারা তাদের নামাজে সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে। (সূরা মাআরিজ ৭০:২৩)
৫। মুমিনগণ জামাআতবদ্ধ ভাবে সালাত কায়েম করবে।
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ
আর নামাজ কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং নামাজে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়। (সূরা বাক্বারা ২:৪৩)
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ
অতএব আপনি পালনকর্তার সৌন্দর্য স্মরণ করুন এবং সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যান। (সূরা হিজর ১৫:৯৮)
৬। মুমিনগণের আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার মাধ্যম হবে সালাত।
وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ
ধৈর্যের সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাজের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব। (সূরা বাক্বারা ২:৪৫)
وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ
হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (সূরা বাক্বারা ২:১৫৩)
৭। মুমিনগণ রাতের শেষের প্রহরে (তাহাজ্জুদের) সালাতে সচেষ্ট হবে।
كَانُوا قَلِيلًا مِّنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ - وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ
তারা রাত্রির সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত, রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করত। (সূরা জারিয়াত ৫১:১৭-১৮)
وَالَّذِينَ يَبِيتُونَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَقِيَامًا
এবং যারা রাত্রি যাপন করে পালনকর্তার উদ্দেশ্যে সেজদাবনত হয়ে ও দন্ডায়মান হয়ে; (সূরা আল ফুরকান ২৫:৬৪)
সালাত সর্ম্পকিত উল্লিখিত গুণাবলী অর্জনই মূল লক্ষ যা রব্বুল আলামীন দেখতে চান। মূলত সালাতে মনোযোগী, বিনম্রতা (খুশু খুজু) প্রাথনা এগুলোই সালাতের প্রাণ। এগুলোর প্রতি লক্ষ করা সর্বাগ্রে প্রয়োজন। আল্লাহ পাক আমাদেরকে তওফিক দান করুন।
তথ্যসূত্র : তাফসিরে মুরাদুর রহমান ফি তাদাব্বুরিল কুরআন।
লেখক- লেখক : মুরাদ বিন আমজাদ, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুসলিম উম্মাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড